সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

আগস্ট, ২০১৯ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ধর্ষণের কারণ পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতার বাহাদুরি

সাধারণভাবে অনেকেই মনে করেন ধর্ষণের বিষয়টি যৌনতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। কিন্তু সমাজবিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন ধর্ষণের সঙ্গে যৌনতার সম্পর্ক নেই। ধর্ষণ আসলে পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত। এটা ভালো করে বোঝা যাবে যুদ্ধের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে। দুনিয়ার সকল যুদ্ধেই ধর্ষণকে একটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী যে দুই লক্ষ বাঙালি নারীকে ধর্ষণ করেছে, যৌন নিপীড়ন করেছে এর মূল কারণ কিন্তু রাজনৈতিক। কেবল যৌন আকর্ষণ  নিবারণের জন্য তারা এটা করেনি। বাঙালি জাতিকে অপমান করার জন্য, হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য, বাঙালির মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য পাকিস্তানি হানাদারেরা আমাদের শহর-বন্দর-গ্রামে লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি এই যৌন সহিংসতা চালিয়েছে। ফলে যুদ্ধের সময়ে চালানো ধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন সহিংসতাকে একটা ‘যুদ্ধকৌশল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই যুদ্ধ কৌশলকে আমরা সাম্প্রতিক ইতিহাসেও নানা রাজনৈতিক দাঙ্গা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমন করার চেষ্টাতেও ব্যবহার হতে দেখি। এ কারণেই ভোটের পর ভিন্ন ধর্মের সংখ্যালঘু কিংবা রাজনৈতিক ভি...

গোঘ্ন

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ চারু মাস্টারের বেহালা শুনে দোলাই বড় কেঁদেছিল। দোলাই ছিল নরম মনের ছেলে। বলেছিল, আপনার যন্তরে কী জানি কী যাদু আছে, কলজে টাটায়। হেই মাস্টেরবাবু, আপনার বিটির বিভায় যত কুমড়ো লাগবে, হামি দিবো। যত কলাই লাগবে, তাও দিবো। চারু মাস্টারের বিটির ফাগুন মাসে বিভা। দোলাই তার আগেই গাবতলার গোরে ঘুমোতে গেছে। নীচে ধু ধু পদ্মার জল ছুঁয়ে শেষ মাঘের হাওয়া এখন চারু মাস্টারের বেহালার সুরে বাজে। তাই শুনে ভাই হারাইয়ের মনে টান বেজেছিল। ফাগুন মাসে মাস্টোরের বিটির বিভা। যত কুমড়ো লাগে দেবে বলেছিল দোলাই। যত কলাই লাগে, তাও দিতে চেয়েছিল। উঠোনের কোণায় বসে শালপাতায় ভাত খেতে খেতে হারাই ভাইয়ের কথা বলে। চারু মাস্টার মোড়ায় বসে গায়ে রোদ নেন। যে বিটির বিভা হবে, সে খঞ্জনীর মতো মিঠে স্বরে বলে—ও চাচা, লজ্জা কোরো না। পেট পুরে খাও। বাঁ হাতের আঙুলে নাক ঝেড়ে পাছায় মোছে হারাই। মাথা নেড়ে বলে—খাছি মা, খুব খাছি। বড় মিঠা আপনারঘে রাঢ়দাশের ভাত। ফাগুন মাসে বিভা। ভাঁড়ার ঘরে দু বস্তা কলাই, কুড়িটে বড় বড় কুমড়ো—ভিতরটা নাকি লাল বিরিং! এই সুখে আদী মেয়েটা খিলখিল করে হাসে।–ও চাচ...

