আমার ১৬তম প্রশ্ন..
ক) একজন ধর্ম প্রচারকের লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে বলা কথাগুলোকে কি আমরা কখনো যাচাই করে দেখি?
খ) একজন ধর্ম প্রচারক যদি জেনেশুনে জনতার সাথে মিথ্যা কথা বলেন উনার সাথে কি করা উচিত?
ভিডিওটির প্রথম দুই মিনিটে উনি নাসার Space Center Houston ঘুরে দেখে উনার কিছু অভিজ্ঞতার কথা বর্ননা দিয়েছেন।
উনার বর্ননা থেকে আমি পাঁচটা পয়েন্ট ভুল জানতে পেরেছি। যদি আমার জানা ভুল হয় আপনারা শুধরে দিবেন। কসম, খুশিমনে মেনে নিবো।
আর যদি ঐ আলেমের জেনেশুনে বলা কথাগুলো ভুল এবং মিথ্যা হয় উনার মতো মানুষদের কি করা উচিত তার দায়িত্ব আপনাদের উপর রইলো।
1.উনি Houston কে স্টেট/ অঙ্গরাজ্য বলেছে এটা একটা ভুল কথা। Houston হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের Texas স্টেট/ অঙ্গরাজ্যের একটা শহর। যাইহোক ধরে নিলাম এটা বলার ভুল। আমাদেরও এরকম হয়ে থাকে।
2.উনি বলেছেন যে "গাড়ীতে" করে চাঁদে নীল আর্মষ্ট্রং নেমেছিলেন সেটা নাকি Houston এ আছে। কিন্তু আমি যেটা জেনেছি-
Apollo11 নামক spaceflight এ করে নীল আর্মষ্ট্রং চাঁদে সফর করেছিলেন। এবং Apollo 11 এর lunar module এর নাম হচ্ছে Eagle - যেটা দিয়ে উনি চাঁদে নেমেছেন। চাঁদে কাজ শেষে ওটা দিয়ে কমান্ড মডিউলে উঠে eagle কে ওখানেই ফেলে দিয়ে এসেছিলেন যেটা পরে চাঁদে ক্র্যাশ করেছে বলে ধারণা করা হয়।
যেটা দিয়ে পৃথিবীতে ফেরত এসেছে সেটার নাম Columbia এবং সেটা কোনোদিন চাঁদে নামে নাই এবং ওটা ১৯৭১ সাল থেকে Smithsonian Institute Museum, Washington DC তে আছে। যদিও exhibition এ নাই এখন।
তাহলে জনাব আলেম সাহেব Houston এ কোন চান্দের গাড়ী দেখতে পেয়েছেন আমার প্রশ্ন।
3.বিশিষ্ট আলেম সাহেব বলেছেন নীল আর্মস্ট্রং এর "চাঁদের পোশাক" টা নাকি Space Center Houston এ আছে এবং তিনি তা দেখেছেন।
কিন্তু নীল আর্মস্ট্রং এর পোষাকটিও( spacesuit) Houston এ নয় বরং ওয়াশিংটনের ডিসির Smithsonian Institute Museum এ আছে। এমন কি ওটা এখন ডিসপ্লে তে আছে, কেউ চাইলে দেখতে পারবে।
4.বিশ্রী একটা মিথ্যা কথা।
আলেম সাহেব বলেছেন Houston এ যে জায়গা থেকে নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে গিয়েছেন ঐ জায়গাটা উনি দেখেছেন।
কিন্তু নীল আর্মষ্ট্রং তো Houston থেকে নয় Apollo11 এ করে Florida/ফ্লোরিডা থেকে চাঁদে গিয়েছে। Florida যুক্তরাষ্টের অন্য একটু অঙ্গরাজ্য যা Houston থেকে শুধুমাত্র ১২০০মাইল দুরে।
তাহলে আলেম সাহেক কেমনে কি দেখলেন?
কি দেখলেন আর মানুষকে কি বুঝালেন?
মিথ্যা কথা বলার একটা সীমা নির্ধারণ করে দেওয়ার সময় এসে গেছে।
5.এবং এটাই সবচেয়ে জঘন্য মিথ্যা কথা।
উনি বলেছেন নীল আর্মষ্ট্রং নাকি চাঁদে গিয়ে আযানের শব্দ শুনেছেন। এবং সেটা একটা বিশাল তামার প্লেটে নাসার Space Center Houston এ লিখা ছিলো।
কিন্তু এরকম কোন আওয়াজের কথা নীল আর্মস্ট্রং কখনো কোথাও উল্লেখ করেন নি কারন এটা চন্দ্রপৃষ্ঠে সম্ভব না। তাই উনি যদি আওয়াজ ই না শুনেন তাহলে ঐ তামার প্লেট কোথা থেকে আসলো ব্যাপারটা সত্যি বেশ রহস্যময়।
আলেম সাহেব কথাগুলো বলার সময় হয়তো ভাবেন নি আমাদের মতো দুই পয়সার কমজ্ঞানী মানুষজন একসময় উনার মুল্যবান বক্তব্যগুলোর পোষ্টমর্টামে নামবে।
যাইহোক এই ধরনের মিথ্যা কথা বলার পরও এক শ্রেনীর মানুষ উক্ত আলেমদের অন্ধের মতো অনুসরণ করেন। করুক যার মন চায়, আমার সমবেদনা দেওয়া ব্যতীত আর কিছু করার নেই।
শুধু এতটুকু বলবো যে কোন বক্তা( পাবলিক ফিগার) যখন কিছু বলবে মাঝেমাঝে ওগুলো একটু যাচাই করে দেখবেন। মিথ্যা কথা এবং মিথ্যুক মানুষককে গেলার কোন মানে হয়না।
ও হ্যাঁ আরেকজন আলেম/ স্কলার তো এক অবিশ্বাস্য, অসাধারণ তথ্য দিয়ে ধন্য করেছেন পুরো মানবজাতিকে। পৃথিবীতে এটাই সবচেয়ে বৃহ্ৎ আবিস্কার-
পৃথিবীতে সাতটি মহাদেশের বাইরেও ‘এন্টারকটিক’ নামক একটি মহাদেশ আছে।
আমার ১৭তম প্রশ্ন.....
