এই ব্লগটি সন্ধান করুন

ইসলাম এবং দাসী


আমাদের বর্তমান সময়ে দাস-দাসীর চিন্তা কল্পনাও করতে পারিনা , এ নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্ন আসে আমরা বর্তমান সময়ে নৈতিক ভাবে যথেষ্ট ভালো অবস্থানে রয়েছি ১০০ বছর আগের চেয়ে । সে ক্ষেত্রে ১৪০০ বছর আগের নৈতিকতার সাথে কোনো মিল পাওয়া যাবেনা এটাই স্বাভাবিক । যেহেতু আমাদের সমাজ বা আমাদের বর্তমান সভ্যতার সাথে আগের সভ্য সমাজের মিল পাওয়া সম্ভব নয় সেজন্যই আমাদের কাছে আগের রীতি গুলো বর্বর লাগা অস্বাভাবিক নয় । সেক্ষেত্রে পুরোনো রীতি গুলোকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা চালানো খানিকটা চতুরতা । ধর্ম এ ব্যাপারে প্রায়ই পথের কাটা হয়ে দাঁড়ায় আর সেজন্য খানিকটা হলেও বর্বর culture গুলোকে আমরা বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করি । কেউ যদি সতীদাহ প্রথার গুণগান গাওয়ার চেষ্টা করে তখন নিশ্চই আপনার ভুরু কুচকাবে ??
যাই হোক ইসলাম যৌন দাসী নিয়ে কি বলে সে সম্পর্কে কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করি ।



১.ইসলামে যৌন দাসী কি হালাল :
পবিত্র কোরানে সু-স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যৌনদাসী সম্পর্কে , মোট ১৫ বার কোরানে উল্লেখ্য রয়েছে যৌনদাসী বিষয়ে । যে কোনো পুরুষকে তার যৌনাঙ্গ হেফাজত করতে বলা হয়েছে স্ত্রী এবং যৌনদাসী ব্যতীত । অর্থাৎ কেউ চাইলেই তার স্ত্রীর সাথে এবং দাসীর সাথে যৌন কাজে লিপ্ত হতে পারবে , সেক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই । বিবাহের ক্ষেত্রে একই সময়ে ৪ জন রাখার নিয়ম থাকলেও যৌন দাসী রাখা যাবে অগণিত ।ইসলামে দুই ভাবে যৌনদাসী রাখা যাবে এক : কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করে দুই কেনা বেচার মাধ্যমে, ইসলামে নিষিদ্ধ হচ্ছে কোন মুসলমান মুক্ত ব্যক্তিকে দাস বা দাসী বানানো যাবেনা , অর্থাৎ মুসলামন না হলে যেকোনো কেউ আপনার এলাকা দখল করে স্ত্রী কন্যাকে দাসী বানাতে পারবে !!



নিচে হালকা একটু রেফারেন্স দিলাম এ ব্যাপারে সবগুলো দিতে গেলে স্ট্যাটাসে কুলাবে না :
And those who guard their private parts
Except from their wives or those their right hands possess, for indeed, they are not to be blamed –

Surah Maarij 70:29-30
Also this is repeated in Surah Muminuun:

وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ
إِلَّا عَلَىٰ أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ
And they who guard their private parts
Except from their wives or those their right hands possess, for indeed, they will not be blamed –

(Quran 23:5-6)
Ibn Kathir and Al-Jalalayn in their tafseers say that “right hands possess” means slave girls

IslamQA in this fatwa explains that Intercourse with a slave girl is not considered Adultery

Allaah has permitted intimacy with a slave woman if the man owns her. This is not regarded as এডাল্টারী “

২.যৌন দাসীর কি অনুমতি লাগবে :
এটি একটি হাস্যকর প্রশ্ন !!? খানিকটা ধর্ষণ করতে অনুমতি লাগবে কি না এমন । ইসলামের কোথাও দাসীর অনুমতির কথা এমনকি স্ত্রীর অনুমতির কথা পাওয়া যাবেনা । পুরুষের সম্পূর্ণরূপে অধিকার রয়েছে যখন খুশি তখন নিজের যৌন তৃপ্তি মেটানোর , সেক্ষেত্রে স্ত্রীর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে পিরিয়ড থাকলে মানা করতে পারবে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে দাসী বন্দি হলে সে যদি বিবাহিত হয় তবে তার মাসিক পর্যম্ত অপেক্ষা করতে তার কারণ যার সাথে সেক্স করবে পরবর্তীতে ঐ দাসী যেন এই দাবি না করতে পারে যে ঐ সন্তান তার মালিকের । যৌন দাসীর অনুমতি তো বহু পরের কথা স্ত্রী কখনোই স্বামীকে মানা করতে পারবে না সেক্স করার ক্ষেত্রে । এমনকি স্বয়ং আল্লাহ লানত দিতে থাকেন যতক্ষণ পর্যন্ত না স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সেক্স করছে ।


