সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ধর্মীয় সাম্রাজ্যবাদ

                                                                                 লিখেছেনঃ-  

ধর্মও সাম্রাজ্য বিস্তারে সহায়ক হয়েছে , ইসলামিক ধর্মের আড়ালে আরবীয় সাম্রাজ্যবাদ ও পৃথিবীর পক্ষে কম ক্ষতিকর হয়নি । ধনতন্ত্র সর্বোচ্চ পর্যায়েই শুধু সাম্রাজ্যবাদে উন্নীত হয়না । তাহলে প্রাচীনকালে রাজসূয় যজ্ঞের মাধ্যমে করদ রাজ্য তৈরি করতো না আর্যরা । ঋকবেদেও রাজা সুদাস ও দশ রাজার যুদ্ধের উল্লেখ আছে , রামায়ণে এবং মহাভারতেও আছে মহাকাব্যের নায়ক রামচন্দ্র ও সহনায়ক যুধিষ্ঠীর রাজসূয় যজ্ঞ করেছিল নিজেদের ঘোড়া পার্শ্ববর্তী রাজ্যের ওপর দিয়ে ছুটিয়ে তাদের করদ রাজ্যে পরিণত করেছিল , সেগুলিতো সমাজ জীবনেরই প্রতিচ্ছবি । এগুলো সাম্রাজ্য বিস্তার বা সাম্রাজ্যবাদী কার্যকলাপ ছাড়া আর কি ? তিনটি বাণিজ্য পথের সংযোগস্থলে মক্কার অবস্থান , মহম্মদও সেই পথ দখল করেছিল বাণিজ্যিক কার্যকলাপ নিজের অধিকারে আনার জন্য , তারপর জীবিত অবস্থায় প্রায় ৭০ টি যুদ্ধ করেছিল , তার মধ্যে ১৭ থেকে ২৯ টি যুদ্ধে নিজে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন , সব কটি যুদ্ধ আত্মরক্ষার ছিলনা । মহম্মদ নিজে কোরান লিখে যাননি , তার পরবর্তীকালে আবুবক্কর ও অন্যান্যরা সব আয়াতগুলি সংকলন করেছেন । কোরানের ওপর থেকে ধর্মের পর্দা সরিয়ে নিলে মহম্মদের বৃহত্তর আরবীয় সাম্রাজ্য গঠনের চিত্রটা চলে আসবে .। এত জিহাদি কথাবার্তা আর কোনো ধর্মগ্রন্থে নাই । মহম্মদের পরে তার শ্বশুর আয়েশার বাবা আবু বক্কর হজরত আলী , আয়েশা প্রভৃতিরা ধর্ম প্রসারের নামে আরব এবং আফ্রিকার প্রচুর দেশ দখল করেছে , লুটপাট করেছে , মহিলাদের গণিমতের মাল তৈরি করেছে , যৌন অত্যাচার করে দাসী হিসাবে বিক্রী করেছে । ৭১২ খ্রীস্টাব্দে উমায়েদ খলিফার পক্ষে বিন কাশিম সিন্ধু প্রদেশ দখল করে সেখানকার রাজা দাহিরকে খুন করে তার কাটা মুন্ড উমায়েদ খলিফার কাছে পাঠিয়েছে এগুলি নৃশংসতা নয় , এগুলি সাম্রাজ্যবাদী কার্যকলাপ নয় ?
আমাদের দেশের বামপন্থা সব সময়ই দিশাহীন , সে ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশকে সমর্থন করে নেতাজীকে কুইসলিং বলা থেকে আজ পর্যন্ত । এরা প্যালেস্টাইনে বোমা পড়লে কোলকাতায় সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী মিছিল করে ভোট বাক্সের জন্য ঘরের মধ্যে চাপরা / ক্যানিং/বসিরহাট/পার্ক সার্কাস / বন্দর এলাকা আর ঘরের কাছে বাংলাদেশে ব্রাহ্মণবেরিয়া / নাসিরনগরের মতো লজ্জাস্কর ঘটনা ঘটলে চুপ করে মুখে কুলুপ এটে বসে থাকে । ধর্মকে আক্রমণ না করে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করা যায় না । বামপন্থীরাও ভোটের সময় ফুরফুরা শরীফ বা অন্য কোনো শরীফে ঘুরে বেরায় , ইফতারে যায় দক্ষিণপন্থী দলগুলোর মতো । সম্প্রতি মৌলানা আজাদ কলেজে মুসলীম মৌলবাদী ছাত্র সংগঠন বঙ্গবন্ধুর মূর্তী অপসারণের দাবী জানায় , এদের তার বিরুদ্ধে একটিও কথা বলতে দেখিনা । মুসলীম মৌলবাদীরা এদের প্রশ্রয়েই অনেকটা সাহস অবলম্বন করেছে এবং বেড়েছে আর সমান তালে বেড়েছে অসভ্য আর এস এস / ভি এইচ পি । তাই বামপন্থীরা পশ্চিমবঙ্গে আজ এই অবস্থায় অনেকটা এইসব কারণেই , এখনতো লাউও নেই আর একতারাও নেই , দক্ষিণপন্থী কংগ্রেস ও বর্তমান শাসকদের জন্যতো বটেই , বামপন্থীরাও কম দায়ী নয় , এদের জন্যই আগামী ভোটে মেরুকরণ বাড়বে বই কমবেনা । পশ্চিমবঙ্গে মন্দির / মসজিদ বেড়েই চলেছে আর সাথে সাথে দাঙ্গা । বিদ্যাসাগর - রামমোহন - রবীন্দ্রনাথের মাটিতে এই অশুভ শক্তিকে দমাতেই হবে । মানুষ কি খাবে ? কি পড়বে ? কি পরিধান করবে ? তাও ঠিক করে দেবে মৌলবাদীরা , যেমন উত্তর প্রদেশে কি খাবে যোগী সরকার বলে দিচ্ছে । মানুষের মৌলিক চাহিদা খাদ্য - বস্ত্র-আশ্রয় - শিক্ষা- স্বাস্থ্য -- সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশে অপারগ কর্পোরেটরা ধর্মক্ষেত্রে বিনিয়োগ করছে এবং তারাই মৌলবাদীদের অর্থ জুগিয়ে অশান্তি তৈরি করছে । রাজ্যে কে কতো বড় রাম ভক্ত তার প্রতিযোগিতা চলছে। আধুনিক যুগে এই একবিংশ শরতাব্দীতে রাস্তায় অস্ত্র হাতে মিছিল করছে । এ যেনো একদল মধ্যযুগীয় বর্ব্বরদের মহরমে দেখানো লাঠি তরোয়ালের সাথে আর একদল বর্ব্বরের প্রতিযোগিতা । বিজেপি যদি যম পূজা করে তাহলে বর্তমান শাসকেরাও বোধ হয় ভোটে জেতার জন্য সারা রাজ্যটাকেই যমের রাজ্য করে তুলবে --------------