ক) বাংলাদেশে যদি শরীয়া আইন কায়েম থাকতো তাহলে একজন নারী কি কখনো প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন কিংবা হতে দিতো?
খ) শরীয়া আইনে কি একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে প্রধানমন্ত্রী/ প্রেসিডিন্ট বানানো যাবে?
খ) শরীয়া আইনে কি একজন অমুসলিমকে প্রেসিডেন্ট/ প্রধানমন্ত্রী বানাতে দিবে?
বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
দুজন নারী দীর্ঘ সময় এই দেশকে পরিচালনা করেছেন।
কিন্তু এই দেশে যদি শরীয়া আইন থাকতো কখনো কি উনাদেরকে কিংবা যে কোন নারীকে প্রধানমন্ত্রী হতে দিতো? না দিতো না। কারন নারী নেতৃত্ব যে হারাম।
নারীর হাজার ক্ষমতা থাকলেও কখনো কোন কিছুতে নেতা হতে পারবেনা।
যদিও হেফাজত ইসলাম দলটি তাদের নেতা আহমেদ শফী হুজুরের নেতৃত্বে শরীয়া আইন ভেঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানে একজন নারীর নেতৃত্ব মেনে নিয়েছেন।
( অনেক অনেক ধন্যবাদ হুজুর, ইউ আর ভেরী মিষ্টি! জাস্ট লাইক মধু! )
এবং মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া মানে আরেক নারীর নেতৃত্ব মেনে নিয়েছিলেন। ওয়াও!
( হি ইজ মিষ্টি too! জাস্ট লাইক লজেন্স!)
তবু অলিগলির অকামা হুজুরেরা চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে বলবেন শফী আর সাঈদী কি ইসলামের মাপকাঠি নাকি।
ইসলাম চলে কোরান এবং হাদীসে।
ইসলামিক শরীয়া আইনে নারী নেতৃত্ব পুরোপুরি হারাম।
হোক না একজন নারী যতই মেধাবী এবং যোগ্য।
নারীরা তো অক্ষম, অযোগ্য বুঝলাম কিন্তু দেশ পরিচালনার ১০০% ট্যালেন্ট থাকলেও যতদুর জেনেছি একজন অমুসলিম পুরুষকেও শরীয়া আইনে নেতা মেনে নেওয়া হবেনা।
আর তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা তো মানুষ ই না।
স্বয়ং হুজুরেরাই তাদের হিজরা বলে গালি দেয়।
তাই I will rather die.
But আমার দেশে শরীয়া আইন never চাই!
Period!
আমার ১৮তম প্রশ্ন......
ক) একজন বিবাহিতা হিন্দু নারীকে শাঁখা, সিঁদুর এবং মঙ্গলসূত্র কেনো পরতে হয়?
খ) এই নিয়মগুলো কেনো এবং কখন থেকে শুরু হয়েছে?
গ) একজন বিবাহিত হিন্দু পুরুষকে কি বিয়ের চিহ্ন হিসেবে ওরকম কিছু পরতে হয়?
আমি যেই দেশে এখন বসবাস করছি সেই দেশে একজন ভারতীয় নারীর সাথে বাচ্চাকে পার্কে খেলতে নিতে গিয়ে বন্ধুত্ব হয়। আমার দেশ, ওর দেশসহ অনেক কিছু নিয়ে আমরা প্রায় গল্প করি।
যাইহোক একদিন দেখলাম ওর মন খুব খারাপ। হালকা করে জিজ্ঞাস করলাম কি হয়েছে। বললো গতকাল ভারত থেকে ওর শ্বশুর, শাশুড়ি বেড়াতে এসেছেন। এবং আজ বিকালে অফিস থেকে ফিরে এসে দেখে শাশুড়ি মুখ ফুলিয়ে বসে আছে।
ওর স্বামী বাসায় ফিরলে তার কাছে ভীষন রাগ করে উনি নালিশ দেয় আমার ফ্রেন্ডটা ঐদিন মাথায় সিঁদুর না দিয়ে অফিসে গেছে। বিদেশে এসে নাকি ধর্ম কর্মের মাথা খেয়েছে। আরো অনেক কটু কথা বলেছে।
আমার ফ্রেন্ডটার খুব মন খারাপ ছিলো তাই প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও জিজ্ঞাস করিনি সিঁদুর কেনো লাগাতে হয়?
