সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সম্প্রতি বাংলাদেশ ও স্বাধীনতা

 ১.

গত ৩১ আগষ্ট টাঙ্গাইলের ভুইয়াপুরে ইসলাম ধর্মের আবমাননার ও কুটক্তির অভিযোগে শ্রাবণ হালদার নামে এক কলেজ ছাত্রের বাড়ি হামলা ও ভাঙ্গচুর করে তৌহিদী জনতা। তাদের দাবী শ্রাবণ হালাদার ইসলামের নবী মুহাম্মদ, আল্লা কে নিয়ে কুটক্তি করেছে। ঘটনার বিবারনে যানা যায় ফেসবুকের মেসেন্জারে শ্রাবন হালাদার নবী মুহাম্মদ আল্লাহকে অবমানানা ও কুটক্তি করে অপর দিকে তাকে প্রতিপক্ষরা মালাউন কালপিট ইত্যাদি বলে গালি দেয়। এই ঘটনার সূত্র ধরে পুলিশ শ্রাবণ হালদার কে গ্রেফতার। অথচ শ্রাবণ হালদার কে মালাউন কালপিট বলে হিন্দু ধর্মের কুটক্তিকারীদের গ্রেফতার বা তাদের নামে কোন মামলা হয়নি যা মূলোতো একটা সুন্দর সমৃদ্ধি সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরছে।


২.

খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ির স্কুল পড়ুয়া একটি কিশোরী ধর্ষনের শিকার হয়েছে। খবরটি বেসামরিক প্রশাসন সবাই জানে। ফেসবুক সহ সোস্যাল মিডিয়াতে এই নিয়ে পাহাড়িরা সহ অনেকে লেখলিখি সহ প্রতিবাদ করেছে এর পরেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয় নি। কারন ইউনিয়ান পরিষদের চেয়ারম্যান রতন কুমার শীল ব্যাপাটা ১০ হাজার টাকায় রফাদফা করে দিয়েছে। আর ভিক্তিম কিশোরীর পিতা দরিদ্র জুমচাষি এর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়ার সাহস পায়নি। কারন চেয়ারম্যান সাব উপজেলা আওয়ালী লীগের সভাপতিও বটে।


অথচ পুলিশের একটা ব্যাবস্থা নেওয়ার উচিত ছিলো। অথচ পুলিশ বলছে ভুক্তভোগী পরিবার আইনী সহায়তা চান না। আমি ঠিক বুঝে পাচ্ছিনা। বঙ্গদেশে কি ধর্ষন আপোষযোগ্য মামলা যে সেখানে পুলিশী হস্তক্ষেপ বিনা একজন উপজেলা চেয়ারম্যান রফাদফা করে দেয় কিছু টাকার বিনিময়। পুলিশও তো মামলা বাদী হয়ে মামলা করতে পারতো। নাকি ওরা পাহাড়ি বলে ওদের ধর্ষনের মামলা বিচার হবেনা। তাহলে কি অনুমান করবো পাহাড়ে গাছ ছাপ করার মতো কি বাঙ্গালী কর্তৃক সংখ্যালঘু ছাপ করার আরেকটা কৌশল। একটা চৌদ্দ বছরের কিশোরী ধর্ষনের শিকার হয়েছে কেন সে সঠিক বিচার পাবেনা কেন ধর্ষকের শাস্তি হবেনা জানতে বড় মন চাচ্ছে ওহে বাংলাদেশ?


এই তো গেলো অতিসম্প্রতি দুটো ঘটনা মাত্র। প্রতিদিন নানা ভাবে নানা রঙ্গে সংখ্যালঘু অন্য ধর্মলম্বিরা পাহাড়িরা হত্যা লুটপাট ধর্ষনের শিকার হয়ে ক্রমে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে তার ইয়াও নেই। অথচ কথা ছিলো দেশ স্বাধীন হলে একটা অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ নিপীড়নহীন এবং উদার গনতান্ত্রীক রাষ্ট্র গঠন করা। একটা প্রবাদ আছে স্বাধীনতা অর্জনের থেকে রক্ষা করা কঠিন। চৌদ্দ বছরের একটা কিশোরীর ধর্ষনের ঘটনাই বলে দেয় আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি ঠিকিই কিন্তু কেউ রক্ষা করতে পারিনি।


লিখেছেন : সজিব হোসেন (Sajib Hossain)


