সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

যখন দাঁড়াই প্রতিচ্ছবির সামনে

শরীরটা আমার । তাই আমার শরীর নিয়া আমি কি করবো সেই স্বাধীন সিদ্ধান্ত একমাত্র আমিই নিতে পারি । আমার নিজের শরীর নিয়া আমি কি করবো সেইটা আমার ইচ্ছা ও আমার সিদ্ধান্ত - অন্যেরা এই ব্যাপারে কোনো মাতব্বররি ও স্বৈরাচারীতা করতে পারবেনা । ঠিক আছে ? বুঝাইতে পারলাম ? 

অতএব , নারীর শরীর ও নগ্নতা এমন কোনো নিষিদ্ধ কিছু না , যে নারীর শরীর সহ প্রত্যেক মানুষের শরীর ঢেকে রাখতেই হবে বা প্রয়োজন ছাড়াই অতিরিক্ত কাপড় দ্বারা অবরুদ্ধ করে রাখতেই হইবে ?? পোশাক আমরা ব্যবহার করবো শুধু আমাদের শরীরকে নিরাপদ রাখার জন্য , কাউকে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সুবিধা দেয়ার জন্য না । 

কিন্তু - কেউ যদি বিভিন্ন পোশাক পরিধান করার মাধ্যমে একটা নতুন ধরন ও শৈলী বা ঢংএ নিজেকে উপস্থাপন করে সেইটা যারযার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও পছন্দ বা ইচ্ছা - এতে অন্যদের বাঁধা দেয়া ও সমালোচনা করার কিছুনাই , আর করলেও সেটা হবে মূর্খতা , বোকামী ও মূঢ় বেকুবের মতো অর্থহীন একটা কাজ । 

আমার ফেবুর প্রফাইল ছবিতে কেনো নারীর নগ্ন শরীরের ছবি ব্যবহার করলাম , জানেন ? এখন বলছি - করলাম কারণ , আমাদের মূর্খ অসভ্য কুপমুন্ডক সমাজের আমজনতারা বংশপরম্পরায় নারীর শরীরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে , নারীর নগ্ন হওয়াকে নিষিদ্ধ করে রেখেছে , একটা প্রচন্ড ট্যাবু বানিয়ে রেখেছে নারী সহ যে কোনো মানুষের নগ্নতাকে । 

সুতরাং , ওদের এই কুপমন্ডুক অসুস্থ একনায়কতান্ত্রিক স্বৈরাচারী মানসিকতাকে আঘাত করে , ঐসব বস্তাপঁচা মান্ধাতা আমলের ধ্যানধারনাকে ভেঙেচুরে গুড়ো করে দিয়ে - সেই শুন্যস্থানে কুসংস্কারমুক্ত উদার ও মুক্তচিন্তার মানসিকতার বীজ বপন করতেই - আমার এই প্রোফাইল ছবি । এইটা মৌলবাদের মধুর চাকে একটা খোঁচা বলতে পারেন , আর কি ! 

আমার এই প্রফাইলের ছবিটা কি এই অর্থ প্রকাশ করে যে - আজীবন ঘরের মধ্যে বন্দি থাকা ও পুরুষের অধস্তনে দমিত থাকা কয়েকজন বোরকাওয়ালী মুসলিম নারী যখন একজন নগ্ন নারীর ছবি দেখলো - তখন তারা একই সঙ্গে প্রচন্ড বিস্মিত হলো , ক্ষুদ্ধ হলো ইত্যাদি এবং তখন তারা নিজেদের দূরাবস্থার কথা চিন্তা করে দারুন মনোকষ্ট ও অনুশোচনা অনুভব করলো ?? 

এমন কি নয় যে - তখন তারা নিজেদের বন্দিত্বের যন্ত্রণার কথা মনে করে হয়তো দুই ফোঁটা চোখের জল ফেললো কিংবা প্রচন্ড রাগে থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে পুরুষতন্ত্রের মুণ্ডপাত করতে লাগলো !! এবং নিজেরা স্বাধীন ও আত্মনীর্ভরশীল হওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা ও আত্মশক্তি উপলব্ধি বোধ করলো । 

- এইটাই কি এই ছবিটার টুইস্ট নয় ? চিত্রগ্রাহক , এইটাই কি এই ছবিটার মাধ্যমে উপস্থাপন করতে চাইছেন না ? না কি , আমিই ভুল বুঝেছি ! ? ছবিটা দেখে আপনাদের অনুভূতি কি জানাতে ভুলবেন না যেনো ! 