এমনকি স্ত্রীর যদি মাসিক চলে তখনও স্বামীর অধিকার রয়েছে উপরের অংশ দিয়ে যৌন তৃপ্তি মেটানোর এ বিষয়ে নিচে কিছু হাদিস দেই :

Sayyiduna Abu Huraira (Allah be pleased with him) narrates that the Messenger of Allah (Allah bless him & give him peace) said: “When a man calls his wife for sexual intimacy and she refuses him, thus he spends the night in anger, the angels curse her until morning.” (Sahih al-Bukhari & Sahih Muslim, See: Riyad al-Salihin, no. 281)

Sayyiduna Talq ibn Ali (Allah be pleased with him) narrates that the Messenger of Allah (Allah bless him & give him peace) said: “When a man calls his wife for sexual intimacy, she should come, even if she is (busy) in the cooking area.” (Sunan al-Tirmidhi & Sunan al-Nasa’i)

Sayyiduna Abu Huraira (Allah be pleased with him) narrates that the Messenger of Allah (Allah bless him & give him peace) said: “By the one in whose hands is my life, there is not a man who calls his wife for sexual intimacy and she refuses him except that Allah becomes angry with her until her husband is pleased with her.” (Sahih Muslim, No. 1436)

“This Hadith indicates that it is unlawful (haram) for the wife to refuse her husband for sexual intimacy without a valid reason. Menstruation will not be considered a valid reason, for the husband has a right to enjoy her from above the garment (on top of cloths).” (Sharh Sahih Muslim, P. 1084)

এছাড়া কারো বাপ বা স্বামীকে হত্যার রাতেই বিছানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তারও হাদিস রয়েছে , Rayhana bint Zayd ibn Amr এর স্বামীকে হত্যা করা হয় ৬০০ মতান্তরে ৯০০ ইহুদিদের সাথে , ঐ রাতেই তাকে মোহাম্মদ  সা এর কাছে আনা হয় এবং তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয় , সে বিয়ে না করে মোহাম্মদ সা এর যৌন দাসী হিসেবে তার জীবন অতিবাহিত করে । এমনকি মারিয়া যে কিনা মোহাম্মদ সা এর পুত্র সন্তান ইব্রাহিমের মা সেও যৌনদাসী ছিল যে কিনা মিশরের এক রাজার থেকে উপহার হিসাবে মহম্মদ সা এর কাছে এসেছিলো।

এমনকি সাহাবীরা যখন যুদ্ধ বন্দিনীদের সাথে সেক্স করতে চেয়েছেন কিন্তু প্রেগনেন্ট করতে চাননি কারণ পরবর্তীতে বিক্রি করতে গিয়ে কম টাকা পাবেন বলে সেক্ষেত্রে তারা মোহাম্মদ সা এর সাহায্য চেয়েছেন তখন তিনি তাদেরকে বিনা দ্বিধায় করতে বলেন : নিম্নে হাদিস :

Book 008, Number 3371: Abu Sirma said to Abu Sa'id al Khadri (Allah he pleased with him): 0 Abu Sa'id, did you hear Allah's Messenger (may peace be upon him) mentioning al-'azl? He said: Yes, and added: We went out with Allah's Messenger (may peace be upon him) on the expedition to the Bi'l-Mustaliq and took captive some excellent Arab women; and we desired them, for we were suffering from the absence of our wives, (but at the same time) we also desired ransom for them. So we decided to have sexual intercourse with them but by observing 'azl (Withdrawing the male sexual organ before emission of semen to avoid-conception). But we said: We are doing an act whereas Allah's Messenger is amongst us; why not ask him? So we asked Allah's Mes- senger (may peace be upon him), and he said: It does not matter if you do not do it, for every soul that is to be born up to the Day of Resurrection will be born.
উপরের হাদিস থেকে আরেকটি বিষয় স্পষ্ট যে মুসলমানরা শুধুমাত্র যুদ্ধে বন্দি করতো না বরং তাদের বিক্রিও করে দিতো বাজারে । বর্তমান যুদ্ধ বন্দির সাথে যখন ইসলামের দাসীদের তুলনা করা হয় তখন অট্টহাসি ছাড়া উপায় থাকে না । প্রসঙ্গত বর্তমানে যুদ্ধ বন্দিকে বাজারে বিক্রি করা যাবেনা অথবা কাউকে ধর্ষণ করা যাবেনা । সেক্ষেত্রে ইসলামের বর্বরতাকে তুলনা করা নিত্তান্তই অসৎ কর্ম ,
এতো কিছুর পর যদি দাসীর অনুমতি লাগবে কি না এমন প্রশ্ন করা হয় তখন তা উপহাসই মনে হয় !!!!


