এই ব্লগটি সন্ধান করুন

ধর্মীয় অন্ধতা এবং আমাদের বানরায়ন



১.চারদিকে অন্ধতার পরিমান এত বেড়েছে,কোনোওভাবেই আর সত্যের দেখা পাওয়া যায় না ।আমি কোনো অবিশ্বাসী মানুষ না,কিন্তু তাই বলে চোখ বন্ধ করে থাকতে জানি না

এইসকল অন্ধতার একটা প্রধান ধারা হচ্ছে ধর্ম ।ধর্মের অপব্যাখ্যায় চার দিক ছেয়ে গেছে ।মুক্ত মনের চর্চা হয় না কোথাও ।বিদায় নিয়েছে বিজ্ঞানমনস্কতা,এবং অন্যান্য বুদ্ধিমত্তার উপহার ।মানুষ থেকে বিবর্তনের ধারার উল্টা পথে মনে হয় যেতে আর বেশী নেই ।পচা নোংরা বানরের দলে পরিনত হচ্ছি আমরা ।

২.ইদানিং একজাতীয় "মাল্টিপারপাস" সর্বজ্ঞাণী,তথাকথিত বিজ্ঞান দার্শনিকের উদ্ভব হয়েছে,যাদের প্রধান কাজ হচ্ছে,ধর্মীয় পুস্তকে বিজ্ঞান খোজা,আমি বলছি না,ধর্মীয় পুস্তকে বিজ্ঞানের অস্তিত্ব নেই ।কিন্তু আমার আমার আপত্তি হচ্ছে এইসকল অর্ধশিক্ষিত(নৈর্ব্যত্তিক জ্ঞানের ব্যাপারে,কোনো কোনো ক্ষেত্রে "অর্ধশিক্ষিত " শব্দটি তাদের জন্যে কমপ্লিমেন্ট হয়ে যায়) কাঠমোল্লাদের আধুনিক সংস্করনদের প্রতি ।
তবে সমস্যার গভীরে যাবার আগে কিছু বিষয়ে সংজ্ঞায়ন করাকরিভাবে করা দরকার ।

প্রথম হচ্ছে বৈজ্ঞানিক তত্ব কিভাবে আত্নপ্রকাশ করে,
সকল বৈজ্ঞানিক তত্ব প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে "হাইপোথিসিস" ।
বিজ্ঞানী যখন হাইপোথিসিস দাড় করান,তখন তিনি কোনো একটি প্রাকৃতিক ঘটনাকে ব্যাখ্যার জন্যে কিছু গুরুত্বপূর্ন রাশির মাঝে সম্পর্কস্থাপনের চেষ্টা করেন ।একারনেই বৈজ্ঞানিক তত্ব ভীষনভাবে "দৃষ্টিকোন নির্ভর" ।
সমস্যা হচ্ছে আজকলের এই সব সবজান্তারা বিজ্ঞানকে অস্বাভাবিক(!) গুরুত্ব দিয়ে থাকেন( তিলমাত্র গানিতিক যোগ্যতা না থাকা সত্বেও) ।তারা মনে করেন ধর্মীয় পুস্তকে বিজ্ঞান খুজে পেলেই হলো,ধর্ম মহিমান্বিত হয়ে যাবে,অর্থাত্ বিজ্ঞানকেই সম্মানিত করা হল,এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি যে কতটা আত্ঘাতী তা মননশীল মানুষ মাত্রইবুঝতেপারে।
বিজ্ঞানের কোনো তত্ব "পরম" নয়,কারন তত্বগুলো নির্দিষ্ট দৃষ্টিকোন প্রসূত হাইপোথিসিসের ফলাফল মাত্র,তাই বিজ্ঞান সবসময় ই পরিবর্তনশীলতার মধ্য দিয়ে যায় ।চিরায়ত ধর্মের সাথে তার সমন্বয়ের চেষ্টা অবিশ্বাসীদের কাছে যেমন হাস্যকর,বিশ্বাসীদের কাছেও একরকম কটাক্ষের মত ।কারন ধর্ম ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস,অথচ এইধরনের কর্মকান্ড কর্তার বিশ্বাসের গভীরতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন তোলে উদ্দেশ্য নিয়েও সন্দিহান করে তোলে ।

৩.আমি পদার্থবিজ্ঞানে আগ্রহী,তাই কিছু তথাকথিত "দাবীকৃত" সাযুস্যের কথা বলছি।
সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ত নবীজীর মেরাজের ঘটনা(কুরআনে কোনোও অতিরন্জিত বর্ননা পাওয়া যায় না,কেবলমাত্র আলআকসা ভ্রমনের কথা বলা আছে,তা অবশ্য মেরাজের অন্যান্য ঘটনার তুলনায় শিশু)
যেসব ঘটনা দাবী করা হয় বিভিন্ন হাদীসে,তা কেবল মাত্র ঈশ্বরের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ ছাড়া(যদিও সৃস্টিমুহুর্তের পর তার আর কোনোও কজের হদিস পাওয়া যায় না,মিথলজি ছাড়া) একেবারেই অসম্ভব ।এটা তবুও আমার মেনে নিতে অসুবিধা নেই যে ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপেই এটা হয়েছে,আমি বিশ্বাসী সুতরাং আমার অসুবিধা নেই ।(যদিও উদ্ভট মিথলজির অনুপস্থিতি ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য,এবং এই ঘটনা মিথলজির কাতারে পরে যায়)।কিন্তু আমার আপত্তি তৈরী হয় যখন মানুষজন এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় নেমে পড়ে ।সবচেয়ে বেশী উল্লেখ করা হয় আইনস্টাইন কে(যদিও যারা উল্লেখ করে তাদের মধ্যে অধিকাংশ,আপেক্ষিকতা তো দুরে থাক,আইনস্টাইন বানান পর্যন্ত করতে পারে না ।)
বলা হয় আইনস্টাইন মেরাজের ঘটনা প্রমান করে গেছেন ।(হাসব নাকি কাদব!)
প্রধানত আইনস্টাইনের ১৯০৫ এর "বিশেষ আপেক্ষিক তত্ব "
এই ঔদ্ধত্যের ভিত্তি ।সেই তত্বের গতিশীল স্থানাংক কাঠামোতে ঘড়ির শ্লথ হয়ে যাওয়া সম্পর্কিত প্রেডিকশান এই দাবীর মূল ।(আলোর গতিতে চলা সম্ভব হলে,পর্যবেক্ষক সাপেক্ষে স্থির হয়ে যায় )।কিন্তু একই সাথে পর্যবেক্ষকের ভর স্থির কাঠামোতে দাড়িয়ে থাকা অপর একজন পর্যবেক্ষকের তুলনায় অসীম হয়ে যায়,অসীম ভরের কোনো বস্তুকে গতিশীলের জন্যে দরকার অসীম বল,এবং অসীম সম্পাদিত কাজ ।এজন্যেই আপেক্ষিক তত্ব আলোর বেগ, ভর(স্থির ভর,কারন বিভিন্ন এনার্জি পার্টিকেল গতিশীল অবস্থায় ভর প্রদর্শন করে)সম্পন্ন বস্তুর জন্যে অনুমোদন করে না ।