কেনো এটা হিন্দু ধর্মের এতোটা গুরুত্বপূর্ন যে নারীকে ওটা না লাগালে কটু কথা শুনতে হয়?
বাংলাদেশও অনেক পরিচিত হিন্দু নারীকে বলতে শুনেছি শাঁখা, সিঁদুর বিবাহিতা নারীর চিহ্ন। তাহলে বিবাহিত পুরুষের চিহ্ন কি?
নাকি পুরুষদের কিছুই লাগেনা। উনারা রাজা মহারাজা!
আর ভারতীয় সিনেমাগুলোতে যা দেখেছি একজন নারীর জীবনের চেয়ে ঐ মঙ্গলসূত্র মনে হয় বেশী গুরুত্বপূর্ন। মঙ্গলসূত্র ছিড়ে যাওয়া মানে বিশাল অমঙ্গল হয়ে যাওয়া। কিন্তু কেনো?
প্রশ্নগুলোর উত্তর জানার অপেক্ষায় রইলাম।
আমার ১৯তম প্রশ্ন.....
ক) হিন্দুদের প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম কি?
খ) ঐ ধর্মগ্রন্থের প্রবর্তকের নাম কি?
হিন্দু ধর্ম নিয়ে যখনি কোন প্রশ্ন করি কিছু হিন্দু ভাই বোনেরা বেশ আক্রমনাত্নক ভাবে বলেন উনাদের প্রধান ধর্মগ্রন্থে ওসব কিছু লেখা নেই।
জানতে চাচ্ছি ঐ প্রধান ধর্মগ্রন্থ কোনটা।
কি লিখা আছে ঐ ধর্মগ্রন্থে?
আর ঐ ধর্মগ্রন্থ কোন দেবতা কিংবা প্রবর্তক লিখেছেন?
আমার ২০তম প্রশ্ন.....
ক) ধর্ম প্রচারের জন্য একজন শিক্ষিত আলেম কেনো মিথ্যা কথা বলেন?
খ) একজন শিক্ষিত আলেম যদি জেনেশুনে মিথ্যা কথা বলেন তাকে পরবর্তীতে বিশ্বাস করাটা কি ন্যায়সঙ্গত হবে?
মিজানুর রহমান আজহারী সাহেবকে আমি বেশ পছন্দ করি। অনেক পরিচ্ছন্ন কথা বলেন এবং বেশ ভদ্র উনি।
আমার শাশুড়ি তো উনার নিয়মিত শ্রোতা। এমনকি আমার আব্বাও। আজ উনার একটা ভিডিও ক্লিপ দেখলাম।
নীচের ভিডিওটিতে উনিও দেলোয়ার হোসেন সাঈদী সাহেবের মতো কিছু চমৎকার সত্যি কথা বলেছেন।
ভিডিওটির ৩.০০ - ৪.০০ মিনিট থেকে ৪টা পয়েন্ট তুলে ধরলাম।
1. আজহারী সাহেব বলেছেন নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে মিউজিক শুনেছেন। এবং পরে জানতে পারলেন ওটা আযান ছিলো। কিন্তু আযানে তো কোন মিউজিক থাকেনা তাহলে চাঁদে উনি কি মিউজিক শুনেছেন নাকি আযান?
2. চন্দ্রপৃষ্ঠে কোন শব্দ শোনা সম্ভব না। এবং এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। তাহলে নীল আর্মস্ট্রং কি করে চাঁদে শব্দ শুনলেন?
3.নীল আর্মস্ট্রং কোথায়, কখন বলেছেন কিংবা লিখেছেন উনি চাঁদে আযান শুনতে পেয়েছেন?
4. নীল আর্মস্ট্রং কি চাঁদের এমাথা থেকে ওমাথা পুরোটা ঘুরে দেখেছেন? তাহলে কি করে জানলেন মাঝখানে এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত এতো লম্বা ফাটল আছে?
উপরের পয়েন্টগুলো নিয়ে যদি কারো কাছে কোন যৌক্তিক উত্তর থাকে দয়া করে আমার সাথে শেয়ার করবেন। আমি আশা করি আজহারী সাহেব মিথ্যা বলেন নি।
আমার ২১তম প্রশ্ন.....
ক) হিন্দু ধর্মের প্রধান ভগবানের নাম কি?
খ) বেদ গ্রন্থের লেখক কে?
জানতে পারলাম হিন্দুদের মধ্যে কেউ নাকি ভগবান শিবের ভক্ত কেউ আবার ভগবান কৃষ্ণের।
উনাদের দুজনের মধ্যে প্রধান দেবতা আসলে কে?
কেই বা বেশী শক্তিশালী?
কোন দেবতাকে অনুসরন করলে কোন কোন সুযোগসুবিধা পাওয়া যায়?
এটাও জানতে পেরেছি বেদ হিন্দুদের সর্বোচ্চ ধর্মগ্রন্থ।
কিন্তু আমার আগের পোষ্টে কে একজন লিখলেন বেদ ঋষি মুনিরা মিলে লিখেছেন।
তাহলে মানুষের লিখা গ্রন্থ কি করে ধর্মগ্রন্থ হয়?
