সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

প্রশ্ন করবার অধিকার কি জরুরী?

                          (  ১)

 ধর্মীয়-মতাদর্শ এবং ধর্মভিত্তিক সমাজ কোন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে চায় না, চায় নিঃশর্ত আনুগত্য। স্থির ও বদ্ধচিন্তার জন্যে সেটাই স্বাভাবিক; নিস্তরঙ্গ পুকু‌রে ঢেউ ওঠেনা।

সেকারণেই ধর্মজীবীরা আরোপ করতে চায় নানান শর্ত। এমনকি 'ধর্মানুভুতিতে আঘাত' নামের এক অলীক ধারনাকে দেয় প্রশ্রয়; অপরিণত মস্তিকের ছিঁচকাঁদুনে বালখিল্যতায় সেটাকে দেয় একটি আইনি রূপ।
কিন্তু সমাজ তো নিস্তরঙ্গ পুকু‌র নয়, মানবিক একটি সমাজ চির বিকাশমান। কল্যাণকর ধারণাগুলোর প্রতিষ্ঠা এবং আরও শানিত করবার জন্যেই তাকে নিয়ত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
সমাজ বিকাশের এই চলমান ধারায় যে সব চিন্তা বা কাজ সমাজের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম সেটাই প্রগতিশীলতা এবং সেই পরিবর্তনে যারা আস্থা রাখে এবং সেই ইতিবাচকতার পক্ষে শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করে, তারাই প্রগতিশীল।
সমাজের বিকাশমান ধারাটিতে যাদের আস্থা নেই, চিন্তায় ও মননে যারা অতীতমুখী, যারা প্রগতির বিরোধী, তারাই প্রতিক্রিয়াশীল।

-----------------------(২)---------------------------
'মুক্তচিন্তা' একটি প্রগতিশীল দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গী।
“ক্লিফোর্ডস্ ক্রেডো” এর একটি বাক্যকে বলা যায় মুক্তচিন্তার মুল ভিত্তি, যা অনেকটা এ রকম —
“যে কোন ব্যক্তির যে কোন জায়গায় উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে কোন কিছু বিশ্বাস করা উচিত নয়”।
অথবা তা হতে পারে কার্ল সেগানের ভাষায় —
"পর্যাপ্ত প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ স্থগিত রাখব"।
সচেতনভাবে মুক্তচিন্তার প্রয়োগ হচ্ছে মুক্তচিন্তন এবং এর সচেতন অনুশীলনকারীরাই মুক্তমনা। বিজ্ঞানের পরীক্ষিত ও প্রামান্য তথ্য এবং যুক্তিবিদ্যার ভিত্তিতে গ্রহনযোগ্য উপাত্ত আর প্রমানযোগ্য যুক্তির আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়া ও সেই সিদ্ধান্তের নিস্পত্তি করতে পারার দক্ষতা হল মুক্তচিন্তা।
নিজ মতামত গঠণের ক্ষেত্রে মুক্তচিন্তার অনুশীলনকারীরা কোন প্রথা, বিশ্বাস, আচার, স্বার্থ বা কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে শুধুমাত্র নির্মোহতা ও নৈর্ব্যাক্তিকতাকে প্রাধান্য দেয় বলেই তারা মুক্তমনা বলে অভিহিত; পক্ষান্তরে অধিকাংশ ধর্মানুসারীর পক্ষে ধর্মমোহ থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব হয়না বলেই তারা মুক্তমনা নয়।