মজা হচ্ছে বিশেষ আপিক্ষিক তত্ব শুধুমাত্র "জড়" প্রসঙ্গ কাঠামোতে প্রযোজ্য(যেসকল প্রসঙ্গ কাঠামো পরস্পরের সাথে সমদ্রুতিতে চলমান) ।তার মানে ত্বরনিত কাঠামোতে(যেখানে বেগের পরিবর্তন হচ্ছে) বিশেষ আপেক্ষিকতা প্রয়োগ করা যায় না ।করতে হয় জেনারেল রিলেটিভিটি(১৯১৫ সালে আইনস্টাইন কর্তিক আবিস্কৃত,প্রধানত এই তত্বের জন্যে তিনি কিংবদন্তিতে পরিনত হন ।.আর জেনারেল রিলাটিভিটিতে ঘড়ির শ্লথ আচরন এর প্রেডিকশান অনেক অন্যরকম(ত্বরনীতকাঠামোতে,অথবা মহাকর্ষ ক্ষেত্রে ঘড়ি শ্লথ আচরন করে ।এখানে আলাদা লিখলেও জেনারেল রিলেটিভিটি জড় ভর ও মহাকর্ষ ভরের ইকুইভ্যালেন্সের কারনে একসিলারেটেড বডি এবং গ্র্যাভিটেশনাল ফিল্ডের মাঝে কোনো পার্থক্য করে না)।আর আমাদের সবজান্তাদের দৌড় এই পর্যন্ত পৌছেনি(টেনসর আ্যানালাইসিস,ননইউক্লিডিয়ান জিওমেট্রি,রীমেন সারফেস দিয়ে ফরমুলেটেড তত্ব টি আর যাই হোক,সবজান্তাদের জন্যে নয় )।

জেনারেল রিলেটিভিটিকে অস্বীকার করেও অবশ্য পাড় পাওয়া যায় না ।কারন নবীজী যখন যাত্রা শুরু করেন তখন শুন্যবেগে ছিলেন,আলোর বেগে পৌছাতে হলেও(যদিও অনুমোদিত নয়)
ত্বরন প্রোয়োজন এবং তখনই তা বিশেষ আপেক্ষিকতার হাত থেকে চলে গেছে ।উর্ধাকাশে গিয়ে ও তাকে থামতেহয়েছিলো ,অন্তত আরশে কুদসী দেখার জন্যে ।

৪।নানা অন্ধতায় আমরা ডুবে থাকি,চারপাশে,শুধু হনুমানের বৃথা আস্ফালন,তবে মুক্তমনের জন্যে এগিয়ে যাবই আমরা।
চলবে ।

ধর্মীয় দার্শনিকরা যারা ধর্মকে নিরন্তরভাবে বিজ্ঞানময় করে তোলার ম্যামথ টাস্ক কাধে নিয়েছেন তাদের অধ্যাবস্যায়ের প্রতি পূর্নশ্রদ্ধা রেখেই আজকের আলোচনা শুরু করছি।

প্রায়ই বিভিন্ন যায়গায় বলতে শুনি সূচের মধ্য দিয়ে উট চলে যাবার ব্যাপারটি। এটি আমি প্রথম পড়েছিলাম আল কোরান দ্যা চ্যালেন্জ নামের একটি বইতে। বিভিন্ন সময় এই ব্লগেও অনেককে কথাটা বলতে শুনেছি। কথাটা সম্ভবত হাদীসের, কুরআনেরও হতে পারে। আমি সেই হাদীস বা কুরআনের রেফারেন্স দিচ্ছি না, আমি অলস মানুষ ঘেটে বের করতে ইচ্ছা করছে না। যাই হোক সেখানকার সার কথা গুলো হচ্ছে:


আল্লাহ তাআলা চাইলে সূচের ফুটো দিয়ে উট প্রবেশ করাতে পারেন

ধর্মীয় দার্শনিকদের কনক্লুশান:

সুচের ফুটোয় অনেক কম স্থান বিদ্যমান।তার মধ্য দিয়ে উট যাবার কথা বলার মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণবিবর কে, কারন কৃষ্ণবিবরও ছোট জিনিস যার মাঝে বড় বড় বস্তু পতিত হয়।

বিজ্ঞানের বক্তব্য:

এখানে একটা বিষয় বলা প্রয়োজন আলোচনা শুরুর আগে সেটা হচ্ছে, যেহেতু এখানে ধর্মীয় স্ক্রীপচারকে বিজ্ঞানের সাথে মেলানো হচ্ছে সুতরাং বিজ্ঞানের দাবী থাকবে বিজ্ঞানের সংজ্ঞাগত বিশুদ্ধীর। এর অর্থ হচ্ছে যখন বিজ্ঞানের সাথে মেলানোর চেষ্ঠা হচ্ছে সুতরাং বিভিন্ন বিষয়কে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখতে হবে। সমস্যা হচ্ছে অনেক সময়ই ধর্মীয় বিজ্ঞান দার্শনিকরা এই জায়গায় পিছলানো শুরু করেন। তারা বিজ্ঞানের তত্ব ব্যাখ্যায় বিজ্ঞানের পরিভাষা ব্যবহারে বেশী একটা উতসাহী হন না। এর প্রধান কারন হচ্ছে বিজ্ঞানের পরিভাষা গুলো সাধারনত ওয়েল ডিফাইন্ড থাকে। সেখানে এদিক সেদিক ধোয়াশামূলক ব্যাখ্যা করা যায় না।
আরেকটি ব্যাপার ,বিজ্ঞান কিন্তু তত্ব নিরপেক্ষ বাস্তবতা স্বীকার করে না। তাই সাধারন জীবনে সত্য আর বৈজ্ঞানিক সত্য নামে সাধারনত যে বিভাজনটা হয়ে থাকে তা পুরোপুরি ইনভ্যালিড। হ্যা অনেক বৈজ্ঞানিক সত্য দৈনন্দিন জীবনে আমাদের অভিজ্ঞতার পরিপন্থী। এখানে অভিজ্ঞতা শব্দটি খুবই গুরুত্বপূর্ন কারন অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের পর্যবেক্ষনের প্রাকৃতিক সীমাবদ্ধতার কারনে অনেক ঘটনা আমাদের কাছে যেভাবে আ্যাপিয়ার করে সত্যিকার অর্থে সেভাবে ঘটে না।সুতরাং অনেক ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা ইলিউশন ছাড়া আর কিছুই না।যেমন আমরা কখোনই দৈনন্দিন জীবনে গতিশীল জড় কাঠামোতে শ্লথ ঘড়ির সম্মুখীন হই না।

এবার দেখা যাক সুচের ফুটা আর ব্ল্যাকহোলের পার্থক্য কোথায়।

সূচের ফুটা দিয়ে উট যেতে পারে না কারন উট ,সুচের ফুটার তুলনায় অনেক বড় স্থান দখল করে।