আর বেদ যদি কোন দেবতার লিখা হয় ঐ দেবতার নামটা জানতে চাই।
উত্তরগুলো হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে ভালো করে জানেন এরকম কোন হিন্দু ভাইবোন কিংবা অন্য ধর্মের ভাইবোনদের কাছ থেকেই শুধু জানতে চাচ্ছি।
আমার ২২তম প্রশ্ন....
প্রথম খন্ড।
ক) একজন নারীর( হ্যাঁ নারীর ) তার বাবা মায়ের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য কি কি?
গ) আমাদের দেশ এবং সমাজ একজন নারীকে তার বাবামায়ের প্রতি কর্তব্য পালনে কতোটা সহযোগিতা এবং সুযোগ দেয়?
অনুরোধ - লেখাটা পড়ার সময় একটু আপনার মা বাবার চেহারাটা কল্পনায় রাখবেন।
বেশ কয়েক বছর আগের কথা আমি একবার লোকাল প্লেনে আমার শহর থেকে আমার ভাইয়ের শহরে যাচ্ছিলাম। আমার সীটটা প্লেনের আইলে ছিলো। হঠ্যাৎ একজন বয়স্ক মহিলা এসে আমাকে বললেন উনি কি আইলের সীটটাতে বসতে পারেন? সবার মতো আমারও উইন্ডো সিট খুব প্রিয় তাই ছোট্ট করে হ্যাঁ বলেই জানালার সীটের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লাম।
মহিলা বসে একটু হাঁপাচ্ছিলো। আহারে এতো বয়স্ক একজন মহিলা( ৬৫- ৭০ তো হবেই) একা সফর করছে। নিশ্চয়ই ঘনঘন বাথরুমে যাওয়া লাগে তাই আইলে বসতে চাচ্ছিলো। পশ্চিমা সভ্যতাকে মনে মনে কয়েকটা গালি দিলাম। এরা বৃদ্ধ বয়সে কিভাবে বাবা মাকে এভাবে একা সফর করতে দেয়। ঐ মহিলার ছেলেমেয়েরাও নিশ্চিত উনার কোন খোঁজখবর রাখেনা কিংবা উনাকে কোন বৃদ্ধাশ্রমে ফেলে রেখেছে।
যাইহোক উনি পাশে বসার পর পরই দেখলাম এয়ার হোস্টেস এবং কেবিন ক্রুরা মিলে আরো অনেক বয়স্ক দুজন বৃদ্ধ এবং বৃদ্ধাকে ধরে ধরে এনে আমাদের পাশের সীটগুলোতে বসিয়ে দিলেন। হঠ্যাৎ আমার পাশের বয়স্ক মহিলা উঠে দাড়িয়ে ঐ বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সীট বেল্ট লাগিয়ে দিতে সাহায্য করলেন। দুজনের গায়ে পাতলা ব্ল্যাঙ্কেট বিছিয়ে দিয়ে আবার নিজের সীটে এসে বসে পড়লেন। পুরোটা ফ্লাইটেই উঠে উঠে তাদের কতো যত্ন করে এটা দিলেন ওটা দিলেন, গালে চুমু দিলেন। আর এজন্যই বোধহয় আইলের সীটে বসতে চেয়েছিলেন।
একটু পর দুএকটা কথা দিয়ে শুরু করে উনার সাথে রীতিমতো গল্প শুরু করলাম। জানলাম সাথের বয়স্ক দুজন উনার বাবা-মা এবং দুজনের ই বয়স ৯১বছর। উনারা ছুটিতে( Thanks Giving) উনাদের নাতি মানে এই মহিলার ছেলের শহরে বেড়াতে যাচ্ছে। উনার হাজবেন্ডের কি কাজ থাকায় দুদিন পরে যাবে । যাইহোক তখনকার আমি মনে মনে বললাম “ কাম নাই। নিজের শরীর নিয়ে চলতে পারেনা আবার বাপ মারে ছেঁচাতে ছেঁচাতে নিয়ে যাচ্ছে। ওরে! কেউ এগুলার জন্য এম্বুলেন্স ডাক।”
কেনোই বা বলবোনা আমার আম্মা থেকে শাশুরী আম্মা, চাচী থেকে মামী সবাইকে সারাটা জীবন দেখেছি এবং শুনেছি স্বামী নামক দেবতা, সন্তান এবং শ্বশুর বাড়ীর মানুষদের পিছনে খাটতে খাটতে শরীর ,মন সব ক্ষয় করে ফেলতে। বছরে দু চারবার বাপের বাড়ী বেড়াতে যাওয়ার সময় গাড়ীভর্তি ফলমুল, মিষ্টি, বিস্কিট-চানাচুর আর কাপড়চোপড় নিয়ে যাওয়া ছাড়া আরতো কখনোই দেখিনি নানা নানুর জন্য কিছু করতে। খাবার যা নিয়ে যেতো তার কয়েকগুন তাও রান্না করা উনারাই ফেরার সময় আমাদের গাড়ী ভরে দিয়ে দিতো। তবু যেনো উনাদের কলিজার টুকরা মেয়েটা ভালো থাকে।