3.দাস দাসীর সাথে সৎ ব্যবহার :
প্রায়ই ইসলাম ধর্মে দাস প্রথা সমর্থন করতে গিয়ে বলা হয় যে ইসলাম দাস দাসীকে সম্মান দিয়েছে , তাদেরকে অধিকার দিয়েছে । আসলে অধিকার কাকে বলে সে নিয়ে নিশ্চই আমার আপনার বা অন্য কারো মতান্তর থাকতে পারে । যখন বলা হয় ইসলাম অধিকার দিয়েছে তখন আমাদের চোখে ভাসে একসাথে বসে মালিক দাস খাবার খাচ্ছে , একসাথে চলাফেরা করছে এমন কিছু । প্রথম একটা হাদিসের কিছু অংশ দিয়েই শুরু করি :
আবু dawad  ১:১৪২
I (the narrator Laqit) then said: Messenger of Allah, I have a wife who has something (wrong) in her tongue, i.e. she is insolent. He said: Then divorce her. I said: Messenger of Allah, she had company with me and I have children from her. He said: Then ask her (to obey you). If there is something good in her, she will do so (obey); and do not beat your wife as you beat your slave-girl.

উপরের হাদিসে দাসীর অধিকার দেয়া হয়েছে , বলা হয়েছে স্ত্রীকে ঐভাবে মেরো না যেভাবে তোমার দাসীকে মারো । এইখানে কোন অধিকার প্রতিষ্টা পাচ্ছে তা বুঝা মুশকিল !!!

Sunan Abi Dawud 2155
In-book reference  : Book 12, Hadith 110
English translation  : Book 11, Hadith ২১৫০

উপরের রেফারেন্স কৃত হাদিসে স্পষ্ট লেখা রয়েছে যুদ্ধ বন্দিদের যখন স্বামী সহ ধরা হয় তখন তাদেরকে মাসিক পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলা হয় সেক্স করার জন্য , অর্থাৎ ইসলামের সৈনিকরা ঐসব স্বামীদের রেখেই তাদের স্ত্রীদের সাথে যৌনমিলন করতো ??? তারপরও বলা হবে ইসলামে অধিকার দেয়া হয়েছে ??

Abu Dawud Book 004, Hadith Number 1814.

Where is your camel? He replied: I lost it last night. AbuBakr said: There was only one camel, even that you have lost. He then began to beat him while the Apostle of Allah (pbuh) was smiling and saying: Look at this man who is in the sacred state (putting on ihram), what is he doing?

উপরের হাদিসে উঠ হারানোর কারণে মোহাম্মদ সা এর সামনে যখন দাসকে পেটানো হচ্ছিলো তখন উনি হেসে বলসিলেন দেখো দেখি কান্ড কারখানা এই লোক করছেটা কি !!!!

এছাড়া আলী দাসী পেটানো থেকে শুরু করে অনেক গুলোই হাদিস রয়েছে যেখানে মানুষকে আটক করে কিভাবে তার সাথে সেক্স করা যাবে সে সম্পর্কে বলা হয়েছে ।

4.দাস দাসী মুক্ত করার ক্ষেত্রে এবং যৌন দাসীর যৌন তৃপ্তি :

ইসলামের প্রাথমিক দিকে দাসকে মুক্ত করার প্রচলনের প্রধান কারণ ছিল শক্তি বাড়ানো , তারপরও ইসলামের কোথাও কোনো আইন নেই যে একজন দাস বা দাসী মুসলমান হলে তাকে মুক্ত করে দিতে হবে । বরং মুসলমান দাস হলে তার কাজের জন্য পরকালে পুরুষ্কার পাবে সেটি বলা আছে ।