ব্ল্যাকহোলের আলোচনা শুরু করার আগে আমরা এই স্থান ব্যাপারটিকে আরেকটু rigorously সংজ্ঞায়িত করতে চাই।ইউক্লিডিয় জ্যামিতি অনুসারে স্থান শুন্যমাত্রিক বিন্দুসমূহের ত্রিমাত্রিক বিস্তৃতি। এবং ইউক্লিডিয় স্থান সমতল। এই বক্তব্যের অনেকগুলো কনসিকোয়েন্স আছে,
১.পিথাগোরাসের উপপাদ্যের সত্যতা(তিনমাত্রায় পিথাগোরিয়ান উপপাদ্য)
২.দুটি বিন্দুর মাঝে সর্বনিম্ন দুরত্ব হচ্ছে ঐ বিন্দু দুটোকে সংযোগকারী সরলরেখা
৩.চিরায়ত ,অর্থাত এই ইউক্লিডিয়ান স্থান অনেকটাই চিরায়ত এই অর্থে এই স্থান পরিপার্শ্ব দ্বারা প্রভাবিত হয় না।এই অনুসিদ্ধান্ত ইউক্লিডিয়ান স্থানকে একটি আ্যাবস্ট্রাক্ট অথবা সংজ্ঞাভেদে অবস্তুগত ধারনায় পর্যবাসিত করে।

এখন ব্ল্যাকহোলের আলোচনা শুরু করবার আগে আমাদের আরেকটু স্থানের সংজ্ঞার গভীরে যেতে হবে। কারন ব্ল্যাকহোল জেনারেল রিলেটিভিটির একটি প্রতিফল। আর জেনারেল রিলেটিভিটির ভিত্তি হচ্ছে অইউক্লিডিয় জ্যামিতি।

অইউক্লিডিয় জ্যামিতি টা কি?

যারা জ্যামিতি পড়েছেন সবাই ইউক্লিডের জ্যামিতির সাথে পরিচিত। ইউক্লিডের জ্যামিতিতে পাচটি স্বীকার্য বিদ্যমান। স্বীকার্য হচ্ছে প্রমান ব্যাতিরেকে যে ধারনা গুলোকে স্বীকার করে নেয়া হয়। ইউক্লিডের পঞ্চম এবং বহুল বিতর্কিত স্বীকার্যটি হচ্ছে

"যদি একটি সরলরেখা অপর দুইটি সরলরেখার উপর পতিত হয় তাহলে যে পার্শ্বে উত্পন্ন অন্ত:স্থ কোন গুলোর সমষ্টি দুই সমকোনের কম হবে সেই পার্শ্বে রেখাদুটোকে অনির্ধারিতভাবে বর্ধিত করলে রেখাদুটো পরস্পরকে ছেদ করবে"

স্বীকার্যটি যদি বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে এই স্বীকার্যের ভিন্নরুপ গুলোর একটি উল্লেখ করছি(এটি প্লেফেয়ারের স্বীকার্য হিসেবে পরিচিত)
"যদি একটি সরলরেখা দুইটি সমান্তরাল সরলরেখার একটিকে ছেদ করে তাহলে অপরটিকেও ছেদ করবে"

আসলে এই স্বীকার্যের মুল নির্যাস হচ্ছে সমান্তরাল সরলরেখা পরস্পরকে কখোনোই ছেদ করবে না।

এখন অইক্লিডিয় জ্যামিতিতে এই স্বীকার্যটি সত্য নয়।অর্থাত অইউক্লিডিয় জ্যামিতিতে সমান্তরাল সরলরেখাসমূহ পরষ্পরকে ছেদ করে। এই কথা দেখে আত্কে উঠবার কোনো কারন নেই,পৃথিবীর পৃষ্ঠ একটি অইউক্লিডিয় তল,দ্রাঘিমা রেখাগুলো সমান্তরাল কিন্তু তারা মেরুবিন্দুতে পরষ্পরকে ছেদ করে।

অইউক্লিডিয় জ্যামিতি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন কনসিকোয়েন্স:
১.পিথাগোরাসের উপপাদ্য সঠিক নয়
২.দুটো বিন্দুর মধ্যে সর্বনিম্ন দুরত্ব ঐ অইউক্লিডিয় তলের উপর নির্ভর করে। যাকে আমরা জিওডেসিক বলি। যেমন পৃথিবী পৃষ্ঠে কোন সরল রেখা আকা সম্ভব নয় পৃথিবী পৃষ্ঠের বক্রতার জন্যে। পৃথিবী পৃষ্ঠে দুটি বিন্দুর সর্বনিম্ন দুরত্ব হচ্ছে পৃথিবীর কেন্দ্রকে কেন্দ্র করে ঐ বিন্দু দুইটি দিয়ে যাবে এমন কোন বৃত্ত আকা হলে ঐ বৃত্তের পরিধি বরাবর। আন্তর্জাতিক বিমানরুট গুলো যখন নির্নয় করা হয় তখন এই পদ্ধতিতেই করা হয়। এই বৃত্তগুলোকে বৃহত বৃত্ত বলে।
৩।ত্রিভুজের তিন কোনের সমষ্টি দুই সমকোনের সমান নয়। কতটুকু পার্থক্য এটা নির্ভর করে ত্রিভুজের আকৃতির উপর।

এখন পৃথিবীর তলকে কিন্তু ইউক্লিডিয় গোলীয় জ্যামিতি দ্বারাও ব্যাখ্যা করা যায়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে একটি যৌক্তিক সমস্যা আছে। এয়ার রুট নির্নয়ের সময় আমরা ইউক্লিডিয় গোলীয় জ্যামিতি ব্যবহার করছি। এবং আমাদের একটি অতিগুরুত্বপূর্ন তথ্য এখানে দরকার ,সেটি হচ্ছে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ। এখন ধরা যাক একটি দ্বিমাত্রিক প্রানী গোলকের উপরিতলে বাস করে। যেহেতু সে দ্বিমাত্রিক প্রানী সুতরাং ত্রিমাত্রা সমন্ধে তার কোন ধারনাই নেই। গোলকের ব্যাসার্ধ তার কাছে পর্যবেক্ষনযোগ্য নয়। সুতরাং সে কিভাবে যদি তার বিশ্বের এয়াররুট নির্নয় করতে চায় ,নির্নয় করবে?
গস,বোলাই,রীম্যান এরা এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়েই অইউক্লিডিয় জ্যামিতি আবিস্কার করেন।
গানিতিক টার্মে প্রস্তাবনাটি হচ্ছে কোনো তলের বাইরে না গিয়েই তলের বৈশিষ্ঠসমূহ নির্নয় করা।খেয়াল করুন এয়ার রুট নির্নয় করার সময় আমাদের যে গোলকের ব্যাসার্ধ লেগেছিল সেই গোলকের ব্যাসার্ধ কিন্তু তলের বাইরের প্যারামিটার।