---------------------------(৩)------------------------
বাংলাদেশের মত একটি ধর্মাশ্রয়ী পশ্চাৎপদ সমাজ, সাম্প্রদায়িকতা যেখানে গভীরে প্রবিষ্ট এক ব্যাধি, যেখানে ধর্মের বিধি-বিধান, প্রথা ও সংস্কারগুলো আমাদের বেঁধে রেখেছে আষ্টেপৃষ্ঠে, সে সমাজে ধর্মের অসঙ্গতিগুলোই প্রাথমিকভাবে মুক্তচিন্তকদের ধারালো প্রশ্নের আক্রমনে জর্জরিত হবে সেটা অনুমেয়।
কূটকৌশল ও চতুরতার সাথে এই সব প্রশ্নকে লঘুচিত্তের বলে অনেকে এড়িয়ে চলবার চেষ্টা করলেও একবিংশ শতকের এই জ্ঞানভিত্তিক সমাজে সে চেষ্টা বালখিল্যতারই শামিল।
ধর্মপ্রভাবিত রাষ্ট্র ও সরকার তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে প্রগতির প্রতিবন্ধক এই ধ্যানধারণাগুলোকে যতই টিকিয়ে রাখবার চেষ্টা করুক না কেন, ইতিহাস স্বাক্ষী যে সে চেষ্টা চিরকাল বিফলেই গেছে; এমনকি হয়েছে রক্তে রঞ্জিত।
তা রক্ত তো ঝরছেই; একে একে মুছে গেছে অমিত সম্ভাবনাময় সব তরুনেরা; অদম্য, অসাধারন মস্তিষ্কগুলোকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলেছে নিদারুন বর্বরতায়।
স্বাধীনতার পর হতেই রাষ্ট্রীয় মদতে ধর্মান্ধদের নানামুখী আক্রমনের সরাসরি শিকার হন দাউদ হায়দার, হুমায়ূন আজাদ, শামসুর রাহমান, তসলিমা নাসরিন; এবং সাম্প্রতিক কালে ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় অবস্থানের কারনেই সরাসরি খুন হন লেখক রাজিব হায়দার, অভিজিৎ রায়, অনন্ত বিজয়, ওয়াশিকুর বাবু, নিলয় নীল, প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন, নাজিমুদ্দিন সামাদরা; গুরুতরভাবে আক্রান্ত হন প্রকাশক আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুল সহ লেখক রণদীপম বসু ও তারেক রহিম।
এবং সরকার আজও, যথারীতি তার মৌলবাদ তোষণের প্রক্রিয়ায়, নানান ছলে সে দায় অস্বীকার করে চলেছে।
----------------------------(৪)-----------------------
ভয়ঙ্কর এই খুনের ঘটনাগুলোর পরও, এটা অত্যন্ত আগ্রহব্যাঞ্জক যে তরুন বাংলাদেশীরা তাঁদের শৈশবে শেখা মতদীক্ষার বিপরীতে যৌক্তিক চিন্তা, তথা মুক্তচিন্তার প্রতি প্রতিনিয়ত আকর্ষিত হচ্ছেন; জীবনের সকল ক্ষেত্রে প্রশ্ন করতে শিখছেন।
আর তাঁরা প্রশ্ন করতে শিখছেন বলেই মুক্তচিন্তায় যাদের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয় সেইসব শেয়ালদের মধ্যে অসহিষ্ণুতা ক্রমশই বাড়ছে; এবং তা এমন এক পর্যায়ে গেছে যে, সরকার প্রধানকেও তা নগ্ন করে তুলেছে; তাকে বাধ্য করেছে মুখোশ খুলে ধর্মান্ধদের পক্ষে নিজ অবস্থান ঘোষণা করতে। তিনি বলেন,
‘কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে লেখা কখনো গ্রহণযোগ্য না। আমার ধর্ম আমি পালন করি। আমার ধর্ম সম্পর্কে কেউ যদি নোংরা কথা লেখে, সেটা আমরা কেন বরদাশত করব? এখন একটা ফ্যাশন দাঁড়িয়ে গেছে, ধর্মের বিরুদ্ধে কেউ কিছু লিখলেই তারা হয়ে গেল মুক্তচিন্তার। আমি তো এখানে মুক্তচিন্তা দেখি না। আমি এখানে দেখি নোংরামি, পর্ন। এত নোংরা নোংরা লেখা কেন লিখবে? যাকে আমি নবী মানি, তাঁর সম্পর্কে নোংরা কথা কেউ যদি লেখে, সেটা কখনো আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য না। ঠিক তেমনি অন্য ধর্মের যাঁরা আছেন, তাঁদের সম্পর্কে কেউ যদি লেখে, এটাও কখনো গ্রহণযোগ্য হবে না। এই সমস্ত নোংরা কথা, পর্নের কথা কেন লিখবে? আমি তো মনে করি, এটা সম্পূর্ণ নোংরা মনের পরিচয়, বিকৃত মনের পরিচয়। এটা কোনো ধর্ম পালন নয়। এটা সম্পূর্ণ তাদের চরিত্রের দোষ এবং তারা বিকৃত মানসিকতায় ভোগে। এ জন্য তারা এ ধরনের লেখে। আশা করি, এই ধরনের লেখা কেউ লিখবেন না।’
তিনি আরও বলেন,
‘আমি একজন মুসলমান হিসেবে প্রতিনিয়ত আমার ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলি। সেখানে কেউ যদি লেখে, এতে আমার নিজেরও কষ্ট হয়। আর এই লেখার জন্য কোনো অঘটন ঘটলে দোষ সরকারের ওপর আসবে কেন? সবাইকে সংযমতা নিয়ে চলতে হবে। সবাইকে একটা শালীনতা বজায় রেখে চলতে হবে। অসভ্যতা কেউ করবেন না। অসভ্যতা করলে তার দায়িত্ব কে নেবে? আমরা নেব না।’