ঐ সফর শেষে মনটা দুএকদিন ভীষন খারাপ ছিলো যদিও কাউকে বুঝতে দেইনি। বার বার আম্মার চেহারাটা চোখে ভেসে উঠছিলো আর চোখে পানি চলে আসছিলো। আমার আব্বা আম্মা সারাটা জীবন শুধু একতরফা করেই গেছেন। ঠিক আর দশটা বাবা মায়ের মতো করে। একটু হিসাব কষলাম আম্মা নানুর জন্য কি করেছে পেলাম একটা বিশাল জিরো। আম্মা সেই সুযোগ কখনোই পায়নি কিংবা দেওয়া হয়নি।
আর আমি ১০০% সুযোগ থাকার পরও কখনো একটিবারও এটা ভাবিনি যে একটা মেয়ের ও বাবা মায়ের জন্য অতটুকু করা উচিত যতটুকু একটি ছেলের। সেটা উপার্জন করে তাদের টাকা দেওয়া হোক কিংবা নিজের কাছে রেখে সন্তানের মতো দেখাশোনা করা।
ভাবতাম ওগুলো শুধুমাত্র ভাইদের দায়িত্ব টাকা দেওয়া কিংবা সেবাযত্নের দায়িত্ব নেওয়া। আমার মতো লাখো কোটি নারী ঠিক এভাবেই ভাবে। আর যেসব সচেতন মনের নারীরা ভাবতে জানেও তারা সুযোগ ই পায়না কিংবা দেওয়া হয়না নিজের বাবা মায়ের জন্য কিছু করার।
আমার সফরসঙ্গী ঐ মহিলার মতো অসম্ভব সৌভাগ্যবান নারীরাই বুড়ো বয়সে তাদের বাবা মাকে কাছে রেখে সেবাযত্ন করার সৌভাগ্য পায়। হ্যাঁ অসম্ভব সৌভাগ্যবান নারীরাই কাছে রেখে সেবা করতে না পারলেও দুর থেকে প্রতিদিন খোঁজ খবর রাখে বাবা মা কি খাচ্ছেন না খাচ্ছেন। ঔষটা ঠিকমতো খেয়েছেন কিনা। নিয়মিত একটু শরীরচর্চা করছেন কিনা।
অসম্ভব সৌভাগ্যবান নারীরাই নিজের উপার্জিত টাকা থেকে বাবা মার জরুরী দরকারের জন্য টাকা দিতে পারে। বাবা মা আর্থিকভাবে দুর্বল হলে তাদের নিয়মিত ভরনপোষনের দায়িত্ব নিতে পারে ঠিক যেমন একটা পুরুষ নেয়, নিচ্ছে যুগযুগ ধরে।
যেদিন থেকে একজন নারী একজন পুরুষের মতো তাদের বাবামায়ের সব ধরনের দায়িত্ব নিবে কিংবা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে সেদিন থেকে প্রেগনেন্ট হওয়ার পর থেকে একজন বাবা কিংবা মা কিংবা একটা পুরা পরিবার মুখে না বললেও মনে মনে একটা ছেলে সন্তানের জন্য কাতর হয়ে থাকবে না।
সবাই ভাববে ছেলেটা যেমন সবার জীবনে একটা শক্তি, বুড়ো বয়সের সম্বল ঠিক মেয়েটাও একটা শক্তি এবং বুড়ো বয়সের সম্বল।
আমার ২২তম প্রশ্ন......
দ্বিতীয় খন্ড
আর আমাদের বাংলাদেশ কিংবা পাক- ভারতের সমাজের কথা যদি বলি বেশীরভাগ মানুষের পেটের মধ্যেই উত্তপ্ত গরম তেল পরবে।
1. একজন নারী কালেভদ্রে বাবা মাকে কয়টা টাকা দিলে স্বামী, শ্বশুর বাড়ীর মানুষের কটু কথা শুনতে হয়। একজন নারী তার অসুস্হ বাবামায়ের বাড়ীতে গিয়ে উনাদের সেবা করার জন্য দীর্ঘ সময় থাকলে খোঁচা মারা কথা শুনতে হয়। একজন নারী ফোনে দীর্ঘক্ষন মা বাবার সাথে কথা কথা বললে সবাই চরম বিরক্ত প্রকাশ করে।
2. একজন পুরুষ নিজের বাবা মায়ের সেবা করলে আদর্শ সন্তান আর শ্বশুর শ্বাশুরীর জন্য করলে ছেলেতো বিক্রি হয়েছে।
3. মা দিবসে কোন নারী শ্বাশুড়ীর ছবি প্রোফাইল পিক দিলে সবার সুন্দর সুন্দর কমেন্ট, লাভ-লাইক সাইন। আর কোন পুরুষ যদি ভুলেও মা দিবসে শ্বাশুড়ীর ছবি প্রোফাইল পিক দেয় আল্লাহগো সামনে না হলেও পিছনে ঐ ছেলেটার নামে গীবত চর্চা করতে করতে রীতিমতো তার মানসন্মানের চর্চুড়ী বানিয়ে ফেলবে।
4. একজন পুরুষ নিজের বাবামায়ের সমস্ত ভরপোষন এবং সেবাযত্নের দায়িত্ব নিবে এটাই তো স্বাভাবিক, এটাই তো বিধান। একজন পুরুষ মানুষ তার শ্বশুর শ্বাশুড়ীর( উনাদের নিজের ছেলে থাকুক কিংবা না থাকুক) ভরপোষনের দায়িত্ব কেনোই বা নিবে? এটা তাদের উপর বিধান না। আমাদের সমাজে ঐসব পুরুষদেরকে ভয়ঙ্কর খোঁচা মার্রা কথা শুনতে হয়।