এখন জেনারেল রিলেটিভিটি বলে এই মহাবিশ্ব হচ্ছে স্থানকালের অইউক্লিডিয় বিস্তৃতি। অর্থাত স্থানকালের কাঠামো অইক্লিডিয় জ্যামিতি মেনে চলে। বস্তুকনাসমূহ তাদের ভরের কারনে চারপাশের স্থানকালকে বক্র করে দেয়। এবং এই বক্রতাই মহাকর্ষের প্রকৃত কারন।


এখন ছোট স্কেলে অইউক্লিডিয় জ্যামিতি ,ইউক্লিডিয় জ্যামিতিতে আসন্নীকৃত হয়।যে কারনে আমরা অইউক্লিডিয় জ্যামিতির প্রভাবে দৈনন্দিন জীবনে তেমন একটা পর্যবেক্ষন করি না।

এখন আসা যাক ব্ল্যাকহোল প্রসঙ্গে। সেখানে যা হয় তা হচ্ছে,

চন্দ্রশেখর লিমিটের বাইরে এরকম নক্ষত্রের হাইড্রোজেন জ্বালানী যখন শেষ হয়ে যায় তখন তার ভর নিজের উপরই কোলাপস করে। বিপুল পরিমানে ভর কেন্দ্রীভূত হওয়ায় চারপাশের স্থানকালের বক্রতা অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌছায়। এবং আলো সমূহ জিওডেসিক বা সর্বনিম্ন দুরত্বের পথ অতিক্রম করতে গিয়েই নিজের উপরই পতিত হয়। মহাকর্ষ ক্ষেত্রের শক্তিও অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌছায়।

ব্ল্যাখোল কিন্তু স্থানের পরিমানে কম নয়, কেবল বিপুল পরিমান স্থান নিজের উপর বক্র হয়ে আছে। ব্যখোলের যেটা কম সেটা হচ্ছে ঘটনা দিগন্তের ক্ষেত্রফল।সুতরাং ব্ল্যাক হোলে স্থান কম কথাটা অবৈজ্ঞানিক।

কিন্তু সুচের ফুটায় স্থান আসলেই কম।সুতরাং সেখানে উটের প্রবেশ অযৌক্তিক।

এই দুটোর মাঝে মিল খুজে পাওয়া কেবল বিজ্ঞান জানায় ঘাটতিকেই প্রকাশ করে,কোনো মহিমা নয়।


(যদিও আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি উটের সুচের ফুটায় প্রবেশ শুধুমাত্র একটি অসম্ভব ঘটনার মেটাফোর। সর্বশক্তিমানের ক্ষমতা উদাহরন হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এভাবে অনেক লং শটে মেলানোর চেষ্টা অনেকটাই হাস্যকর। বরং হিন্দু ধর্মে ব্ল্যাকহোলের আরও কাছাকাছি বর্ননা পাওয়া যায়। যেমন কৃষ্ণকে বলা হয়েছে সব আলো শোষনকারী। যেটা ব্ল্যাকহোলের জন্যে সত্য।এভাবে ডান বাম করে অনেক কিছুর সাথেই মেলানো যায় বিজ্ঞানকে। যদি কোনোদিন ধর্ম থেকে আগেই বলা হত ভবিষ্যত তত্বের কথা তাহলে বিষয়টি ক্রেডিবিলিটি পেত।কিন্তু সেটা কখোনই হয় না )

আমরা বিবর্তনের পথে উল্টোদিকে না হাটি। অন্ধ বানরায়ন না ঘটে আমরা উন্নততর মানুষ হয়ে উঠি এই প্রত্যাশা রাখছি।





১. দশ হাজার বছর আগেই মানুষ বুঝেছিল পার্থিব জীবনে সূর্যের ভূমিকা। সূর্য মানুষ্কে শুধুই আল দিত না, সাথে সাথে নিরাপত্তার বোধ, উষ্ণতা ইত্যাদিও দিত। সেকারনেই প্রাচীন সভ্যতাগুলতে সূর্যকে আলাদা মর্যাদায় দেখা হত। তারা বুঝে ছিল সূর্য ছাড়া শস্য ফলবে না, পার্থিব জীবন টিকে থাকতে পারবে না। এই সত্য গুলোই মানুষকে ধাবিত করেছে সূর্যকে সবচেয়ে সম্মানিত একটি নিমিত্তে পরিণত করতে।

মানুষ আকাশের নক্ষত্র সম্পর্কেও ভালোই জানত। আকাশ পর্যবেক্ষনের ফলেই তারা শিখেছিল নক্ষত্রমন্ডলীর গতি, বছরের বিভিন্ন সময়ে নক্ষত্রের অবস্থান ইত্যাদি। যার ফলে পূর্নিমা বা অমাবশ্যার মত ঘটনাগুলোর মাঝে সময়ের পর্যায় তারা নিঁখুত ভাবে নির্নয়ে সমর্থ হয়।

এই প্রবনতাই তাদেরকে বছরের বিভিন্ন সময়ে আকাশের অবস্থা লিপিবদ্ধ করে রাখতে উতসাহী করে। এই তালিকাটি জন্ম দেয় কন্সটেলেশনের।

এই যোডিয়াক আমাদের অনেকগুলো তথ্য দেয় ...
এখানে দেখা যায় সূর্য কিভাবে একটি বছরে বারোটি প্রধান রাশির মধ্য দিয়ে পরিভ্রমন করে। এটা আরও প্রকাশ করে ১২ টি মাস, ৪ টি মৌসুম, জলবিষুব,উত্তর অয়নান্ত ইত্যাদি। রাশিচক্রের ব্যাপারে একটি গুরুত্বপূর্ন কথা হচ্ছে এই রাশিগুলোকে বিভিন্ন মানবীয় বা প্রাকৃতিক উপাদানের সাথে প্রাচীন যুগের মানুষরাই সম্পৃক্ত করে গেছে। এবং সেই নাম গুলো আমরা এখনও ব্যভার করি। এবং প্রাচীন সভ্যতা সমূহ শুধুমাত্র নক্ষত্র সমূহ পর্যবেক্ষণ করেই ক্ষান্ত হয় নি, তারা বিভিন্ন নক্ষত্রমন্ডলীকে বিভিন্ন পার্থিব উপাদানের নামে নামকরন করেছে এবং তাদের আকাশের গতিবিধিকে সম্পৃক্ত করেছে বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনীর মাধ্যমে।
এবং সূর্যের জীবনদাত্রী গুনাবলীর কারনে সূর্যকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে ঈশ্বরের সাথে। মানবজাতির ত্রাতা হিসেবেই সূর্যকে দেখা হত। এবং ১ ২ টি রাশিকে দেখা হত ঈশ্বরের সহযাত্রী হিসেবে। যারা সূর্যের সাথে ভ্রমন করে।(বছরের বিভিন্ন সময়ে সূর্য আকাশের উত্তর পূর্ব থেকে দক্ষিন পূর্বের বিভিন্ন যায়গায় উদিত হয়। এই উদয়ের সময় মোটামুটি ৩০ দিন পরপর সূর্য একটি নতুন নক্ষত্রমন্ডলীর কাছে উদিত হয়। প্রাচীন পৃথিবীতে মাসের ধারনা এভাবেই এসেছে )। এই সকল রাশি সমূহকে নিয়েও নানা পৌরাণিক গল্প প্রাচীন সভ্যতা গুলো তৈরী করেছিল। মজার ব্যাপার ছিল গল্প গুলো পুরোপুরি গাঁজাখুরি ছিল না।প্রায়ই আকাশের রাশি সমূহের বিভিন্ন গতিকে মেটাফোরিক্যালি এই পৌরাণিক কাহিনীতে প্রকাশ করা হত।

