ইসলামি সন্ত্রাসের পথ ধরে চলছে রোহিঙ্গা মুসলিম পুরুষরা, আমরা কাদের জন্য মানবতা দেখাচ্ছি?

আমি ৩ই সেপ্টম্বর ২০১৭ইং কুতুপালং এ গিয়ে মিয়ানমার থেকে নিপীড়িত হয়ে পালিয়ে আসা হিন্দু নারী ও শিশুদের জীবন যাপন দেখে আসলাম। তাদের সাথে কথা বলে আসলাম। জেনে আসলাম তাদের স্বামী ও সন্তানদের কারা মুখ বেঁধে এসে হত্যা করেছে। কারা তাদের স্বামী সন্তানদের জবাই করার সময় বলেছে, আল্লাহু আকবর! কারা তিন বছর কোরবানি দিতে পারেনি বলে, রাজকুমারীর পুরো পরিবাররের সাত জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে কোরবানি উদযাপন করেছে। মুখোশ বাধা রোহিঙ্গা মুসলিম সন্ত্রাসীরা সুশীলার বর সীমান্তকেও ছাড় দেইনি, সুশীলা তার বর সীমান্তকে বাঁচানোর মুখোশ পড়া রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের পায়ের নিচে তার সমস্ত স্বর্ণালংকার ও জমি জমার দলিল পত্র এনে দেয়, তবুও রক্ষা হয়নি সীমান্তর জীবন। তার স্বর্ণাংলকার নিয়ে তবুও সীমান্তকে হাত পা বেধে জবাই করে। একজন দুজন নয়, রোহিঙ্গা মুসলিম সন্ত্রাসীদের দ্বারা বর্বতার শিকার মায়ানমারে আরো অনেক হিন্দু পরিবার। আমি ৩ই সেপ্টম্বর দেখেছিলাম ৪৮৬ জন হিন্দু নারী ও শিশু শরণার্থীকে। এখন জানায় যায় তাদের সংখ্যা হাজারের উপর ছাড়িয়ে গেছে।

এখানকার মুসলিম যারা আমার কাছে প্রশ্ন রেখেছে, রোহিঙ্গা পুরুষরা যদি সন্ত্রাসী হয়, তাহলে মায়ানমার থেকে হিন্দু নারী ও শিশুরা কিভাবে মুসলিমদের সাথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এই বাংলাদেশে আসতে পেরেছে? প্রশ্নটা খুবই যুক্তিযুক্ত। যেসব হিন্দু নারী ও শিশুরা তাদের স্বামী সন্তানকে হারিয়ে এখানে আসতে পেরেছে তারা রোহিঙ্গা মুসলিম সন্ত্রাসীদের উদরতার জন্য আসতে পারেনি। তারা আসতে পেরেছে মুসলিমে জাত দেবে বলে। তারা আসতে পেরেছে মুসলিম রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের (নিচে ৬ নম্বর লিংকে ভিডিও সহ দেয়া আছে কথাগুলো শুনে জেনে নেবেন) বিয়ে করার কথা দিয়ে। ইসলাম ধর্ম মুসলিমের দুর্দিনেও ধর্মপ্রান মুসলমান সন্ত্রাসীদের ধর্ম থেকে একচুলও যে নড়াতে পারে না, ভিডিও টা তারই প্রমাণ।শুধু তা নয় এসব হিন্দু নারীরা মুসলিমদের সাথে আসার সময় কতবার ধর্ষিত হয়েছে কে জানে!

তারা ওখান থেকে এসেছে বোরকা পড়ে। টেকনাফের একটি সীমান্ত এলাকায় এনে ওদের মুসলিম নারীদের সাথে একটি পরিত্যক্ত মুরগীর খামারে রাখা হয়। এক গোপন সুত্রে খবর পেয়ে এক হিন্দু চেয়ারম্যান হিন্দু নারীদের উদ্ধার করে কুতুপালং নিয়ে আসে। মুসলিম রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা কতখানি ইসলামিস্ট হলে তাদের দুর্দিনেও আবার যুদ্ধে প্রাপ্ত হিন্দু নারীদের গনিমতের মাল বানানোর ইচ্ছা পোষন করে? ঠিক কতোখানি ইসলামিস্ট জিহাদী যৌদ্ধা হলে রাখাইনে বার্মিজ বাহিনী দ্বারা নির্যাতন হবার পরও তারা আবার দুর্বল হিন্দু ধর্মালম্বীদের সর্বস্ব লুট করে, তাদের পুরুষদের নির্মমভাবে জবাই-হত্যা করে, আবার সেই নিঃস্ব নারীদের গনিমতের মাল হিসেবে ভোগ করার জন্য মুসলমানে জাত দিতে বাধ্য করে? এটা তাদের ইসলামিক দায়িত্ব পালন নয়কি?