5. একজন পুরুষ কিংবা নারীর নিজ বাবামায়ের পর শ্বশুর শ্বাশুড়ী বৈবাহিক সুত্রে পাওয়া বাবা মা। কি অদ্ভুত আমাদের এই সমাজ! নারীটা শ্বশুর শ্বাশুড়ীর সেবা করতে করতে ক্ষয় হয়ে গেলেও কারো চোখেই লাগেনা। যেনো এটাই তার জন্মগত দায়িত্ব। আর পুরুষটা যদি তার শ্বশুর শ্বাশুড়ীর জন্য সামান্য কিছুও করে পুরো সমাজ ব্যবস্হার যেনো ওটা গলার মধ্যে কাঁটার মতো বিঁধে যায়।
6. আমাদের জঘন্য সমাজটাই আমাদের জন্য একটা ফ্রেম বানিয়ে রেখেছে। একজন নারী সারা জীবন আপ্রান চেষ্টা করে যাবে শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর মন পেতে, মন যুগিয়ে চলতে। কিন্তু একজন পুরুষ তো হচ্ছে রাজা-বাদশা। তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর ই উল্টা দায়িত্ব কিভাবে মেয়ের জামাইয়ের মন পাওয়া যায়, সারাজীবন মন যুগিয়ে চলা যায়।
কি নিষ্ঠুর এবং অবিচার এই নিয়ম।
7. একটা পুরুষের মা বাবা অর্থ-কষ্টে থাকলে, সেবা না পেলে সবাই ঐ পুরুষকে তুনোধুনো করে। বলে অমানুষ জন্ম দিছে। আর নারীর মা বাবা একই কষ্টে থাকলে আমাদের মহামান্য সমাজ বলে আহারে আল্লাহর কি অবিচার! একটা ছেলে যদি থাকতো উনাদের।
8. তবে যাই বলেন সবচেয়ে রাগ লাগে আমার মতো স্টুপিড নারীদের উপর যারা চাইলেই সবভাবেই বাবা মায়ের জন্য করতে পারে কিন্তু ভেবে নেয় আরে ওটাতো ভাইদের দায়িত্ব। আমার বিয়ে হয়ে গেছে তাই উল্টা উনাদের ই দায়িত্ব আমি কেমনে ভালো থাকি, কি করে খুশী থাকি এসব দেখে রাখা।
আহারে !!! এরকম ভাবতে ভাবতে আমাদের মা বাবাগুলো মরে গিয়ে একদিন মাটির সাথে মিশে যায়। তবু অনেকের হুশ হয়না। ধিক আমার নিজেকেই!
পরিশেষে বলবো মা বাবার মতো অমুল্য রত্ন আর কিছুই নেই। শিশুকাল থেকে কতো মায়া-মমতা, আদর-যত্ন, ভালোবাসা মাখিয়ে ওরা আমাদের বড়ো করেছেন যেগুলো পৃথিবীর কোন ভাষা, কোন সাহিত্য দিয়ে বোঝানো যাবেনা। যখন ওরা বুড়ো হয় ঠিক ছোট্ট বাচ্চাদের মতো হয়ে যায়। এবার আমাদের পালা ঐ মায়া-মমতা, আদর-যত্ন, ভালোবাসাগুলো দেওয়ার।
জী আমাদের। আমাদের বলতে ঠিক যতটুকু একটি ছেলের ঠিক ততটুকু একটি মেয়ের। আর আমাদের( ছেলে সন্তান এবং মেয়ে সন্তান) এই ফরজ দায়িত্ব পালনে কোন মানুষ, কোন সমাজ, কোন সভ্যতাও যদি বাঁধা দেয় ওগুলোকে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ডিটার্জেন্ট দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার- পরিচ্ছন্ন এবং পাক-পবিত্র করা অতিসত্বর দরকার।
সেটা একজন মেয়ের জামাইকে হোক কিংবা ছেলের বৌকে।
আর কিছুকিছু পুরুষ ভাইদের অনুরোধ করবো দরকার হলে আজকে আমাকে এক লাখ একটা গালি দিন কিন্তু পাঁচটা মিনিট ভাবুন নিজের বাবা মায়ের সুখ দু:খে, হাসি কান্নায়, সুস্হ অসুস্হতায় আপনার ভেতরে যে প্রতিটা ফোঁটা ফোঁটায় প্রতিক্রিয়া হয় আপনাদের স্ত্রীর কিংবা যেকোন নারীর তাদের বাবা মায়ের জন্য ঠিক তেমনটাই হয়। ক্ষেত্রবিশেষে বেশীও। আজ থেকে নিজের প্রতিক্রিয়ার মতো ওদের প্রতিক্রিয়াটাকেও সন্মান দিবেন প্লিজ। দেখবেন আপনার মেয়ের কিংবা বোনের স্বামীও ঠিক একইভাবে ভাববে।
বোনদের প্রশ্ন করছি -
জীবনে কি কি করেছেন মা বাবার জন্য?কি করছেন?
আর কি করবেন বলে ঠিক করেছেন?
আমার ২৩তম প্রশ্ন......