যদিও পরবর্তীতে তিনি বেশ ব্যালেন্স করবার চেষ্টা করেছেন। তাঁর ভাষাতেই,
‘আর মানুষ খুন করার মধ্যে কোনো সমাধান নাই। একজন লিখল, আরেকজন খুন করে সেটার প্রতিশোধ নেবে, এটা তো ইসলাম ধর্ম বলেনি। বিচারের দায়িত্ব আল্লাহ তাদের দেননি। একজন লিখল তাকে খুন করে ফেলতে হবে। এ বিচার তো আল্লাহ তাকে দেননি। এ বিচার আল্লাহ করবেন। আল্লাহ তো বলেই দিয়েছেন, তিনি শেষ বিচার করবেন। তো, আল্লাহর ওপর কি তাদের ভরসা নাই? আল্লাহর ওপর যাদের ভরসা নেই, তারাই এসব খুন-খারাবি করে। কারণ তারা আল্লাহ-রাসুল মানে না।’
-----------------------------(৫)----------------------
এটা স্পষ্ট যে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বাংলাদেশের অন্যান্য সকল ক্ষেত্রের মতই মুক্তচিন্তার ক্ষেত্রটিও প্রশস্ত নয়। অথচ মুক্তচিন্তার চর্চার বৈশিস্ট্যই হচ্ছে তার স্বতঃস্ফূর্ততা।
একইসাথে পরিবার, পরিবেশ, ও প্রতিষ্ঠান সহ সকল ধরনের অথোরিটির বিরোধিতা করেই তা বিকশিত হয়। চিন্তার এই স্বাধীনতাকে ধর্মানুভুতির মত খেলো এক আবেগের দোহাই দিয়ে থামানোর চেষ্টাটি মূলত রাষ্ট্রের অসহনশীল চরিত্রের পরিচয়।
তরুন 'মুক্তমনা'দের অনেকের আচরণে দৃষ্টিকটুভাবে বিচক্ষণতার অভাব দেখা যায়, অপরিণত আবেগ দেখা যায়, যা সুবিবেচিত দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গীর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
গা-জোয়ারি ভাব যে যুক্তি নয়, সেটাও অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা বুঝতে অসমর্থ! যুক্তির পথ ছেড়ে অস্বীকার, অগ্রাহ্যতা, বর্জন, বিদ্বেষ আর অননুমোদনকেও অনেক সময় এঁরা তর্কের ভিত্তি বলে মেনে চলেন এবং কখনো কখনো ভুলে যান যে, অশিক্ষা থেকে উদ্ভুত সিদ্ধান্ত, কেবল মাত্র কুশিক্ষাকেই লালন করে। সে প্রবণতাটি অবশ্যই বর্জনীয়।
--------------------------(৬)-------------------------
কিন্তু তা বলে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে মুক্তচিন্তার গোটা চেষ্টাটাকেই নিরুৎসাহিত করবার প্রবণতাটি আরও ক্ষতিকর, আরও ভয়ঙ্কর। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তাদের অস্বীকার করবার মধ্য দিয়ে সম্প্রতি আরও অরক্ষিত করে তুলবার একটি প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে, যাতে সরকারসহ সকল উচ্ছিষ্টভোগী বুদ্ধিজীবীরা শামিল হয়েছেন।
দুর্বিনীত অহংবোধের প্রভাবে শিক্ষাচ্যুত এই বুদ্ধিজীবীদের দলটি অশিক্ষিত না হলেও নিঃসন্দেহে কুশিক্ষিত। মুক্তচিন্তার পথকে উৎসাহিত না করে তাঁরা অবস্থান নেন প্রতিক্রিয়ার পক্ষে।
এঁদের অনেকেই ক্ষুদ্র স্বার্থের কারনে রাজনৈতিক ইসলামের সাথে নৈমিত্তিক ইসলামের ধারনাকে গুলিয়ে ফেলে মৌলবাদীদের মত একই ভাষায় মুক্তচিন্তকদের প্রদর্শিত করছেন ইসলাম বিদ্বেষী হিসেবে।
রাষ্ট্রও সে সুযোগের সদ্ব্যবহার করছে ধর্মানুভুতি নামের অলীক এক ধারণাকে প্রশ্রয় দিয়ে, নিত্য নতুন কালো আইন তৈরি করে।
বুদ্ধিজীবীদের এই প্রবণতাটি শঙ্কার, প্রবল শঙ্কার;
কারন সাম্প্রদায়িকতা, ফ্যাসিবাদ ও মৌলবাদের বিরোধিতা ছাড়া কোনো গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন অসম্ভব।
প্রচলিত রাজনীতি ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা সে পথে হাঁটছে না কারন কর্পোরেট ও আমলাতন্ত্র তা চায়না।
--------------------------(৭)-------------------------
প্রথাকে প্রশ্ন করবার পাশাপাশি আজ মুক্তচিন্তকদের তাই প্রশ্ন তুলতে হচ্ছে বিদ্যমান রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থাটিকে নিয়েও, কারন খোলনোলচে পাল্টে ফেলে সম্পূর্ণ নতুন রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করা ছাড়া দাঁড়াবার আর কোন পথই আজ খোলা নেই।
Believe nothing, question everything and never stop!
এই ধারনায় অভ্যস্ত না হলে জ্ঞানভিত্তিক আগামীর পৃথিবীতে টিকে থাকাই অসম্ভব হয়ে উঠবে।
সংযুক্ত ছবিতে '?' চিহ্নটি সচেতনভাবেই দেওয়া হয়নি! কারন প্রশ্ন করবার অধিকার আজ খর্বিত।