যেমন আ্যাকুআরিয়াস, পানির ধারক, যিনি বসন্তকালে বৃষ্টি নিয়ে আসতেন।

২. হোরাস মিশরিয় দেবতা। তার পূজা হত খ্রীষ্টপূর্ব ৩০০০ সালে। তিনি ছিলেন সূর্য দেবতা। তার জীবন কাহিনী যেভাবে বর্ননা করা আছে প্রথম দৃষ্টিতে মনে হয় একেবারেই টিপিক্যাল মিথলজি। কিন্তু সাবধানে পরীক্ষা করলে বোঝা যায় বোঝা যায় পৌরাণিক গল্প গুলো আকাশে সূর্যের অবস্থান এবং গতি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যের মেটাফোর।

মিশরীয় পূরাণ যেগুলো হায়ারোগ্লিফিক্সে পিরামিডের গায়ে লেখা ছিল সেখান থেকে হোরাস সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা যায়।

যেমন হোরাসের একজন চিরশত্রু দেবতা ছিলেন। যার নাম হচ্ছে সেট। সেট ছিল অন্ধকারের দেবতা। প্রতিদিন সকালবেলা হোরাস সেটের সাথে লড়াইয়ে জিতে যেত, যার ফলে সূর্য উঠতো, অপরদিকে সন্ধ্যায় সেট জিতে যেত হোরাসের বিপক্ষে। যার কারনে রাত্রি নামত।

এখানে গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার হচ্ছে এই আলো বনাম অন্ধকার, অথবা ভালো বনাম খারাপ এটি সেই প্রাচীন কাল থেকেই নানাভবে নৈতিক বা সামাজিক অনুসঙ্গে প্রকাশিত হয়ে আসছে, এবং এখনও নয়। চৈনিক দার্শনিকরাও বিশেষ করে তাওবাদীরা এই ব্যাপারে বিশদ আলোচনা করেছেন।

হোরাসের সম্পূর্ন জীবন কাহিনীর সারাংশ নিম্নরুপ:

হোরাস:
জন্মদিবস : ২৫ শে ডিসেম্বর
মাতা আইসিস কুমারী ছিলো, অলৌকিক ভাবে কুমারী মাতার গর্ভে তার জন্ম
তার আগমন সংবাদ দিয়েছিল পূর্ব আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র
তার জন্মের পর তিনজন রাজা তাকে আশীর্বাদ করেন
১২ বছর বয়সেই তিনি শিক্ষাদান শুরু করেন মানুষের মাঝে
৩০ বছর বয়সে একজন জ্ঞানী আনুপ দ্বারা সিদ্ধি লাভ করেন এবং তার নিজস্ব মত প্রচার করা শুরু করেন
তার ১২ জন সহচর ছিলো
অনেক অলৌকিক ক্ষমতা তার ছিলো যেমন অসুস্থকে সুস্থ করা, পানির উপর হাটা
টাইফন দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতার স্বীকার হন, এবং ক্রুশকাঠে প্রাণ দেন, এবং মৃত্যুর তিন দিন পুনুরজ্জীবিত হন

ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে বিভিন্ন সভ্যতার দেবতাসমূহের মাঝে একই মিথলজিক্যাল স্ট্রাকচার দেখা যায়,
যেমন
ফ্রাইজিয়ার এটিস
ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ জন্ম
কুমারী মাতা নানা হতে জন্ম
ক্রুসিফাইড হয়েছিল
মৃত্যুর তিন দিন পর পুনুরজ্জীবিত হয়েছিল

ভারতের কৃষ্ণা

কুমারী দভাকি হতে জন্ম
পূর্বাকাশের নক্ষত্র তার আগমন বার্তা জানিয়েছিল
অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন ছিল
সহচর ছিল
মৃত্যুর পর পুনুরজ্ঝীবন


গ্রীসের ডায়ানসিস
ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ জন্ম
কুমারী মাতা
অলৌকিক ক্ষমতা ছিল যেমন পানি কে দ্রাক্ষারসে রুপান্তর
তাকে কিং অফ কিংস বলা হত
মৃত্যুর পর পুনুরজ্জীবন

পারস্যের মিত্রা
ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ জন্ম
কুমারী মাতা
১২ জন ভক্ত
মৃত্যুর তিন দিন পর পুনুরজ্জীবিত
এবং ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে তার পূজা হত রবিবার, সানডে ওরশিপ বলা হত

এখানে ব্যাপার হচ্ছে বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য সভ্যতার অসংখ্য দেবতা এই একই ধরনের বর্ননা পাওয়া যায়।

৩. সুতরাং প্রশ্ন আসে কেনই বা কুমারী মাতা, কেনই বা ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ জন্মদিবস??কেনই বা মৃত্যুর পর পুনুরজ্জীবন এবং কেনই বা ১২ জন ভক্ত??


এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্যে সবচেয়ে নতুন এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় সোলার মেসায়াহ কে নিয়ে আলোচনা করা যাক


জেসাস ক্রাইস্ট:

জন্মেছিলেন ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ বেথেলহেমে
কুমারী মাতা মেরীর গর্ভে
তার আগমন বার্তা ঘোষিত হয়েছিল পূর্বাকাশের নক্ষত্রের মাধ্যমে
তিনজন রাজা অথবা মেজাই তাকে আশীর্বাদ করেছিল
১২ বছর বয়সে তিনি শিক্ষা দেয়া শুরু করেন
৩০ বছর বয়সে জন দ্যা ব্যাপটিস্ট দ্বারা ব্যাপটাইজড হন
তার ১২ জন ভক্ত ছিলো
তিনি অলৌকিক ক্ষমতা প্রদর্শন করেন যেমন অসুস্থ কে নীরোগ করা,পানির উপরে হাটা ইত্যাদি
ভক্ত যুদাসের দ্বারা বিশ্বাস ঘাতকতার শিকার হন
ক্রুসিফাইড হন, এবং মৃত্যুর তিনদিন পর পুনুরুজ্জীবিত হন