বিপুলবাবুর স্বর্গ লাভ

(একটি বাজে কল্প বিজ্ঞানের গপ্প) আর পাঁচটা বাঙালি মধ্যবয়সি মানুষের মতো বিপুলবাবু একটা গড়পড়তা জীবন যাপন করতেন।না বলা ভুল, একটু আলাদা ছিল তার জীবন।তিনি ঈশ্বর বিহীন এক মানুষ এবং বিজ্ঞান ভালোবাসা আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে চাকরি বা অবসরের পরের সময়েও কাজ করে চলেছিলেন।তেমনি এক জনসচেতনতার এক সভা শেষে দক্ষিণ কলকাতা থেকে তার রাজারহাটের বাড়ির দিকে যাওয়ার জন্য একটি বাসে উঠেছিলেন।আজ শনিবার হওয়ার কারণে অনেক অফিস ছুটি তাই জানলার ধরে জায়গা পেয়ে একটু উৎফুল ও হয়ে উঠলেন।হালে ফেসবুক বা অন্য সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগ রাখার কারণে জিনিসটি বেশ ভালো বেসে ফেলেছিলেন তাই একটু মনের মতো সিট্ পেয়ে আয়েস করে স্মার্ট ফোনে ফেসবুকে ঢুকলেন। এক পর্যায়ে বোধহয় চোখ একটু লেগে গিয়েছিল,আত্বস্থ হতেই চমকে উঠলেন।এ কোন জায়গা!তিনি পরিচিত বাসে তো নেই, আশেপাশে কোনো আসবাব বা অন্য কিছু দেখছেন না তবে বসে আছেন ওটা বুঝতে পারছেন।চারিদিকে যে আলো ছড়িয়ে পড়েছে ওটা বেশ মনরম আর বাসের সেই ভ্যাপসা গরমের বদলে একটা অতীব আরামদায়ক তাপমাত্রা বিরাজ করছে।বিজ্ঞান জানা বিপুল বাবু অলৌকিক কিছুর উপরে  ভরসা করেন না তাই একটু নিজের গায়ে চিমটি কাটলে...

যৌনতা এবং আমাদের মানসিকতা

যৌনতা-জীবকুলের মধ্যে একমাত্র মানুষ ও ডলফিন যৌনতা কে fun হিসেবে উপভোগ করে। অথচ সেটা স্বীকার করতে মানুষ সংকোচ অনুভব করে। এই দ্বিচারিতা আমাদের সমাজে রয়েছে।  যখনই উপভোগ ব্যাপার টা আসছে তখন সেক্স হয়ে উঠছে উপভোগের বস্তু বা সামগ্রী। আর বস্তু বা সামগ্রী কেনা বেচা হয়। এগুলো ভাবলে বাঙালী মূল্যবোধ আঘাত প্রাপ্ত হয়। কিন্তু বাস্তব তো বাস্তবই।আমাদের ভাল না লাগলেও সেটা কে না মেনে নিয়ে উপাই নেই। আমরা জানি যৌনতা বংশ বৃদ্ধি করে।আবার যৌনতা ভালবাসা জানানোর প্রকাশ।  যৌনতাহীণ ভালবাসা বলে কিছু  হয় না।সেটাও স্বীকার করতে আমাদের সংকোচ। সংকোচ ,সংস্কার আমাদের কে আস্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে। এক লেখক বলেছিলেন ,'ভালবাসা হীন যৌনতা পশুর তুল্য।'  বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলছে।মিডিয়া,নেটের দৌলতে প্রচুর ভালবাসা হীন যৌনতার সংবাদ পাচ্ছি।যা আগের ধারণাগুলোকে ভেঙেচুরে তছনচ করে দিচ্ছে। অথচ আমাদের স্বীকার করতে সংকোচ বোধ হচ্ছে যৌনতাকে স্রেফ মজা বা ফান হিসেবে দেখাটাও আসলে স্বাভাবিক।কোন বিকৃতি নেই। যৌনতার একটা লক্ষ  বংশ বৃদ্ধি করা ।আবার এটাও সত্য আমরা ভাল বাসি না বাসি,বংশ বৃদ্ধি করি না করি তার ...

