এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এক টুকরো ইতিহাস

 

বর্তমানে সবচেয়ে বড় মিথ্যা কথা হলো উপমহাদেশীও মুসলিম আপর আরেক উপমহাদেশীও  মুসলিমের ভাই। মুসলিমদের ভিতরে কোন ঐক্য নেই। সামান্য অনুভুতি আহত হলে মিছিল জালাও পুড়াও ছাড়া অন্য সব জাগাতে কবি নিরব। হিটলার যে ৬০ লক্ষ ইহুদিদের  হত্যা করে ছিলো তার প্রতিশোধে এখন যদি ইহুদারা হামলা চালায় হিটলারের দেশে তাতে কি হবে? যুদ্ধ হবে মহামারি হবে বিশ্ব ব্যাপক অর্থনৈতিক ঝুকির মুখে পড়বে ব্যাস। জ্ঞান বিজ্ঞানের কোন ক্ষতি হবেনা সাধারন মানুষের মৃত্যু হবে পরিবার সমাজে যার প্রভাব পড়বে। একটু খেয়াল করে দেখেন ইহুদিরা আজ কত উন্নত। প্রতিশোধের চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে তারা জ্ঞান বিজ্ঞানের দিকে নজর দিয়েছে। নিজেদের কে একটা শক্তিশালি রাষ্ট্রে পরিনতি করেছে। মহাকাশ অভিযান দূর্লভ রোগের প্রতিশোধক কৃষিতে উন্নতি করেছে।

অথচ ইতিহাসে আপনি মুসলিমদের দেখেন। কয়েকটি মুসলিম বিজ্ঞানী ( আদতেও তারা মুসলিম ছিলো কিনা তা নিয়ে বিতর্ক আছে) ছাড়া উদ্ভনি বা কোন ক্ষেত্রে মুসলিমদের কোন অবদানই নেই। উপমহাদেশের কথায় বলি উনবিংশ শতাব্দীর বাংলায় সরকারি ও বেসরকারী প্রচেষ্টায় আধুনিক শিক্ষার উৎপত্তি ও বিকাশ হয়। ১৮৩৭ সালে ব্রিটিশ সরকার ফরাসির পরিবর্তে ইংরেজিকে সরকারি ও দফতারিক ভাষা ঘোষনা করে। কিন্তু এর সাথে সাথে মুসলিমদের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষার সাথে জটিল সংকট সৃষ্টি হয়। মাদ্রসা কেন্দ্রদিক মুসলমানেরা ইংরেজি শিক্ষার গ্রহনে আপরাগ জানায় এর মোল্লারা ইংরেজি শিক্ষাকে হারাম বলে ঘোষনা করে। পরবর্তিতে যদিও ১৮৭০ সালে মৌলানা কেরামত আলী জৌনপুরি ও প্রভাবশালী আলেমরা ইংরেজি শিক্ষার গ্রহনের ফতোয়া জারি করে। কিন্তু ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। মুসলিম সমাজ ইংরেজি গ্রহনে অনিহা যানানোর হিন্দু সমাজ তাদের থেকে অনেক এগিয়ে যায়। যার কারনে উনিশ শতকে মুসলিম সমাজ সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়ে। যারা ফলাফল ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময়ও ভোগ করতে হয়। উনিশ শতক ছিলো ঘটনা বহুল কিন্তু এই ঘটনার মধ্যে মুসলিমদের কোন অবদান ছিলোনা। ততকালীন বহু হিন্দু ইংরেজি এবং আধুনকি শিক্ষা গ্রহন করে ব্যাসার প্রসার ঘটিয়ে বহু অর্থ উর্পাজন করে অপর দিকে মুসলিম সম্রন্থ পরিবার ধংস হতে শুরু করে।

সমেস্যার সৃষ্টি হয় আরেক নতুন ভাবে অধুনিক শিক্ষা গ্রহনে হিন্দু সমাজ এগিয়ে গেলেও মুসলিম সমাজ পিছিয়ে থাকে যা দারুন মুসলিম উচ্চবিত্য মুসলিম পরিবার বিলিন হয়ে যায় এর ফলাফল নিন্মবিত্ত মুসলিম সমাজ রাষ্ট্রও ও বানিজ্যিক গুরুত্ব হারিয়ে ব্রিটিশ সব কিছু বর্জন করে। হিন্দু সমাজ যখন শিক্ষা গ্রহন করে অর্থ সমৃদ্ধ হচ্ছিল তখন মুসলিম সমাজ সবকিছু হারিয়ে তিব্র ব্রিটিশ বিরোধী এবং হিন্দু বিরোধী হয়। এখানে মানে রাখুন উনবিংশ শতাব্দীতে বাংলায় পুরাতন সমাজের ভাঙ্গাগড়ার সময়ে হিন্দু সমাজে একটি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেনীর বিকাশ হয়েছিল কিন্তু মুসলমান সমাজের ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষতি কোন নতুন সমাজ সৃষ্টি হয় নি। ফলে বাঙ্গালীর সৃংস্কৃতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তনের সৃষ্টি হয় অপর দিকে এই পরিবর্তনিও সমাজ ও সাংস্কৃতির চাপে মুসলমানেরা নিজেদের কে আড়াল করে পৃথক ভাবে সংগঠিত হয়। মুসলমানেরা তরিকায়ে মোহাম্মদীয় মাধ্যামে ধর্মীও আচার বিধানের দিকে ব্যাপক জোর দেয়। যার ফলাফল ব্রিটিশ শাষনকে দার-উল-হার্ব মনে করা হয় এবং পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রতি তিব্র ঘৃণার মনোভাব পোষন করে। পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবান সীরাজদৌলা ক্ষমাত হরালে ফরাসির পরিবর্তে ইংরেজি ভাষাক পাকপাকি ভাবে উপমহাদেশে জায়গা দখল করে নেয়। অন্যদিকে যারা বাংলায় খানদনী মুসলমান এবং অবাঙ্গালি তারা ব্রিটিশ শাষন ছেড়ে ভারতের উত্তরে চলে যায়। আর এই পরিস্থিতি বাংলার মুসলমানেদের দিসেহারা করে তোলে। ১৭৯৩-১৮২৮ সালের মধ্যে ব্রিটিশ সরকার লাখেরাজ ও ওয়াকফ সম্পত্তি বাজেযাপ্ত ও অনেক আইন তৈরি করে।  যার ফলাফল মুসলিমরা পাকাপাকি ভাবে কৃষিকে তাদের পেশা হিসেবে বেচে নিতে এবং উচ্চবর্ণ হিন্দু শ্রেনীর গোলামিতে চলে যেতে বাধ্য হয়। এই সময়ে আবারও মুসলিমরা শিক্ষার প্রতি আগ্রহ হারাতে থাকে। উনিশ শতকের প্রথম দিতে খুব কম মুসলিম ইংরেজি শিক্ষা গ্রহনের সাহস দেখায়। মিসনারী শিক্ষা এবং পঠ্যবয়ে খ্রিষ্টীয় শিক্ষা থাকার ফলে মুসলিম সমাজ এটা বর্জন করে এবং হিন্দু সমাজ এটাকে লুফে নেয়। তখন কোলকাতকে কেন্দ্র করে যে মধ্যবিত্ত শক্তিশালি সমাজ গড়ে উঠে তা মূলোতো হিন্দু শিক্ষিত মধ্যবিত্তের শিক্ষা গ্রহনের ফলাফল। ইংরেজি শিক্ষার প্রতি মুসলিম সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কাজি মোতাহার হোসেনের লেখা বই 'আমার জিবনীতে' তিনি উল্লেখ করে "ইংরেজি পড়িলে পাপ তো আছেই - ছোটখাটো শয়তান হয়ে আল্লাহ রাসূলের নাম মুখে আনেনা।

মুসলিমরা বারেবারে হারাম হলাল ধর্মের নামে নিজেদের ক্ষতি করে এসেছে। ২০০ কোটি মুসলমানের বাস পৃথীবিতে। এই সংখ্যা আরো বাড়ছে অথচ মুসলিমদের ধর্মীও বিশ্বাস গভির। অপর দিকে মুসলিমদের থেকেও ইহুদি খ্রিষ্টানেরা সংখায় বেসি হয়ে তারা ধর্ম নিয়ে পড়ে থাকেনা তাদের ধর্মীও বিশ্বাসের অতো গভীরতা নেয়। তারা জানে ধর্ম ভাত দেয় না রোগের প্রতিশেধক দেয় না মাহাকাশে নিয়ে যায় না তারা ধর্মের থেকে বেসি বিজ্ঞানে বিশ্বাসী। বলছিনা ইসলাম ঠিকবেনা ইসলাম টিকে থাকবে। কিন্তু ধর্মের নামে প্রহসন জালাও পুড়াও এই বিশ্বকে অস্থিশীল করে রাখবে। এতে ধর্মের কোন সার্থকতা নেয়। কোন মানুষের উদারতা, স্বার্থহীনতা, ক্ষমতাশীলতা ইত্যাদি গুনগুন নষ্ট করে ফেলে যে মতবাদ সেই মতবাদ কি ভালো। আপনি ইসলাম চান ভালো কথা আমি তো কখনো বলিনি যে আপনার ইসলামে দরকার নেয়। আপনার বাক স্বাধীনতায় ধর্মীও স্বাধীনতায় বাঁধা দেওয়ার অধিকার আমার নেয় তেমনি আপনিও আমার বাক স্বাধীনতাই বাঁধা দিতে পারেনা। আপনি রাজনৈতিক ইসলামে বিলপ্তু করুন উদারনৈতিক ইসলামের চর্চা করুন। ধর্মের নামে জ্বালাও পুড়াও বন্ধ করুন বাক স্বাধীনতার মূল্য দিন তাহলে পৃথীবি সুন্দর হবে। নয়তো বরাবরি নিজেরা নিজেদের শুত্র হয়ে হামলা হামলি কামড়া কামড়ি করতে করতে মুসলিমরা শেষ হয়ে যাবে ইতিহাস সাক্ষি।


-- সজিব হোসেন ( Sajib Hossain)



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