একটি সুস্থ আলোচনার জন্যে সকলে সাদরে আমন্ত্রিত।

AB_Discussion


লিখেছেনঃচার্বাক কাজী।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জাতীয়তাবাদ আরেকটি ধর্ম বই

বাংলাদেশীরা ধর্মভীরু। ইসলাম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ও জাতীয়তাবাদ নামক ধর্মগুলোর প্রতি বাঙ্গালীর দুর্বলতা নতুন কিছু নয়। আমরা যারা মুক্ত-চেতনাকে প্রয়োজনীয় মনে করি, যুক্তিকে ধর্মের ওপরে স্থান দেই তাদের অনেকেই ধর্মের মতই সামনে আসা অন্যান্য প্রতিটি ধারনা ও প্রস্তাবনাকেই যুক্তি দিয়ে বুঝতে চাই, খতিয়ে দেখতে চাই। বা দদূএকটি রূপ আধ্যাত্মিকতা ও ধর্ম হিসাবে মানুষের দলবদ্ধ সমাজব্যবস্থার দ্বিতীয় বড় চালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রস্তরযুগে আরো একটি ঘটনা ঘটতে শুরু করেছিল। মানুষেরা নিজেদের গ্রাম বা নগরকে কেন্দ্র করে একটি সামষ্টিক পরিচিতি অনুভব করে শুরু করেছিল। বোধ করি তখন থেকেই মানুষের দলবদ্ধতার তৃতীয় চালক জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক যাত্রা শুরু। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় জাতীয়তাবাদ নানান চেহারায় দলবদ্ধতার সবচাইতে শক্তিশালী চালক হিসাবে বিদ্যমান। একটি নৃগোষ্ঠী যখন পুঁজিবাদী হতে শুরু করে, যখন সে একটি কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র গঠন করে তখনই সে একটি জাতিতে পরিণত হয়। ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ আমাদের দেশের রাজনীতিতে কাছাকাছি আছে ইতিহাসের শুরু থেকে। মহাভারত থেকে আজকের খালেদা-হাসিনার রাজনীতিতে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ একে অন্যের হাত...