খ) সবগুলো প্রচলিত ধর্মে বৃদ্ধ পিতামাতার প্রতি কন্যা সন্তানের( হ্যাঁ কন্যা সন্তানের ) দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে কি বলা আছে
প্রচলিত সবকটা ধর্মে একটা কন্যা সন্তানের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তার মা বাবার প্রতি কি কি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইনফ্যাক্ট ফরজ করা হয়েছে জানার খুব ইচ্ছা আছে।
কেউ যদি আমাকে জানাতে সাহায্য করেন কৃতজ্ঞ থাকবো এবং উপকৃত হবো।
দয়া করে বাবা মায়ের সাথে উত্তম ব্যবহার, উচ্চস্বরে কথা না বলে এই টাইপের কথা দিয়ে বুঝিয়ে দিবেন না, ওগুলো জানি।
আমার ২৪তম প্রশ্ন....
ক) ইসলাম ধর্মে কেনো একজন স্বাধীন নারীকে চুল এবং মুখ ঢাকতে বলা হয়েছে কিন্তু একজন ক্রীতদাসীকে নিষেধ করা হয়েছে?
খ) দ্বিতীয় খলিফা ওমর (রা:) কেনো চুল এবং মুখ ঢাকলে ক্রীতদাসীদের পিটাতেন?
নীচের ভিডিও ক্লিপটির ১.৪৫ মিনিট থেকে দেখুন।
বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ আলেম মুফতি কাজী ইব্রাহিম বলেছেন:
1. ইসলাম ধর্মে একজন স্বাধীন নারীকে মুখ এবং চুল ঢাকতে হবে। কারন তারা সম্ভ্রান্ত নারী।
2. অপরদিকে একজন ক্রীতদাসী তার মুখ এবং চুল ঢাকতে পারবেনা। কারন সে হচ্ছে একজন সেবিকা/ খাদ্দেমা।
3. আর একজন ক্রীতদাসীর জন্য সতর/ আওরাহ হচ্ছে পুরুষ মানুষের মতো নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত।
ইব্রাহীম হুজুর এটাও বলেছেন খলিফা ওমর ঐসময় যেসব ক্রীতদাসীরা মুখ এবং চুল ঢাকতো ওদের ধরে পেটাতেন। বাহ! চমৎকার!
জানতে চাই:
মুফতী কাজী ইব্রাহীম সাহেব কি সত্যি কথা বলেছেন?যদি ইসলাম নিয়ে মিথ্যা বলেন উনার কি শাস্তি হবে?
যদি মুফতী সাহেব সত্যি বলেন:
কেনো একজন ক্রীতদাসীর মুখ এবং চুল ঢাকা নিষেধ?
ক্রীতদাসীর সতর/পর্দা কি সত্যি ছেলেদের মতো নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত?
তারমানে একজন ক্রীতদাসীর বুক ঢাকা ফরজ নয়?
একজন নারীর পোষাকের জন্য( নিকাব+হিজাব) তাকে পেটানো হতো এমন মানুষকে কি নামে ডাকা উচিত?
আমার ২৫তম প্রশ্ন....
ক) ইসলাম ধর্মে সামর্থ থাকলে একজন পুরুষের একসাথে চারজন স্ত্রী এবং অগনিত দাসী রাখতে পারার নিয়মটির ‘বিরোধিতা’ করা কি প্রচন্ড অমানবিক কাজ নয়?
খ) মানুষের জীবনের এসব সিদ্ধান্তগুলো পুরোপুরি পরিবেশ, পরিস্হিতির উপর নির্ভরশীল নয় কি?
নারীবাদি, নাস্তিক, মুক্তমনা এবং অনেক অমুসলিমরা সবসময় ইসলামের দুটো বিষয় নিয়ে ভীষন আপত্তিকর কথা বলে এবং ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে। বিষয়টা দুটো হচ্ছে:
১. ইসলাম ধর্মে একজন পুরুষ ‘প্রয়োজন, পরিস্হিতি এবং সামর্থ’ থাকলে একসঙ্গে চার স্ত্রীর সাথে সংসার করতে পারবে।
২. ইসলাম ধর্মে একজন পুরুষ ‘পরিস্হিতি এবং সামর্থ’ হলে যতজন ইচ্ছা ততোজন দাসী রাখতে পারবে।
সবার তালে পড়ে আমিও এই ব্যাপারগুলো নিয়ে বিরোধিতা করেছি যা প্রচন্ড অন্যায় ও অমানবিক কাজ।
গত কয়েকদিন অনেক ভেবে কয়েকটা বিষয় মাথায় আসলো।
আসা করি সবাই মাথা ঠান্ডা রাখবেন এবং কথাগুলো হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করবেন।
প্রতিটি মানুষের ই খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্হান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যৌনকর্ম এই কয়েকটি মৌলিক চাহিদার পর আরো কয়েকটা জরুরী চাহিদা আছে যেগুলো না থাকলে মানুষের জীবন আর পশুরপাখির জীবনের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য থাকেনা। যেমন:
বিনোদনমূলক বিষয়াদি
খেলাধুলা
শখ
প্রেম ভালেবাসা
বন্ধুত্ব
হরেক রকম চালচলন
কিন্তু ইসলাম ধর্মে:
▪️নাটক-সিনেমা করা কিংবা দেখা হারাম।
অত:পর খাট!