রোহিঙ্গাদের সাথে বার্মিজ সরকারের সংঘাতের উৎস কি এবার একটু পেছনের গিয়ে তাকাই---
১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান সৃষ্টির সময় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জিন্নাহের সাথে একাধিক বৈঠক করে রাখাইনের রোহিঙ্গারা পাকিস্তানের সাথে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করে। কিন্তু পাকিস্তানের জিন্নাহ সাহেব তাতে অস্বীকৃতি জানায়। তাই বলে রোহিঙ্গা মুসলিমরা দমে যায়নি। তারা নিজেরাই রোহিঙ্গা মুসলিম পার্টি গঠন করে আরাকান স্বাধীন করার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে। এজন্য তারা বার্মার সরকারের কাছে ব্ল্যাকলিস্টেড হয়ে যায়। এবং তারা বার্মার অন্যান্য জাতিগৌষ্টির কাছে বেঈমানের তকমা পায়। ১৯৬২ সালে বার্মায় সামরিক সরকার ক্ষমতা এলে রোহিঙ্গাদের সহিংসতা দমন করার উদ্যেগ নেন। ১৯৭৮ আর ১৯৯২ সালে দুইবার তাদের উপর সামরিক অভিযান চালানো হলে ৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বলা হয় "বিশ্বের সবচেয়ে কম প্রত্যাশিত জনপদ এবং "বিশ্বের অন্যতম নিগৃহীত সংখ্যালঘু। ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনের ফলে তারা নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হন। তারা সরকারি অনুমতি ছাড়া ভ্রমণ করতে পারে না, জমির মালিক হতে পারে না এবং দুইটির বেশি সন্তান না নেওয়ার অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে হয়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অনুসারে, ১৯৭৮ সাল থেকে মায়ানমারের মুসলিম রোহিঙ্গারা মানবাধিকার লংঘনের শিকার হচ্ছে এবং তারা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে
রোহিঙ্গাদের চলাচলের স্বাধীনতা ব্যপকভাবে নিয়ণ্ত্রিত এবং তাদের অধিকাংশের বার্মার নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে। তাদের উপর বিভিন্ন রকম অন্যায় ও অবৈধ কর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের জমি জবর-দখল করা, জোর-পূর্বক উচ্ছেদ করা, ঘর-বাড়ি ধ্বংস করা এবং বিবাহের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
১৯৭৮ সালে মায়ানমার সেনাবাহিনীর 'নাগামান' ('ড্রাগন রাজা') অভিযানের ফলে প্রায় দুই লক্ষ (২০০,০০০) রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। সরকারিভাবে এই অভিযান ছিল প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যে সব বিদেশী অবৈধভাবে মায়ানমারে বসবাস করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এই সেনা অভিযান সরাসরি বেসামরিক রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলছিল এবং ফলে ব্যাপক হত্যার ঘটনা ঘটে।

১৯৯১-৯২ সালে একটি নতুন দাঙ্গায় প্রায় আড়াই লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। ২০০৫ সালে,
জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে, কিন্তু রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বিভিন্ন ধরণের মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে এই উদ্যোগ ভেস্তে যায়। [৪৪] অানান কমিশন: শান্তিতে নোবেলজয়ী ও গণতন্ত্রেরর মানসকন্যা অং সান সুচি ২৪ অাগস্ট ২০১৬ গঠন করেন রোহিঙ্গা বিষয়ক 'রাখাইন উপদেষ্টা কমিশন' নামের ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি অান্তর্জাতিক কমিশন। রেফারেন্সঃ রোহিঙ্গা উইকিপিডিয়া সংকলন  