প্রথমেই বার্থ সিকোয়েন্সটি সম্পূর্নভাবে এস্ট্রোলজিক্যাল।

পূর্বাকাশের তারা টি হচ্ছে সিরিয়াস, রাতের আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। ডিসেম্বরের ২৪ তারিখ সিরিয়াস ,কালপুরুষের বেল্টের মাঝে অবস্থানকারী তিনটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের সাথে একই রেখায় অবস্থান করে। এই তিনটি নক্ষত্রকে প্রাচীন কাল থেকেই থ্রী কিংস বলা হত।
সিরিয়াস এবং ত্রী কিংস যে সরলরেখায় অবস্থান করে, সে সরলরেখাটি ২৫ তারিখের সূর্যোদয়ের স্থানকে নির্দেশিত করে। অথবা তারা ঘোষনা করে "সূর্যের জন্মকে"(মেটাফোরিক্যালি)। আর ভার্জিন মেরী হচ্ছে ভার্গো কন্সটেলেশন। ল্যাটিনে ভার্গো মানে হচ্ছে কুমারী। ভার্গো কে আরও বলা হয় হাউস অফ ব্রেড। এবং ভার্গো রাশিটির ছবিটি লক্ষ করলে দেখা যাবে একজন কুমারী একটি গম পাতা ধরে রেখেছে। এবং হিব্রু বেথেলহেম মানে হচ্ছে হাউস অফ ব্রেড। সুতরাং বেথেলহেম আকাশের একটি রাশিকে নির্দেশ করে মর্তের কোনো জায়গা নয়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ন ঘটনা ঘটে ২৫ শে ডিসেম্বরে। আমরা জানি সূর্যের উত্তর আয়নায়ন থেকে দক্ষিন আয়নায়নে দিনের দৈর্য্য ক্রমাগত কমতে থাকে উত্তর গোলার্ধের প্রেক্ষাপটে(পারসিক,মিশরীয়,রোমান,গ্রীক,ভারত,প্যালেস্টাইন সবগুলো দেশই উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত)। সূর্য ক্রমাগত দক্ষিনে সরে যেতে থাকে এবং কৃশ হয়ে পরতে থাকে। সূর্যের এই ক্রমাগত ক্ষীনতর আকৃতি লাভ প্রাচীন মানুষদের কাছে সূর্যের মৃত্যুর প্রতীক ছিল। ডিসেম্বরের ২২ তারিখ সূর্য আকাশের সর্বনিম্ন বিন্দুতে পৌছয়, এবং সূর্য সবচেয়ে কৃশ আকৃতি ধারন করে। এখানে খুব মজার একটি বিষয় ঘটে। সূর্যের দক্ষিন মুখী গতি বন্ধ হয়ে যায়। ৩ দিন সূর্য একই অবস্ঠানে থাকে। এরপর ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ সূর্য উত্তর দিকে ১ ডিগ্রী সরে আসে। এবং সূর্যদয় হয় ক্রক্স নক্ষত্রমন্ডলীর কাছে, যে নক্ষত্রমন্ডলীর আকৃতি ক্রুশের মত। সেজন্যেই সূর্যের মৃত্যু হয় ক্রসে এবং তিন দিন পরে পুনুরজ্জীবিত হয়।

একারনেই জেসাস ক্রাইস্ট এবং অন্যান্য সৌর দেবতারা একই বর্ননা শেয়ার করে।

এবং জেসাসের সাথে ১২ জন ভক্ত হচ্ছে ১২ টি রাশি, যার মধ্যদিয়ে সূর্য সারা বছর পরিভ্রমন করে।



জোডিয়াকের ক্রস নিয়ে পুনরায় আকোচনা করছি। একটি প্রাচীন সভ্যতার জন্যে কেবলমাত্র শৈল্পিক একটি চিত্র ছিল না, বাত্সরিক সৌর গতি নির্নয়ের একটি ক্যাটালগ ছিল। যোডিয়াকের ক্রশ হতেই পেগান রা নিম্নোক্ত চিহ্ন এডপ্ট করে, ইন্টারেস্টিং হচ্ছে তা ক্রিশ্চিয়ান ক্রুশের অনেক টা কাছাকাছি। পেগানের এই চিহ্ন এখনও বিভিন্ন পেগান মন্দিরে দেখ যায়।

প্রথমিক যুগে জেসাসের যে ছবিগুলো পাওয়া যায় সেগুলোতেও জেসাসের মাথার পেছনে সর্বদা ক্রশ টিকে দেখানো হয়, যার উদ্দেশ্য আর কিছুই না, সূর্যের ক্রসে মৃত্যুর পেগান সিম্বলাইজেশনের একটি ক্রিশ্চিয়ান রুপ।
সে হিসাবে জেসাসের দ্বিতীয় আগমন কেও ব্যাখ্যা করা যায়। আসলেই তিনি আবার আসবেন, প্রতিদিনই আসেন, সকালের সূর্যোদয়ের সময়।
বাইবেলের নতুন ও পুরাতন নিয়মে আরেকটি গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার প্রকাশিত হয়েছে যা একটি আ্যাস্ট্রোলজিক্যাল মেটাফোর, তা হচ্ছে এইজ বা যুগ। এইজ বা যুগ বুঝার আগে আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ন আ্যাস্ট্রোলজিক্যাল ফেনোমেনন বুঝতে হবে যার শাব্দিক নাম "Precession of the Equinoxes" . প্রাচীন মিশরীয় এবং অন্যান্য সভ্যতা গুলো এই ব্যাপারটি পর্যবেক্ষন করেছিল যে প্রতি ২১৫০ বছর পর পর বসন্ত আয়নায়নের সকালের সূর্যোদয় ভিন্ন রাশিতে সংগঠিত হয়(এই কথাটি উত্তর গোলার্ধের জন্যে সত্য। প্রাচীন সভ্যতা গুলোর উত্তর এবং দক্ষিন গোলার্ধের ধারনা থাকার সম্ভাবনা কম। তবে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে গ্রীস, মিশর, আক্কাদ, পারস্য, প্যালেস্টাইন ইত্যাদি অঞ্চলগুলো উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত)সূর্যের এই আচরনের কারন বর্তমানে বোঝা যায়। পৃথিবী তার নিজ অক্ষে ঘূর্ননের সময় অত্যন্ত মন্থরগতিতে তার ঘূর্নন তল মন্থর গতিতে পরিবর্তিত হতে থাকে। অর্থাত ঘুর্ননের সময় পৃথিবী তার অক্ষ সাপেক্ষে একই তলে ঘোরে না। এই মন্থর ঘূর্ননতল বিচ্যুতির কারনে সূর্য বারোটি রাশি পরিভ্রমনকালে সময় নেয় ২৫৭৬৫ বছর। টলেমীর লেখাতে এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বর্ননা করা আছে। প্রাচীন সকল আকাশ পর্যবেক্ষকই এই বিষয়টি বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন। প্রাচীন পর্যবেক্ষকরা এই ২৫৭৬৫ বছর কে অভিহিত করতেন "the great year" নামে। এই ২১৫০ বছর কে ঐ সময়কালে বসন্ত আয়নায়নের সূর্যদয় যে রাশিতে হয়েছিল ঐ রাশির নামানুসারে নাম দেয়া হয়। ৪৩০০ খ্রী পূ হতে ২১৫০ খ্রী পূ ছিল the Age of
Taurus বা বৃষ রাশির যুগ। বৃষের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে ষাড়। খ্রী পূ ২১৫০ হতে ১ খ্রী হচ্ছে Age of Aries অথবা মেষ রাশির যুগ। মেষ হচ্ছে ভেড়া। ১ খ্রী হতে ২১৫০ খ্রী হচ্ছে Age of Pisces, বা মীন রাশির যুগ। মীন হচ্ছে মাছ। ২১৫০ খ্রী হতে শুরু হবে নতুন যুগ, The Age of Aquarius, বা কুম্ভ রাশির যুগ। বাইবেলে এই যুগের পরিবর্তন মেটাফোরিক্যালি উল্লেখ আছে। মুসা বা মোজেস সিনাই পর্বত থেকে টেন কমান্ডেন্টস নিয়ে যখন ফির আসলেন, তখ দেখলেন তারঅনুসারীরা একটি সোনার যাড়ের পূজা করছে। এটি দেখে তিনি রাগান্বিত হলেন, এবং ওল্ড টেস্টামেন্ট(তাওরাত)
অনুসারে তার অনুসারীদের আত্নশুদ্ধির জন্যে একে অপরকে হত্যার নির্দেশ দিলেন(এই গল্পটি কুরআনে একটু অন্যভাবে বর্নিত আছে)। এখানে মজার ব্যাপার হচ্ছে মোজেস এসেছিলেন মেষ রাশির শুরুতে। ইহুদী ধর্মেও ভেড়ার একটা আলাদা গুরুত্ব আছে। উতসবের সময় এখনও ইহুদীরা ভেড়ার শিঙ্গা বাজায়। এবং এর পূর্ববর্তী যুগ হচ্ছে বৃষ রাশির যুগ। যা হচ্ছে ষাড়। তাহলে ষাড়ের পূজার ব্যাপারটা পুরাতন যুগ শেষে নতুন যুগের আগমনের কথাই বলেছে। জেসাসের আগমন ঘটেছে পাইসিস যুগ বা মীন যুগের শুরুতে। এবং বাইবেলেও মাছের অনুষঙ্গটি খুব বেশী। যেমন জেসাস ৫০০০ মানুষকে খাওয়ালেন রুটি এবং দুটি মাছ দ্বারা। এখনও পাশ্চাত্যে মানুষ তার গাড়ির পেছনে জেসাস ফিস লাগিয়ে থাকে। জেসাস মোজেস এর মত রা সবাই সূর্যের রিপ্রেজেন্টেশন। বিভিন্ন এইজের কারনে একবার মোজেস একবার জেসাস বলা হিসেবে ধরা হয়েছে, সেভাবেই পৌরাণিক কাহিনীগুলো লেখা হয়েছে। এই এইজ সম্পর্কে বাইবেলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ভার্স হচ্ছে লুক(২২:১০)। এখানে শিষ্যদের কখন শেষ পাসওভার হবে এই প্রশ্নের জবাবে জেসাস বলেন:

"Behold, when ye are entered into the city, there
shall a man meet you bearing a pitcher of water...
follow him into the house where he entereth in. "


এবং মীন যুগের পরের যুগ হচ্ছে কুম্ভ যুগ। তাকে ওয়াটার বিয়ারার ও বলা হয়, কারন পৌরাণিক গাথা অনুসারে এই রাশি বসন্তে বৃষ্টি আনে। এবং এর ছবি সবসময় একজন পানির পাত্রবাহক হিসাবে আকা হয়। ভার্সটিতে সেই পানির পাত্রবাহক কে ই অনুসরন করতে বলা হচ্ছে। যা পরবর্তী এইজ যে কুম্ভ হবে সেটারই বিবৃতি।

জেসাসের পুরো চরিত্রটিই এভাবে পৌরাণিক গাথা এবং আ্যাস্ট্রোলজিক্যাল মেটাফোরের সমন্বয়ে তৈরী। তাকে প্রধানত মিশরীয় সূর্য দেবতা হোরাসের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে। হোরাসের বিবরন আগের পর্বেই দিয়েছি। হোরাসের যে জীবনকাহিনী মিশরের লুক্সর মন্দিরের দেয়ালে ছবি এবং হায়ারোগ্লিফিক্সে মাধ্যমে খোদাই করা আছে ৩৫০০ বছর আগে থেকে। জুডো ক্রিশ্চিয়ান ধর্মের সাথে মিশরীয় সহ অনেক পেগান ধর্মের অভাবনীয় মিল পাওয়া যায়। ওল্ড টেস্টামেন্টে এরকম উদাহরন আরও আছে। যেমন মহাপ্লাবন এবং নৌয়ার নৌকা। এটি প্রাচীন অনেক ধর্মেই পাওয়া যায়। উদাহরন স্বরুপ গিলগামেশের কাহিনী যা ৪৬০০ বছরের পুরোনো। গিলগামেশের কাহিনীটি ,ওল্ড টেস্টামেন্টের কাহিনীর একেবারেই আইডেন্টিক্যাল। যেমন ঘুঘু পাখি পাঠানোর মাধ্যমে শুকনা যায়গা সন্ধান করা হয়েছিল। আরেকটি গুরুত্বপূর্ন গল্প হচ্ছে মোজেস এর জন্ম কাহিনী।

মোজেস জন্মের পর তার মা শিশু হত্যা থেকে বাচতে একটি ঝুড়িতে করে মোজেসকে নদীতে ভাসিয়ে দেন। তারপর রাজপরিবারের একজন মহিলা তাকে বাচান।

এই গল্পটিও প্রাচীন পেগান ধর্মগুলোতে পাওয়া যায়,যেমন আক্কাদের সারগনকেও
জন্মের পর তার মা শিশু হত্যা থেকে বাচাতে ঝুড়িতে করে পানিতে ভাসিয়ে দেন। তারপর রাজপরিবারের মহিলা আক্কী তাকে বাচিয়ে তোলেন।

সিনাই পর্বতে মোজেস এর টেন কমান্ডেন্টস প্রাপ্তিরও একই অবস্থা। এটিও ওল্ড টেস্টামেন্টের একটি পেগান আ্যাডাপ্টেশন।

যেমন ভারতে মানু এরকম ব্রহ্মা কতৃক নির্দেশাবলী পেয়েছিলেন।

ক্রীটের মিনোস ডিক্টা পাহাড়ে জিউসের কাছ থেকে নির্দেশাবলী পেয়েছিলেন

মিশরে মিসেস পেয়েছিলেন নির্দেশাবলী, এবং মোজেস এর মতই তা পাথরে খোদাই করা ছিল।

আর টেন কমান্ডেন্টস এর পুরোটাই মিশরীয়দের বুক অফ ডেথের ১২৫ নং মন্ত্র থেকে তুলে আনা হয়েছে।
যেমন
বুক অফ ডেথের I have not stolen" ওল্ড টেস্টামেন্টে হয়েছে"Thou shall not steal,"


বুক অফ ডেথের"I have not killed" হয়েছে "Thou shall not kill,"