গাজওয়াতুল হিন্দ

গাজওয়াতুল হিন্দকে বর্তমান বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল শ্রীলংকার জিহাদীরা তাদের মনে আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে নানা মতাভেদ থাকলেও সকল মুসলিম জিহাদীরা মনে করে বা আ শা করে যে ইসলাম সারা পৃথীবিতে এই জিহাদের মাধ্যামে প্রতিষ্টা হবে। তারা এটাকে মর্যাদার্পূণ জিহাদ বলে মনে করে। ইসলামের ভিত্তির অন্যতম হলো জিহাদ। ইসলাম প্রতিষ্ঠাকালীন প্রচুর যুদ্ধ করা এবং হত্যার পরেই মানুষ ভয়ে ইসলামকে গ্রহন করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ভায়রাস বলা হয় ইসলামকে। এই ভায়রাস আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে গাজওয়াতুল হিন্দকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে জিহাদীরা তাদের দলে লোক বেসি করার জন্য অনলাইনে সহ নানা জাগাতে ঠিক এই ভাবে মুসলিমদের উপর প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে "গাজওয়াতুল হিন্দ বা ভারতবর্ষের যুদ্ধ সম্পর্কে কি আপনি অবগত? আপনি কি কাফের মুশরিকদের সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত?" ইসলামীষ্ট  জিহাদীরা ঠিক এভাবে চাই যে সারা পৃথিবীতে সবচে’ বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটা হবে হিন্দুস্তান তথা ভারতের হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যা সমস্থ জ্ঞানি ইসলামি স্কলার এবং আলেম উলামা জানে। মুসলমানদের জন্য এটা খুব বড়  জিহাদ এবং এই জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই...

বাঙালি এবং লেখকের জীবন

লেখকের বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত তার পরিবারের স্বীকৃতি।এখানে স্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে-লেখালেখি যে একটি কাজ,অন্য মতোই একটি কাজের, এবং সেই কাজের জন্য মনোযোগ,সময় এবং শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়-এই বোধটা তৈরী হওয়া।লেখালেখিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে নাই বা ধরা হলো। কিন্তু এটি যে একটি কাজ,এই স্বীকৃতিটা পরিবার থেকে আসা খুব প্রয়োজন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতি বান লেখক শেষ পর্যন্ত যে লেখক হয়ে উঠতে পারে না,লেখক জীবন যাপন করতে পারেন না,লেখালেখির জগত থেকে তাদের যে অকাল বিদায় নিতে হয়,তার সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।লেখালেখিকে পারিবারিক ভাবে স্বীকৃতি না দেওয়া।দেশের অন্য সব মানুষদের মতোই বেশির ভাগ পরিবারে লেখালেখি একটি নেহাৎ ই শখের জিনিস।তারুণ্য বা অংকুরোদ্গমী যৌবনে যৌনতার চুলকানিরও পেয়ে বসে আমাদের দেশের মানুষদের।তখন তাদের লেখাকে বাবাহা দেয় বাড়ির ভাবীরা,কাকা-জ্যাঠারা,সহপাঠীরা,বা তার কোন প্রেমিক-প্রেমিকাও।কখনো কখনো এমনকি বাবা মাও।তারা সকলেই অবচেতনে,এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানে যে,এই চুলকানি বেশিদিন থাকবে না।কিন্তু যার ক্ষেত্রে থেকে যায়,অর্থাৎ যে বুঝে যায় যে লেখক হওয়াটাই তার ভবিতব্য,সমস্যাটা তার ক্ষ...