আচ্ছা আমরা উপরে উল্লেখিত রেফারেন্সে পেলাম রোহিঙ্গা মুসলিমরা বার্মার রাখাইন রাজ্যে খুব নিপীড়িত এবং নিগৃহীত একটি জাতি। ঠিকাছে এটা অসত্য নয়। এটা দীর্ঘ বছর ধরে জাতিগত সংঘাত। কিন্তু এই সংঘাতের প্রতিশোধ হিসেবে রাখাইনে হিন্দুদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়া, তাদের পুরুষদের আল্লাহু আকবর বলে জবাই করা এটা ঠিক কোন ধরনের প্রতিহিংসা? ঠিক কোন ধরণের প্রতিশোধ? এখানে যা দেখছি, রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে সীমান্তের এ পাড়ে যারা আসছে তারা অধিকাংশ নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। আর তরুন, যুবক, মধ্য বয়স্করা রাখাইন রাজ্যে রয়ে গেছে যুদ্ধ করার জন্য। রাখাইন রাজ্য স্বাধীন করে ইসলামি খিলাফত প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আর আমরা এইসব বর্বর সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য মায়া কান্না করে যাচ্ছি? একটা বর্বর বিষাক্ত ভাইরাসকে ধারণ করার জন্য আমরা মানবতাবাদী হচ্ছি?

রোহিঙ্গা মুসলিম পুরুষরা যে কি যন্ত্র তা আমরা বিগত দিনগুলোতে দেখেছি। যাদের হাতে দুই হাজার টাকা দিলে তারা অনায়াসে মানুষ খুন করতে পারে! যাদের হাতে টাকা দিয়ে খুব সহজে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড চালনো যায়, যারা সব সময় ড্রাগ, মাদক ও ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত থাকে। কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে, আজ বাংলাদেশের তরুন তরুনীরা ইয়াবাগ্রস্থ হচ্ছে এই রোহিঙ্গাদের চোরা চালানোর জন্য। ১০ বছর আগেও এখানে এতোটা ইয়াবা-নেশা প্রভাব ফেলেনি। আজ যতটা ফেলেছে। এই তাদের জন্যই কি আমরা দুহাত বাড়িয়ে মুসলিম মুসলিম ভাই ভাই বলে বুকে টানছি? এদেশে স্বাধীনতার সংগ্রামের ক্ষত এখনো শুকায় নাই। তার উপর ঢেকে আনছি গোদের উপর বিষফোঁড়া! আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বলল, ১৬ কোটি মানুষকে চালাতে পারলে ৫-৬ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিমদের চালানো কোনো সমস্যা না! এটাও আমরা চালাতে পারবো। বলি কি, রিকশাওলার পেটোল কি তাঁর বাবা ঘুরায়? দিনমুজরের ঠেলাগাড়ি কি তাঁর বাপে টানে? গার্মেন্টসে লক্ষ লক্ষ নারীর কায়িক পরিশ্রমগুলো তার পুত ঝি নাতি নাতনীরা করে দেয়? নাকি ছাত্রলীগরা করে?

এখন মায়ানমার থেকে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামে প্রতিদিন ঢুকছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান। এরই মধ্যে এসেছে এক হাজারেরও বেশি হিন্দু জনসংখ্যা। যেন সারিবদ্ধ ভাবে লক্ষ লক্ষ পিঁপড়ার মতো জনস্রোত! সরকারী জরিপ মতে ৩ লক্ষ। কিন্তু মানুষের ধারণা এর মধ্যে চার সাড়ে ৪ লক্ষ ঢুকে গেছে। এই লক্ষ লক্ষ মানুষ যে বাড়ি ভিটে হারা হয়ে উদ্ভাস্ত হয়ে বাংলাদেশে চলে আসছে, এটা বর্তমান পৃথিবীতে অবশ্যই বড় আকারের একটা মানবিক বিপর্যয়। এই মানুষগুলো যাবে কোথায়? থাকবে কোথায়? এদের অন্ন বস্ত্র ও বাসযোগ্য স্থান কোথায়? আমারও জানা নেই। তবে আগামীতে বাংলাদেশকে এর মূল্য ভালো ভাবেই দিতে হবে!