“যৌন দাসীর যৌন তৃপ্তি মেটানোর জন্য মালিক সেক্স করে “ দাসী প্রথার এই যুক্তিটি আমাকে সবচেয়ে বেশি রাগায় । আমার কাছে শুধু একদল লালা ঝরানো কুকুরের পাল চোখের সামনে ভাসে যখন কেউ এই কথাটি বলে । দাসীর যৌন তৃপ্তি মেটানোর জন্য বেচারা মালিক সেক্স করে !!!আহঃ কি মহান ছিলেন আমাদের সেই পূর্ব পুরুষরা যারা দাসীদের সেক্স এর চিন্তায় এতোই বিচলিত ছিলেন !!!? তা দাসদের সেক্স মেটানোর জন্য নিশ্চই ঐসব মালিকের মা মেয়ে বা স্ত্রীদের দিয়ে সেক্স মেটানোর চিন্তা করেছেন সেই মহান ব্যক্তিরা ?? আয়েশার তো অনেকগুলো দাস ছিল নিশ্চই অয়েশাও তার দাসদের কষ্ট মেটানোর জন্য সেক্স করেছেন ??? সবচেয়ে বড় কথা যে নারীর পিতা , স্বামীকে হত্যার পর বিছানায় নিয়ে যাওয়া হয় ঐ রাতে সে নারীর যৌন তৃপ্তি মেটানোর জন্য কেউ সেক্স করছে এরকম বিকৃত চিন্তা ধর্ম ছাড়া কারো মস্তিষ্কে ঢুকতে পারে সেটা চিন্তাতীত । একজন মানুষের এলাকা দখল করে কেউ তার যৌন তৃপ্তি মেটাচ্ছে এরকম চিন্তা মাথায় ঢুকে কিভাবে ?? একজন মানুষকে তার স্বামী রেখে অন্য একজন বা কয়েকজনের সাথে সেক্স করতে হচ্ছে এবং কিছুদিন পর অন্য কারো কাছে বিক্রি হয়ে যাবে এরকম চিন্তা করেই মনে হয় অর্গাজম শুরু হয়ে যেত ঐ নারীর !!!!!?? এরকমই কি চিন্তা ভাবনা ??


সর্বশেষ :

দাস দাসী প্রথা যুগে যুগেই ছিল , ইসলামেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি , সমস্যা হচ্ছে এগুলো আমাদের সমাজের সাথে এখন আর মিলবে না । এবং সেটাই স্বাভাবিক অতএব এই নোংরা বিষয়টি ইসলামের অংশ না সেটা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবেনা । ইসলাম যুদ্ধ করতে এবং বন্দি করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তখন , ইসলামের আক্রমণ গুলো ঘেটে দেখলে দেখা যায় প্রায় প্রত্যেকটি আক্রমণ গুলো প্রথমেই মুসলমানরা করেছে , তারা বিভিন্ন অঞ্চলে আক্রমণ করে তরবারির মাধ্যমে নিজেদের জায়গা এবং ক্ষমতা বাড়িয়েছে ।

বিশ্বাস হচ্ছেনা ??
এমন দুই একটা যুদ্ধের নাম বলেন যেখানে মুসলমানরা অন্যের অঞ্চলে গিয়ে যুদ্ধ শুরু করেনি ?? তো এইসব লুট আর ডাকাতির বলী হয়েছে সাধারণ নারী শিশুরা , প্রত্যেক নারী তখন ধর্ষিত হয়েছে এমনকি অন্য কারো কাছে বিক্রির আগেও যেন সেক্স করে নেয়া যায় সেক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ দেয়া হয়েছে । আজকে ISIS যা করছে তার সবকিছুই মোহাম্মদ সা এর সময় হয়েছে । অতএব মডারেট হয়ে যতই নাক সিঁটকাই না কেন এগুলো হচ্ছে ইসলামেরই অংশ , কিন্তু নিজের বিবেকের কারণেই হোক অথবা অন্যের কাছে ভালো দেখানোর জন্য ইসলামের এই অন্ধকার অংশকে নরম  করার অপচেষ্টা চালু থাকে সবসময়ই ।সর্বশেষ কথা ইসলামে দাস দাসীকে এমন কোনো সুযোগ সুবিধা বা অধিকার দেয়নি যা আমরা আজকের যুগে অধিকার হিসেবে জানবো ।১৪০০ বছর আগের ইসলামকে ১৪০০ বছর আগে আধুনিক মনে হলেও এটি যে সর্বকালের জন্য নয় তা কোরান হাদিস ঘাটলেই পাওয়া যায় কেননা  ইসলামের চেয়ে লিঙ্কন বেশি মানবতাবাদী ছিলেন সেটি অনস্বীকার্য ।
সুজন করিম
লিখেছেন:সুজন করিম।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