- খান ওয়াহিদুজ্জামান 
(05-09-2019 - 01.05.2020) 
(ফটো আর্টিস্টের নামটা মনে পরছেনা বাট কালেক্টেড Hisham Samiর প্রোপিক থেকে)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জাতীয়তাবাদ আরেকটি ধর্ম বই

বাংলাদেশীরা ধর্মভীরু। ইসলাম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ও জাতীয়তাবাদ নামক ধর্মগুলোর প্রতি বাঙ্গালীর দুর্বলতা নতুন কিছু নয়। আমরা যারা মুক্ত-চেতনাকে প্রয়োজনীয় মনে করি, যুক্তিকে ধর্মের ওপরে স্থান দেই তাদের অনেকেই ধর্মের মতই সামনে আসা অন্যান্য প্রতিটি ধারনা ও প্রস্তাবনাকেই যুক্তি দিয়ে বুঝতে চাই, খতিয়ে দেখতে চাই। বা দদূএকটি রূপ আধ্যাত্মিকতা ও ধর্ম হিসাবে মানুষের দলবদ্ধ সমাজব্যবস্থার দ্বিতীয় বড় চালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রস্তরযুগে আরো একটি ঘটনা ঘটতে শুরু করেছিল। মানুষেরা নিজেদের গ্রাম বা নগরকে কেন্দ্র করে একটি সামষ্টিক পরিচিতি অনুভব করে শুরু করেছিল। বোধ করি তখন থেকেই মানুষের দলবদ্ধতার তৃতীয় চালক জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক যাত্রা শুরু। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় জাতীয়তাবাদ নানান চেহারায় দলবদ্ধতার সবচাইতে শক্তিশালী চালক হিসাবে বিদ্যমান। একটি নৃগোষ্ঠী যখন পুঁজিবাদী হতে শুরু করে, যখন সে একটি কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র গঠন করে তখনই সে একটি জাতিতে পরিণত হয়। ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ আমাদের দেশের রাজনীতিতে কাছাকাছি আছে ইতিহাসের শুরু থেকে। মহাভারত থেকে আজকের খালেদা-হাসিনার রাজনীতিতে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ একে অন্যের হাত...

গাজওয়াতুল হিন্দ

গাজওয়াতুল হিন্দকে বর্তমান বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল শ্রীলংকার জিহাদীরা তাদের মনে আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে নানা মতাভেদ থাকলেও সকল মুসলিম জিহাদীরা মনে করে বা আ শা করে যে ইসলাম সারা পৃথীবিতে এই জিহাদের মাধ্যামে প্রতিষ্টা হবে। তারা এটাকে মর্যাদার্পূণ জিহাদ বলে মনে করে। ইসলামের ভিত্তির অন্যতম হলো জিহাদ। ইসলাম প্রতিষ্ঠাকালীন প্রচুর যুদ্ধ করা এবং হত্যার পরেই মানুষ ভয়ে ইসলামকে গ্রহন করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ভায়রাস বলা হয় ইসলামকে। এই ভায়রাস আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে গাজওয়াতুল হিন্দকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে জিহাদীরা তাদের দলে লোক বেসি করার জন্য অনলাইনে সহ নানা জাগাতে ঠিক এই ভাবে মুসলিমদের উপর প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে "গাজওয়াতুল হিন্দ বা ভারতবর্ষের যুদ্ধ সম্পর্কে কি আপনি অবগত? আপনি কি কাফের মুশরিকদের সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত?" ইসলামীষ্ট  জিহাদীরা ঠিক এভাবে চাই যে সারা পৃথিবীতে সবচে’ বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটা হবে হিন্দুস্তান তথা ভারতের হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যা সমস্থ জ্ঞানি ইসলামি স্কলার এবং আলেম উলামা জানে। মুসলমানদের জন্য এটা খুব বড়  জিহাদ এবং এই জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই...

বাঙালি এবং লেখকের জীবন

লেখকের বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত তার পরিবারের স্বীকৃতি।এখানে স্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে-লেখালেখি যে একটি কাজ,অন্য মতোই একটি কাজের, এবং সেই কাজের জন্য মনোযোগ,সময় এবং শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়-এই বোধটা তৈরী হওয়া।লেখালেখিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে নাই বা ধরা হলো। কিন্তু এটি যে একটি কাজ,এই স্বীকৃতিটা পরিবার থেকে আসা খুব প্রয়োজন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতি বান লেখক শেষ পর্যন্ত যে লেখক হয়ে উঠতে পারে না,লেখক জীবন যাপন করতে পারেন না,লেখালেখির জগত থেকে তাদের যে অকাল বিদায় নিতে হয়,তার সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।লেখালেখিকে পারিবারিক ভাবে স্বীকৃতি না দেওয়া।দেশের অন্য সব মানুষদের মতোই বেশির ভাগ পরিবারে লেখালেখি একটি নেহাৎ ই শখের জিনিস।তারুণ্য বা অংকুরোদ্গমী যৌবনে যৌনতার চুলকানিরও পেয়ে বসে আমাদের দেশের মানুষদের।তখন তাদের লেখাকে বাবাহা দেয় বাড়ির ভাবীরা,কাকা-জ্যাঠারা,সহপাঠীরা,বা তার কোন প্রেমিক-প্রেমিকাও।কখনো কখনো এমনকি বাবা মাও।তারা সকলেই অবচেতনে,এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানে যে,এই চুলকানি বেশিদিন থাকবে না।কিন্তু যার ক্ষেত্রে থেকে যায়,অর্থাৎ যে বুঝে যায় যে লেখক হওয়াটাই তার ভবিতব্য,সমস্যাটা তার ক্ষ...