---যেসব রোহিঙ্গা মুসলিম পুরুষ সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছেন, যারা রাখাইন রাজ্যে মুখোশ বেঁধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছেন, যারা মায়ানমারের সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে গিয়ে চোরাগুপ্তা বোমা হামলা করে উলটো সেনাবাহিনীদের উস্কে দিয়ে যুদ্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছেন, তারা যে এখানে এসে একেবারে ভালো মানুষটি হয়ে থাকবেন তা কিন্তু নয়। আমার মনে হয় মুসলিমদের এই জিহাদী জোসের ভাইরাস অদুর ভবিষ্যতে কক্সবাজার চট্টগ্রামেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর তা করবে এদেশীয় সুযোগ সন্ধানী মুসলমানরাই! যার মধ্যে একবার ইসলামি জিহাদী আনন্দ ঢুকে গেছে, তারা যে চুপচাপ বসে থাকবে এটা ভাবা খুবই মুর্খতা। ইসলামিক জিহাদী হলে কিনা পাওয়া যায়? সুযোগ বুঝে প্রতিবেশী শত্রুকে হত্যা করা যায়। জিহাদের নামে অমুসলিমদের ধন-সম্পদ লুটপাট করা যায়, তারপর অমুসলিম নারীদের ধর্ষন গনধর্ষন করে ভোগ করা যায়। এই ইসলামি জিহাদ মুসলমানদের দারুন একটা সুযোগ এনে দেয়। তাছাড়া একই সাথে আল্লা ও ইসলামের দায়িত্ব পালন করা যায়। নেকী পাওয়া যায়। তাই সবাইকে আগাম সতর্ক বার্তা, সাবধানে থাকবেন। সাবধানতা অবলম্বন করুন।

বিঃদ্রঃ এই লেখাটা লেখার ইচ্ছে পোষন করছি গত ৩ই সেপ্টম্বর থেকে। কুতুপালং থেকে এসে। আমরা ৩ই সেপ্টম্বর মুসলিম রোহিঙ্গা সন্ত্রাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে
মায়ামার থেকে পালিয়ে আসা যেসব হিন্দু শরণার্থীরা বাংলাদেশ এসে বিজিবি ও রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে জায়গা পায়নি। তাদের জন্য প্রায় লক্ষাধিক টাকা চাঁদা তুলে চাল, ডাল, ডিম, আলু, তেল, মিষ্টি কুমড়া, চিড়ে, বিস্টুক, কাপড়-চোপড়, রান্নার উপকরণ মসশাপাতি.... ট্রাক ভরে ত্রান নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়েই তাদের মুখে শুনলাম, মুখোশ পড়া মুসলিম রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা তাদের স্বামীদের কি বর্বর পন্থায় নির্মম্ভাবে হত্যা করেছে! আমি তাদের সাথে কথা বলে ১০টির ও বেশি ভিডিও নিজের মোবাইলে ধারণ করেছি। সাক্ষাতকার নিয়েছি। নিজেও কয়েকটা ভিভিও ইউটিউবে আপলোড করেছি। এই লেখাটির সত্যতা যারা যাচাই করতে একান্তই ইচ্ছুক তারা অবশ্যই নিচের লিংকগুলো ১ম থেকে সিরিয়াল বাই সিরিয়াল ক্লিক করে যাচাই করে নেবেন। এগুলি ৩ই সেপ্টম্বর থেকে আমার ফেইসবুক ওয়ালে পোষ্ট করেছি। যেখানে আছে ভিডিও সহ তার উজ্জ্বল প্রমান!