বুক অফ ডেথের"I have not told lies" হয়েছে "Thou shall not bare
false witness" ইত্যাদি।

প্রাথমিক যুগের খ্রীষ্ঠান ঐতিহাসিক রাও এই পেগান ধর্মের সাথে মিল গুলির ব্যাপারে সচেতন ছিলেন। যেমন প্রাচীনতম ক্রীশ্চান ঐতিহাসিকদের মাঝে অন্যতম জাস্টিন মারটর লিখেছেন
"যখন আমরা বলি, জেসাস ক্রাইস্ট, আমাদের শিক্ষক, যৌনমিলন ব্যাতিরেকে জন্মেছেন, ক্রুসিফাইড হয়েছিলেন, এবং পুনুরজ্জীবিত হয়েছিলেন, আমরা ভিন্ন কিছু বলি না যা জুপিটারের মানবী প্রনয়ের ফলে সৃষ্ট সন্তানদের সম্পর্কে তাদের বিশ্বাসীরা যা বলে"।

অন্যজায়গায় তিনি গ্রীকদের ক্রিশ্চিয়ানিটির দিকে উদ্বুদ্ধ করতে গিয়ে বলেছেন,

"তিনি জন্মেছিলেন কুমারী মাতা হতে, সুতরাং তাদের এটি বিশ্বাসে অসুবিধা হবে না যেহেতু তারা মেনে নেয় পার্সিউসকে"

প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য পার্সিউস , পৌরাণিক গ্রীক বীর,তিনিও কুমারী মাতার সন্তান ছিলেন।

জেসাস ক্রাইস্টের জীবন কাহিনী যেভাবে অলৌকিকতা দিয়ে পরিপূর্ন ,তিনি সত্যিই থাকলে ইতিহাসে তার অসংখ্য উল্লেখ থাকার কথা।

প্রায় ৬০ জন ঐতিহাসিকের লেখা পাওয়া যারা জেসাসের সমসাময়িক, ভূমধ্যসাগরীয় এলাকার। এর মাঝে ৫৬ জনের লেখায় জেসাসের কোনো উল্লেখ নেই।

বাকি চারজনের প্রথম ৩ জন হচ্ছেন প্লিনি দ্যা ইয়াংগার, স্যুটনিয়াস, ট্যাকটিয়াস।
তাদের লেখায় জেসাস ক্রাইস্ট নামক কোনো ব্যাক্তির কথা বলা নেই। বাইবেলে জেসাসের বর্ননার কিছুই তাদের লেখায় উপস্থিত নেই।

তাদের লেখায় শুধু বারকয়েক "ক্রাইস্ট" শব্দটি উল্লেখ করা আছে। আর শব্দটি দ্বারা ঐ ঐতিহাসিকরা কোনো ব্যাক্তিকে বোঝান নি। ক্রাইস্ট শব্দের শাব্দিক অর্থ তৈলাক্ত ।এই শাব্দিক অর্থেই তারা ব্যবহার করেছেন শব্দটি।


শেষজন হচ্ছে জোসেফাস।গত শতকে যখন নিরিশ্বরবাদী দর্শন তুমুল জনপ্রিয়তা লাভকরেছিল ইউরোপের পন্ডিত সমাজ, তখন চার্চ কতৃক এই ইতিহাসটি প্রচার করা হয়। যেটি গত শতকেই জালিয়াতি হিসেবে প্রমান হয়।ব্লগার বিবর্তনবাদীর কল্যানে আমরা গোয়েবলসীয় পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন। এটি তেমন একটি প্রচেষ্টা ছিল কিন্তু সফল হয় নি।

জুডো ক্রিশ্চিয়ান ধর্ম সম্পূর্নভাবেই পেগান ধর্ম থেকে ধার করা,মূলত মিশরীয় ধর্ম এই দুটি ধর্মকে প্রভাবিত করেছে।এবং মিশরীয় ধর্মকে এই ধর্মদুটোর ভিত্তি বলা যায়।

জেসাস ক্রাইস্ট অন্যান্য পৌরাণিক চরিত্রের মতই একটি মিথ ছাড়া আর কিছুই নয়। এমনকি প্রাথমিক ক্রীশ্চানরাও এটি জানত। পেগান এবং হিব্রুদের অত্যাচারের ফলে অত্যাচারিত রা ক্রীশ্চান হয়ে যায়। এরকম ঘটনা ইতিহাসে বারবার ঘটেছে। যেমন উপমহাদেশে নিম্ন বর্নের হিন্দুরা অত্যাচার হতে বাচতে দলে দলে ইসলাম গ্রহন করেছিল।ধর্মের নামে ছড়ি ঘোরানোর হাত থেকে বাচতে এরকম ঘটনা আগেও ঘটেছে। যেমন মিশরীয় দের ধর্মের অত্যাচারই হিব্রুদের জুডাইজমের দিকে ধাবিত করে। দীর্ঘদিন মিশরীয়দের সংস্পর্শে থাকার কারনেই হিব্রু বা ইহুদী ধর্ম মিশরীয় ধর্ম দ্বারা এতটা প্রভাবিত। রোমান শাসক কন্স্টানটিন খ্রীষ্ঠান ধর্মকে রাজনৈতিক কারনে ব্যবহার করেন তার রাষ্ঠ্রের স্ট্যাবিলাইজেশনের জন্যে। আলেকজান্দ্রিয়াতে ক্রীশ্চান পেগান রায়ট পেগান দের ভালোই ভয় পাইয়ে দিয়েছিল। তাছাড়া খ্রীষ্ঠান ধর্মগুরুরা রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্যে বিশ্বাসীদের লেলিয়ে দিচ্ছিলেন। কনস্টানটিন তাই খ্রীষ্ঠান ধর্মকে সুসংহত করেন। জেসাস ক্রাইস্টের পৌরাণিক গাথাকে ঐতিহাসিক ঘটনায় রুপান্তরের চেষ্টা করা হয়, যাতে বিশ্বাসীদের দলে টানতে একটি শক্তিশালী আধ্যাত্নিক ভিত্তি থাকে। জেসাস ক্রাইস্টের জীবন কাহিনী আর দশটা মিথের মতই বিভিন্ন মানুষের হাতে লেখা হয়েছিল। অনেক আলোচনার পর ৪ টিকে চুড়ান্ত হিসেবে গ্রহন করা হয়। কনস্টানটিনের কল্যানেই ক্রিশ্চিয়ানিটি রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভ করে, যা মূলত তিনটি চার্চ কেন্দ্রিক ছিল। প্রাথমিক সময়ে ভ্যাটিকান নিরঙ্কুশ ছিলো না। ক্ষমতা সমান ভাবে ভাগ হয়ে তিনটি চার্চের কাছে যেত। একটি ভ্যাটিকান, একটি আলেকজান্দ্রিয়ায় এবং অপরটি বাইজেন্টাইনে। এভাবেই ধর্ম হয়ে পরে রাজনৈতিক হাতিয়ার।
-আরিফুল হোসেন তুহিন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