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জাতীয়তাবাদ আরেকটি ধর্ম বই

বাংলাদেশীরা ধর্মভীরু। ইসলাম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ও জাতীয়তাবাদ নামক ধর্মগুলোর প্রতি বাঙ্গালীর দুর্বলতা নতুন কিছু নয়। আমরা যারা মুক্ত-চেতনাকে প্রয়োজনীয় মনে করি, যুক্তিকে ধর্মের ওপরে স্থান দেই তাদের অনেকেই ধর্মের মতই সামনে আসা অন্যান্য প্রতিটি ধারনা ও প্রস্তাবনাকেই যুক্তি দিয়ে বুঝতে চাই, খতিয়ে দেখতে চাই। বা দদূএকটি রূপ আধ্যাত্মিকতা ও ধর্ম হিসাবে মানুষের দলবদ্ধ সমাজব্যবস্থার দ্বিতীয় বড় চালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রস্তরযুগে আরো একটি ঘটনা ঘটতে শুরু করেছিল। মানুষেরা নিজেদের গ্রাম বা নগরকে কেন্দ্র করে একটি সামষ্টিক পরিচিতি অনুভব করে শুরু করেছিল। বোধ করি তখন থেকেই মানুষের দলবদ্ধতার তৃতীয় চালক জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক যাত্রা শুরু। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় জাতীয়তাবাদ নানান চেহারায় দলবদ্ধতার সবচাইতে শক্তিশালী চালক হিসাবে বিদ্যমান। একটি নৃগোষ্ঠী যখন পুঁজিবাদী হতে শুরু করে, যখন সে একটি কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র গঠন করে তখনই সে একটি জাতিতে পরিণত হয়। ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ আমাদের দেশের রাজনীতিতে কাছাকাছি আছে ইতিহাসের শুরু থেকে। মহাভারত থেকে আজকের খালেদা-হাসিনার রাজনীতিতে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ একে অন্যের হাত...