এই বিষয়ে ফেসবুকে আমার একটি পোস্ট দেখতে পারেন
আপনাদের সুবিধার জন্য হুবুহু পোস্টটা এখানে লিখে দিচ্ছি। এখানে ছবির মধ্যে যাদের দেখতে পাচ্ছেন, এরা হিন্দু। মায়ানমার থেকে পালিয়ে এসে টেকনাফ এলাকায় কুতু পালংরের বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। জনশ্রুতিতে শোনা যাচ্ছে, এরা মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর হাতে মার খেয়ে এদেশে পালিয়ে আসেনি। এরা পালিয়ে এসেছে মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মুসলিম রোহিঙ্গা জঙ্গি সন্ত্রাসীদের দ্বারা মার খেয়ে। জনশ্রুতিতে আরো শোনা যাচ্ছে, রাখাইন রাজ্যের মুসলিম পুরুষরা তাদের (মা, বোন, স্ত্রীদের) নারীদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়ে ওখানে মায়ানমারের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষনা করেছে। রাখাইন রাজ্যের মুসলিম রোহিঙ্গা জঙ্গি সন্ত্রাসীদের রোষের মুখে বলি হয়েছে এই পর্যন্ত ৮৫ জন হিন্দু। এই রাখাইন রাজ্যে হিন্দুদের উপর এই মুসলিম রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা ক্ষুব্ধ হওয়ার একমাত্র কারণ হল, কেন মায়ানমারের সামরিক বাহিনীরা হিন্দুদের উপর নির্যাতন করছেন না? তাই রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম সন্ত্রাসীরা হিন্দুদের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানে তাদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়। ৮৫ জন হিন্দুদের বিনা কারণে নির্বিচারে হত্যা করে জিহাদী মুসলিম রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা! আজ আমি ইউটিউবের একটি ভিডিওতে মুসলিম রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন দেখে বিকেলে অঝোরে কেঁদে একটা ভিডিও শেয়ার দিয়েছিলাম। সেখানে লিখেছিলাম-- "মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর এই বর্বর নির্যাতন এটা অন্যায়! এই বর্বরতা মানবতার লঙ্গন! এটা অমানবিক! এটা মানবিক অবক্ষয়! আমি আর দেখতে পারছি না। অঝোরে কাঁদছি...." নির্যাতনের শিকার হয়ে মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এইসব হিন্দু নারী ও শিশুদের সাথে সবচেয়ে নির্মম আচরণটি কে করেছে জানেন? বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। যেটুকু তথ্য পেয়েছি, জানা গেছে মায়ানমার থেকে এই পর্যন্ত পালিয়ে এসেছে ৪৮৬ জন হিন্দু নারী ও শিশু। এদেরকে শরণার্থী শিবিরে জায়গা দেয়নি বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড বিজিবি। মনে আছে আপনাদের? আজ থেকে ৪৬ বছর আগে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদাররা যখন এদেশের বাঙালীর উপর নির্বিচারে হত্যা-ধর্ষন চালাচ্ছিল, তখন ইণ্ডিয়া এই যুদ্ধাহত দেশটির কতজন শরনার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল? ১ কোটি না? হ্যাঁ সেই সময় এক কোটি বাঙালীকে আশ্রয় দিয়েছিলো ইন্ডিয়া। শুধু তা নয় তাদের সবার খাবার ও বাসস্থানেরও