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জাতীয়তাবাদ আরেকটি ধর্ম বই

বাংলাদেশীরা ধর্মভীরু। ইসলাম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ও জাতীয়তাবাদ নামক ধর্মগুলোর প্রতি বাঙ্গালীর দুর্বলতা নতুন কিছু নয়। আমরা যারা মুক্ত-চেতনাকে প্রয়োজনীয় মনে করি, যুক্তিকে ধর্মের ওপরে স্থান দেই তাদের অনেকেই ধর্মের মতই সামনে আসা অন্যান্য প্রতিটি ধারনা ও প্রস্তাবনাকেই যুক্তি দিয়ে বুঝতে চাই, খতিয়ে দেখতে চাই। বা দদূএকটি রূপ আধ্যাত্মিকতা ও ধর্ম হিসাবে মানুষের দলবদ্ধ সমাজব্যবস্থার দ্বিতীয় বড় চালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রস্তরযুগে আরো একটি ঘটনা ঘটতে শুরু করেছিল। মানুষেরা নিজেদের গ্রাম বা নগরকে কেন্দ্র করে একটি সামষ্টিক পরিচিতি অনুভব করে শুরু করেছিল। বোধ করি তখন থেকেই মানুষের দলবদ্ধতার তৃতীয় চালক জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক যাত্রা শুরু। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় জাতীয়তাবাদ নানান চেহারায় দলবদ্ধতার সবচাইতে শক্তিশালী চালক হিসাবে বিদ্যমান। একটি নৃগোষ্ঠী যখন পুঁজিবাদী হতে শুরু করে, যখন সে একটি কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র গঠন করে তখনই সে একটি জাতিতে পরিণত হয়। ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ আমাদের দেশের রাজনীতিতে কাছাকাছি আছে ইতিহাসের শুরু থেকে। মহাভারত থেকে আজকের খালেদা-হাসিনার রাজনীতিতে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ একে অন্যের হাত...

গাজওয়াতুল হিন্দ

গাজওয়াতুল হিন্দকে বর্তমান বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল শ্রীলংকার জিহাদীরা তাদের মনে আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে নানা মতাভেদ থাকলেও সকল মুসলিম জিহাদীরা মনে করে বা আ শা করে যে ইসলাম সারা পৃথীবিতে এই জিহাদের মাধ্যামে প্রতিষ্টা হবে। তারা এটাকে মর্যাদার্পূণ জিহাদ বলে মনে করে। ইসলামের ভিত্তির অন্যতম হলো জিহাদ। ইসলাম প্রতিষ্ঠাকালীন প্রচুর যুদ্ধ করা এবং হত্যার পরেই মানুষ ভয়ে ইসলামকে গ্রহন করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ভায়রাস বলা হয় ইসলামকে। এই ভায়রাস আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে গাজওয়াতুল হিন্দকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে জিহাদীরা তাদের দলে লোক বেসি করার জন্য অনলাইনে সহ নানা জাগাতে ঠিক এই ভাবে মুসলিমদের উপর প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে "গাজওয়াতুল হিন্দ বা ভারতবর্ষের যুদ্ধ সম্পর্কে কি আপনি অবগত? আপনি কি কাফের মুশরিকদের সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত?" ইসলামীষ্ট  জিহাদীরা ঠিক এভাবে চাই যে সারা পৃথিবীতে সবচে’ বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটা হবে হিন্দুস্তান তথা ভারতের হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যা সমস্থ জ্ঞানি ইসলামি স্কলার এবং আলেম উলামা জানে। মুসলমানদের জন্য এটা খুব বড়  জিহাদ এবং এই জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই...

বাঙালি এবং লেখকের জীবন

লেখকের বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত তার পরিবারের স্বীকৃতি।এখানে স্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে-লেখালেখি যে একটি কাজ,অন্য মতোই একটি কাজের, এবং সেই কাজের জন্য মনোযোগ,সময় এবং শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়-এই বোধটা তৈরী হওয়া।লেখালেখিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে নাই বা ধরা হলো। কিন্তু এটি যে একটি কাজ,এই স্বীকৃতিটা পরিবার থেকে আসা খুব প্রয়োজন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতি বান লেখক শেষ পর্যন্ত যে লেখক হয়ে উঠতে পারে না,লেখক জীবন যাপন করতে পারেন না,লেখালেখির জগত থেকে তাদের যে অকাল বিদায় নিতে হয়,তার সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।লেখালেখিকে পারিবারিক ভাবে স্বীকৃতি না দেওয়া।দেশের অন্য সব মানুষদের মতোই বেশির ভাগ পরিবারে লেখালেখি একটি নেহাৎ ই শখের জিনিস।তারুণ্য বা অংকুরোদ্গমী যৌবনে যৌনতার চুলকানিরও পেয়ে বসে আমাদের দেশের মানুষদের।তখন তাদের লেখাকে বাবাহা দেয় বাড়ির ভাবীরা,কাকা-জ্যাঠারা,সহপাঠীরা,বা তার কোন প্রেমিক-প্রেমিকাও।কখনো কখনো এমনকি বাবা মাও।তারা সকলেই অবচেতনে,এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানে যে,এই চুলকানি বেশিদিন থাকবে না।কিন্তু যার ক্ষেত্রে থেকে যায়,অর্থাৎ যে বুঝে যায় যে লেখক হওয়াটাই তার ভবিতব্য,সমস্যাটা তার ক্ষ...