উপমহাদেশে হিন্দু গণহত্যার ইতিহাস

এখনো পর্যন্ত প্রায় ৪০ কোটি হিন্দুর দেহ ক্ষতবিক্ষত হয়েছে ইসলামের তলোয়ারের দ্বারা।বর্বর আরব জাতির ইসলামের সমর্থকেরা ৭১২ খ্ৰীষ্টাব্দ থেকেই মেতে উঠেছে ‘কাফের’ হিন্দুদের গর্দান নামিয়ে দেওয়ার খেলায়। পেট্রোডলারের দাসত্ববৃত্তিকারীরা অনেক চেষ্টা করেও শেষমেশ ৮ কোটি হিন্দুর গণহত্যার কথা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। তাহলেও সেই গণহত্যাগুলিকে ‘অসাম্প্রদায়িক’ আখ্যা দিতে তারা সদা সচেষ্ট।  কিন্তু বাস্তব এটাই যে,‘কাফের’ হিন্দুদের হত্যা করে তাঁদের মহিলাদের ধর্ষণ ও মন্দিরগুলি ধ্বংস করে সেই মন্দিরের প্রতিষ্ঠিত দেব-দেবতাদের মূর্তি দিয়ে মসজিদের সিঁড়ি (যাতে সেগুলি পায়ে মাড়িয়ে চরম শান্তি পায় বিশ্বাসী মুসলমানেরা) বানানোর খেলায় সর্বদাই মেতে থাকত মুঘল-সুলতানি বর্বরেরা। আসুন, এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক–সেই রক্তে ভারতভূমির মাটি কর্দমাক্ত হওয়ার ঘটনাক্রম। ১) মথুরার গণহত্যা : ১০১৮ সালে মহাওয়ান জেলায় প্রায় ৫০,০০০ হিন্দুদের জলে ডুবিয়ে ও তলোয়ারের কোপে হত্যা করা হয়। সেইসঙ্গে হয় সেই জেলার ১,০০০ হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসসাধন। ২) সোমনাথ মন্দিরের গণহত্যা : ১০২৪ সালে গুজরাটের প্রভাস পাটনে ৫০...

জ্ঞানচর্চা এবং আমাদের মানসিকতা

জ্ঞানচর্চার স্পৃহা কখনও কখনও ‘অপরাধ’ হয়ে ওঠে। প্রচল রাষ্ট্র ও সমাজের কাছে ওই ব্যক্তি শত্রু হয়ে ওঠে, যে কিনা কেবলই প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে বেড়ায়, কেবলই যুক্তি দিয়ে বুঝতে চায় সব কিছুকে। অথচ ব্যক্তির সেই স্পৃহা হয়ত জেগে ওঠে অন্তর্গত নিষ্পাপ বিহ্বলতা থেকে। জাগতে পারে অসহায় বিস্ময় ও ক্রন্দন থেকে। যেমন জেগেছিল আরজ আলী মাতুব্বরের ভেতর। সে ঘটনা সকলেরই জানা। ‘মাকে আমি আর কোনওদিনই দেখতে পাব না! মিশে যাবেন তিনি মৃত্তিকার ভেতর!’ হয়ত এমনই এক প্রতিকারহীন কষ্ট থেকে মাতুব্বর ১৩৩৯ সনে তাঁর মৃত মার ছবি তুলেছিলেন এক আলোকচিত্রীকে নিয়ে এসে। কিন্তু তাতে বেঁকে বসে সমাজের কর্তাব্যক্তিরা। কারণ ছবি তোলা তো ধর্মে নিষেধ। তার ওপর নারীর – মৃত নারীর! তাঁর মার জানাজা আর দাফন করেনি তারা। কয়েকজন নিকটাত্মীয় ও শুভানুধ্যায়ী নিয়ে মায়ের শবদেহের সৎকার করেন তিনি। বাল্যকাল থেকেই সত্যের অনুসন্ধানে একাগ্র মাতুব্বরকে সমাজপতিদের সংস্কার, যুক্তি ও বুদ্ধিহীনতা অস্থির করে তোলে। এ ঘটনায় হৃদয়-মনন জুড়ে যে আলোড়ন ওঠে, তাই তাঁকে নিয়ে যায় নিরাসক্ত জ্ঞানচর্চার দিকে। এরপর তাঁকে আর ফেরানো যায়নি সে-পথ থেকে। দীর্ঘ ১৮ বছর জ্ঞানসাধনার পর...