ব্যবস্থা করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী। যেখানে অধিকাংশ শরণার্থী ছিল মুসলমান। আরেকটা অবাক করার মতো বিষয় কি জানেন? যেসব শরণার্থী মুসলিম রোহিঙ্গারা একদিন আগেও বাংলাদেশের টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে, তারাও মায়ানমার থেকে আসা এইসব দলিত হিন্দুদের শরণার্থী শিবিরে ঢুকতে দেয়নি। কেন জানেন? শুধু তারা হিন্দু বলে, মুসলিম নয় বলে। আচ্ছা এইসব হিন্দুরা যাবে কোথায়? বিজিবি যদি জায়গা না দেয়, আবার মুসলিম রোহিঙ্গারাও যদি রুষ্ট হয়ে তাদের শরণার্থী শিবিরে ঢুকতে না দেয়, তারা যাবেটা কোথায়? একটু কল্পনা করে দেখুন তো, তাদের জীবন যাপন কতটুকু সংকটে পড়বে? মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা হিন্দুদের মরণাপন্ন জীবন দেখে এবার হিন্দুরা আর চুপ করে বসে থাকেনি। আমার চেনা জানার মধ্যে কিছু (প্রায় ২০জন) হিন্দু ব্যবসায়ীগন এর মধ্যে উদ্যেগ নিয়ে ফেলেছে। আজকে সিদ্ধান্ত নিয়ে এর ওর কাছ থেকে মৌখিক সহায়তা চেয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এক লাখ টাকা তুলে জোগাড় করে ফেলেছে। আজকে সন্ধ্যার মধ্যে তারা বাজারে গিয়ে চাল, ডাল, মিষ্টি কুমড়া, আলু, মেয়েদের জন্য বস্ত্র। আর যাদের পুরোনো কাপড় চোপড় আছে এনে জোগাড় করে ফেলেছে। আজ বিকেলের দিকে তাদের সাথে আমিও শরিক হয়েছি। আমিও একে ওকে ফোন করে তাদের হাতে ১০-১২ হাজার টাকা অনুদান পেতে সহায়তা করি। যাই হোক আমরা আগামীকাল সকালে ওদের জন্য ট্রাক ভরে ত্রান নিয়ে যাচ্ছি। ও হ্যাঁ, আরেকটি কথা বলাই হয়নি, মায়ানমার থেকে নির্যাতিত হয়ে আসা হিন্দুরা এর মধ্যে কুতুপালং-এর মন্দিরে মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানকার পরিস্থিতি কেমন আগামীকাল ঘুরে এসে জানাব। যদি প্রয়োজন হয় এই অনলাইনে আমি তাদের জন্য সাহায্য চাইবো। আশা করি নিপীড়িত দুস্থ উদ্ভাস্তু মানুষের পক্ষে আমার মানবতাবাদী বন্ধুরা সাহায্যার্থে এগিয়ে আসবেন। আপনাদের কাছে এটাই আমার একমাত্র অনুরোধ! এই বিষয়ে আমার আরো একটি ফেসবুকের পোস্ট আপনাদের সুবিধার জন্য এই লেখাটাও এখানে দিয়ে দিচ্ছি। মায়ামার থেকে পালিয়ে আসা যেসব হিন্দু শরণার্থীরা বাংলাদেশ এসে বিজিবি ও রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে জায়গা পায়নি, আমরা এই দুস্থ, বিপন্ন,দলিত নীপিড়িত মানুষগুলোর জন্য আজ সকালে বাজার করে এই মাত্র রওনা দিচ্ছি। এক রাতের মধ্যে প্রায় লক্ষাধিক চাঁদা উঠে গেছে। আমরা তাদের জন্য নিলাম---- চাল, ডাল, ডিম, আলু, তেল, মিষ্টি কুমড়া, চিড়ে, বিস্টুক, কাপড়-চোপড়, রান্নার উপকরণ মসশাপাতি.... সব মিলিয়ে এক লাখ টাকার বেশি। এর মধ্যে আজ সকালেও অনেক মানুষ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আগে গিয়ে মানুষগুলোর অবস্থান দেখি, যদি প্রয়োজন হয় আমি দুহাত পেতে আমার প্রিয় মানববাদী বন্ধুদের কাছে এই অনলাইন থেকে সাহায্য চাইব। আশা করি আপনারা এগিয়ে আসবেন