গাজওয়াতুল হিন্দ

গাজওয়াতুল হিন্দকে বর্তমান বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল শ্রীলংকার জিহাদীরা তাদের মনে আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে নানা মতাভেদ থাকলেও সকল মুসলিম জিহাদীরা মনে করে বা আ শা করে যে ইসলাম সারা পৃথীবিতে এই জিহাদের মাধ্যামে প্রতিষ্টা হবে। তারা এটাকে মর্যাদার্পূণ জিহাদ বলে মনে করে। ইসলামের ভিত্তির অন্যতম হলো জিহাদ। ইসলাম প্রতিষ্ঠাকালীন প্রচুর যুদ্ধ করা এবং হত্যার পরেই মানুষ ভয়ে ইসলামকে গ্রহন করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ভায়রাস বলা হয় ইসলামকে। এই ভায়রাস আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে গাজওয়াতুল হিন্দকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে জিহাদীরা তাদের দলে লোক বেসি করার জন্য অনলাইনে সহ নানা জাগাতে ঠিক এই ভাবে মুসলিমদের উপর প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে "গাজওয়াতুল হিন্দ বা ভারতবর্ষের যুদ্ধ সম্পর্কে কি আপনি অবগত? আপনি কি কাফের মুশরিকদের সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত?" ইসলামীষ্ট  জিহাদীরা ঠিক এভাবে চাই যে সারা পৃথিবীতে সবচে’ বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটা হবে হিন্দুস্তান তথা ভারতের হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যা সমস্থ জ্ঞানি ইসলামি স্কলার এবং আলেম উলামা জানে। মুসলমানদের জন্য এটা খুব বড়  জিহাদ এবং এই জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই...

বাঙালি এবং লেখকের জীবন

লেখকের বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত তার পরিবারের স্বীকৃতি।এখানে স্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে-লেখালেখি যে একটি কাজ,অন্য মতোই একটি কাজের, এবং সেই কাজের জন্য মনোযোগ,সময় এবং শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়-এই বোধটা তৈরী হওয়া।লেখালেখিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে নাই বা ধরা হলো। কিন্তু এটি যে একটি কাজ,এই স্বীকৃতিটা পরিবার থেকে আসা খুব প্রয়োজন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতি বান লেখক শেষ পর্যন্ত যে লেখক হয়ে উঠতে পারে না,লেখক জীবন যাপন করতে পারেন না,লেখালেখির জগত থেকে তাদের যে অকাল বিদায় নিতে হয়,তার সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।লেখালেখিকে পারিবারিক ভাবে স্বীকৃতি না দেওয়া।দেশের অন্য সব মানুষদের মতোই বেশির ভাগ পরিবারে লেখালেখি একটি নেহাৎ ই শখের জিনিস।তারুণ্য বা অংকুরোদ্গমী যৌবনে যৌনতার চুলকানিরও পেয়ে বসে আমাদের দেশের মানুষদের।তখন তাদের লেখাকে বাবাহা দেয় বাড়ির ভাবীরা,কাকা-জ্যাঠারা,সহপাঠীরা,বা তার কোন প্রেমিক-প্রেমিকাও।কখনো কখনো এমনকি বাবা মাও।তারা সকলেই অবচেতনে,এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানে যে,এই চুলকানি বেশিদিন থাকবে না।কিন্তু যার ক্ষেত্রে থেকে যায়,অর্থাৎ যে বুঝে যায় যে লেখক হওয়াটাই তার ভবিতব্য,সমস্যাটা তার ক্ষ...