▪️গান- বাজনা করা কিংবা শোনা হারাম( except চিজ বারি হ্যায় মাস্ত মাস্ত)
অত:পর খাট!
▪️খেলাধুলা করা এবং দেখা হারাম( দু একটা বাদে)।
অত:পর খাট!
▪️প্রেম ভালোবাসা হারাম।
অত:পর খাট!
▪️বিপরীত লিঙ্গের মানুষের সাথে বন্ধুত্ব হারাম।
অত:পর খাট!
▪️বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে গল্প করা হারাম।
অত:পর খাট!
▪️ছবি অংকন (কারো মতে ছবি তোলাও) হারাম।
অত:পর খাট!
▪️অমুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব নিরুৎসাহিত( কিছু আলেমের মতে)।
অত:পর খাট!
▪️অমুসলিম দেশে বসবাস হারাম( আলেমদের মতে)।
▪️ফ্যাশন করে টাকনুর নিচে প্যান্ট পরা তাও হারাম।
▪️ক্লিন সেইভ করা মানে রাসুলের সুন্নত অমান্য করা।
▪️গনতন্ত্র মেনে নিয়ে ভোট দেওয়া হারাম।
আর শুধুমাত্র নারীদের জন্য হারামের লিষ্টগুলো দিলেতো পাবলিক আঁতকে উঠবে। ওটা নাহয় অন্য লেখায় দিবো।
যাইহোক একজন সুস্হ স্বাভাবিক মানুষ দৈনন্দিন মৌলিক কাজগুলোর পাশাপাশি উপরের কাজগুলোও যে যার পছন্দ এবং রুচী অনুযায়ী করে।
যেমন আমরা ভাইবোনেরা এবং আমাদের বাচ্চারা কেউ ছবি আঁকতে পছন্দ করে কেউবা মুভি দেখতে। কেউ ফুটবল খেলছে তো কেউ কেউ গানবাজনা শিখছে।
আমার ভাইবোনগুলো ভীষন স্টাইলিশ তাই বিভিন্ন রকমের ফ্যাশন নিয়ে তারা বেশ গবেষনা করে। ওদের রুচী।
আমরা প্রায় সবাই একটি অমুসলিম দেশে বসবাস করি এবং অমুসলিম বন্ধুদের সাথে পরিপূর্ন শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা নিয়ে মিশি।
কিন্তু প্রিয় মুসলিম( খাটমোল্লা) ভাইদের কথা একবার ভেবে দেখেছেন কি?
মৌলিক চাহিদাগুলো পূরনের পর উনাদের জীবনে একমাত্র “খাট” ব্যতীত আমি কোনকিছু খুঁজে পাইনা।
উনাদের বিনোদন হলো খাটে।
খেলাধুলা হলো খাটে।
শখ পূরনও খাটে।
আমাদের এক হুজুর আমাদেরকে বলেছিলেন টাকা, পয়সা, ডাকটিকিট ঘরে জমানো হারাম কারন এগুলোর উপর মানুষের এবং প্রানীর ছবি থাকে।
তো ভাই প্রিয় মুসলিম ভাইগুলো জীবনে করবে টা কি?
বিনোদন এবং শখের কাজগুলোর উপর এতো বেশী হারাম ট্যাগ লাগানো যে চার বিবি এবং অগনিত দাসী নিয়ে খাটের উপর খাটমোল্লা হয়ে খাট বিনোদন ব্যতীত কোন অপশন ই তো বাকী নেই প্রিয় মুসলিম ভাইদের।
তাইতো উনারা শয়নে স্বপনে জাগরণে শুধু খাট আর খাট ই দেখে। উনাদের জীবনের একমাত্র বিনোদন।
আর উনাদের জীবনের আনন্দের সবকিছু যেহেতু ঐ খাটের উপর ই তাই চার বিবি এবং অগনিত দাসীর পরিমানটা বেশ কম। কিছুটা অবিচার এটা। তাই নয় কি?
অকর্মা বিজ্ঞানিরা যদি এসব ব্ল্যাক হোল, ওয়ার্ম হোলের পিছনে না ছুটে খাটমোল্লাদের খাটের জন্য ভিনগ্রহ থেকে কিছু সাপ্লাইয়ের ব্যবস্হা করতো কতোই না সওয়াব পেতো।
তাই নারীবাদি, নাস্তিক, মুক্তমনা এবং অমুসলিদের বলছি একটু মানবিক হোন প্লিজ। চার বিবি এবং অগনিত দাসী ব্যতীত মুসলিম ভাইদের জীবনে কোন বিনোদন নেই।
এই দুটো খাটের বিনোদন যদি না থাকে উনারা তো কিসমিসের মতো শুকিয়ে যাবে। জীবন হবে ঝাউ ভাতের মতো স্বাধহীন। তাই দয়া করে উনাদের এই নিয়মগুলোর বিরোধিতা করবেন না।
উৎসর্গ:
প্রিয় খাটমোল্লা ভাই এবং তাদের প্রিয় খাটগুলোকে।
- লিখেছেন:ফাতিমা জান্নাত...
0 মন্তব্যসমূহ
মুক্তচিন্তার সাথে হোক আপনার পথ চলা।