আরো একটি ফেসবুক পোস্ট এই লেখাটিও হুবুহু তুলে দিচ্ছি আপনাদের সুবিধার জন্য। আজ সকালে আমরা ত্রান নিয়ে টেকনাফ এলাকায় কুতুপালং গিয়েছিলাম। আমি এই পর্যন্ত ১০টির ও বেশি ভিডিও নিজের মোবাইলে ধারণ করেছি। সাক্ষাতকার নিয়েছি। না মেয়েটি স্বামী সহ গোটা পরিবারকে মায়ানমারে সামরিক বাহিনীরা হত্যা করেনি। হত্যা করেছে মুখোশ পরা রোহিঙ্গা জঙ্গি সন্ত্রাসীরা। এই মেয়েটির পরিবারের সবাইকে হত্যা করেছে। সেখানখার রোহিঙ্গা জঙ্গি সন্ত্রাসীরা। আমি আরো অনেক গুরুত্বপুর্ণ ভিডিও নিয়ে হাজির হচ্ছি.. জাস্ট ওয়েট এন্ড সী। এখানে একটি ভিডিও দেখতে পারেন।

এই বিষয়ে আমার আরো একটি ফেসবুক পোষ্ট ফেসবুক পোস্ট আপনাদের সুবিধার জন্য পোস্টটি হুবুহু তুলে দিচ্ছি। আমি মানুষের জীবনগুলো দেখে হতভম্ব হয়ে গেলাম। আমি যেই যেই হত্যার বর্ণনাগুলো শুনলাম। তাতে আমি বার বার বাকরুদ্ধ হয়েছি। কিভাবে এখান থেকে গিয়ে ট্রেনিংপপ্রাপ্ত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা সেখানকার ফকির বাজার এলাকার শতাধিক হিন্দুদের গলা কেটে কেটে হত্যা করেছে। কিভাবে তাদের স্বর্ণালংকার সহ সর্বস্ব লুট করেছে। শুধু তাই নয়, এই হিন্দু মেয়েদের মুসলমান হতে বাধ্য করেছে ঐ মুখোশ পরা সন্ত্রাসীরা। আমি তাদের বার বার জিজ্ঞাসা করেছি, তারা মায়ানমার সেনাবাহিনী দ্বারা আক্রান্ত কিনা? তারা বলল, না আমাদের পাড়া প্রতিবেশি মুসলমানরাই মুখোশ বেধে এসে আমাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়। সবচেয়ে আশ্চর্য, রাজকুমারি নামে এক কিশোরীর কাছ থেকে শুনেছি, তার পরিবারের ৭ জনকে (সব মানুষকে) হত্যা করার আগে মুখোশ পরা মানুষগুলো বলেছিল, "-আমরা কোরবানি করিনা ৩ বছর। তোর মা বাবা, পুরো পরিবারকেকে জবাই করে কোরবানি দেব।" হত্যা করেছে। আমরা প্রায় দুপুর ২টার দিকে কুতুপালং-এ পৌঁছেছি। ১ ছবিতে আমাদের ত্রানের ট্রাক কুতুপালংয়ের ভিতরে ঢুকছে। ৪ নম্বর ছবিতে ওদের জন্য রান্না চলছে। আমরা ভিতরে ঢুকছি, এ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্তরা বেরিয়ে আসছেন। সেখানকার দলিত মানুষগুলোর সাথে অনেক অনেক্ষন কথা বলেছি। আমি আর গুছিয়ে লিখতে পারছি না। আমার কাছে অনেক ভিডিও আছে। সেগুলো পরে Asad Noor এর সাথে আলোচনা করে ইউটিউবে ছাড়বো। আমরা যা টাকা পয়সা, খাবার দিয়ে এসেছি এতে এই দলিতদের ১০ দিন চলে যাবে। আমরা এই দলিত মানুষগুলোর জন্য আরো পরিকল্পনা করেছি। অনেকে অনলাইনে আমাকে সাহা্য্য করার ইচ্ছে পোষন করেছেন। তাদেরকে অশেষ ধন্যবাদ। লাগলে আমি চেয়ে নেব।

আরো একটি লেখা

এই মেয়েটির নাম সুশীলা ধর। কোলে তার তিন মাসের বাচ্চা। বিয়ে হয়েছে দেড় বছর। তার স্বামী ছিল সীমান্ত ধর। সীমান্ত বার্মার ফকির বাজার এলাকায় ব্যবসা করতো। মুখোশ পড়া জঙ্গিরা সুশীলার স্বামীকে হাত পা বেঁধে তার চোখের সামনে আল্লাহু আকবর বলে নির্মমভাবে হত্যা করে। সুশীলার সাথে কথা বলে জেনেছি, সেই তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য আলমারি থেকে তার সমস্ত (১০-১২ ভরি স্বর্ণালংকার) গহনা-ঘাটি এনে দেয়। তার সমস্ত জমিজমার দলিল মুখোশ পড়া মানুষগুলোর পায়ের তলে এনে দেয়। তবুও সুশীলা তার স্বামীকে বাঁচাতে পারেনি। তাকে চোখের সামনে দেখতে হল তার স্বামীর মৃত্যু। তার বাচ্চার গায়ে জ্বর। তাকে চিকিৎসা নেয়ার জন্য আমরা ১ হাজার টাকা প্রদান করে মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে দিয়ে আসি।

এই লিংকে দেখুন

লিখেছেন-অপ্রিয় কথা।
সম্পাদনায়-শহীদুজ্জামান সরকার।

আগের পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট