সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ধর্মীয় সহিংসতা

কোন ব্যক্তি, প্রানী, সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে, শারীরিক শক্তি বা ক্ষমতার প্রয়োগ, প্রদর্শন বা প্রচারের ফলে, যদি উদ্দিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত্র হয়, যেমন - ভীতি, আঘাতপ্রাপ্তি, মনস্তাত্ত্বিক ক্ষতি, বঞ্চনা, অপূর্ণ বিকাশ, রক্তপাত বা প্রাণনাশ ইত্যাদি, তবে সেই কর্মকান্ডকে একবাক্যে বলা হয় সহিংসতা। এই ক্ষতির ধরনের মধ্যে শারীরিক নির্যাতন , মানসিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন ও আর্থিক ক্ষতি সবই অন্তর্ভুক্ত। পরিবেশ ও পরিস্থিতি ভেদে সহিংসতার ধরণ ভিন্ন; সে হতে পারে পারিবারিক সহিংসতা, গোষ্ঠী বা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, যৌন সহিংসতা, নারীর প্রতি সহিংসতা, শিশুর উপর সহিংসতা, ধর্মীয় সহিংসতা ইত্যাদি, ইত্যাদি, ইত্যাদি।
অসহিষ্ণু এই বিশ্বে ধর্মের নামে সহিংসতা বাড়ছে,এবং বাংলাদেশে এই ধর্মীয় সহিংসতার চরিত্র ইসলামিক, যার কারন এদেশের প্রধান ধর্ম ইসলাম।
সম্ভবত সে কারণেই, ইদানিং সর্বত্র বেশ জোরের সাথে উচ্চারিত হয়, 'ইসলাম শান্তির ধর্ম', কতিপয় স্বার্থান্বেষী ইসলামের নামে বদনাম করছে। তারা ইসলাম জানে না, ইসলাম পড়েনি; কয়েকটা সুরা মুখস্ত করে তারা মানুষকে জেহাদের পথে ডাকছে, মানুষ হত্যা করছে।
আসাদুজ্জামান কামাল নামের ভাঁড়টি, যিনি আবার এদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও, তিনি আবার পদলেহিতার পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে বলেছেন, এর সবই নাকি সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র।
মানব হত্যা এবং জঙ্গি তৎপরতার মত ভয়াবহ কর্মকান্ডকেও ষড়যন্ত্র মনে করা এই মহামূর্খ একথাও বলেছে যে, মাদকও নাকি এক ধরনের জঙ্গি, এবং সচেতনভাবেই এসব ফাঁকা ও খেলো বাক্য উচ্চারনে তারা আচ্ছাদিত করে ধর্মীয় সহিংসতার উগ্র রুপটিকে।
জীবনভর অনুধাবন ছাড়াই দুলে দুলে কোরআনের ধোঁয়াটে সুরেলা পংক্তিমালা গুলো মুখস্ত করা মডারেট মুসলমানরা চলমান সহিংসতার বিরুদ্ধে এই সমস্ত ফাঁকা বুলিতেই নিজেদের নিয়ত প্রবোধ দেয় এবং এইসব ভাবালুতাকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য আমদানি করে ছদ্মবিজ্ঞান আর অপবিজ্ঞানের সহায়তায় কল্পিত বিভিন্ন ব্যাখ্যা।


মডারেটদের এই ভণ্ডামোর ফাঁকেই ইসলাম আজ ধারণ করেছে দ্বিমাত্রিক এক চরিত্র। শুধুমাত্র গ্রন্থ বানীর ভিত্তিতে, হালাল-হারাম বিচার্যে দ্বিমাত্রিক ইসলামের মৌলবাদী সংস্কৃতি আপামর জনতার জীবন ধারনকে করেছে বৃত্তবন্দী; করেছে গন্ডিবদ্ধ এবং নিয়ন্ত্রিত
ইসলামের দুটো রুপ আছে; একটি হল ধর্মের নামে মরু-সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদি চিন্তাধারার অনুপ্রবেশ বা রাজনৈতিক ইসলাম, এবং অন্যটি হল নৈমিত্তিক ইসলাম বা আধ্যাত্মবাদী ধারা। এর মাঝে আধ্যাত্মবাদী ধারাটি, যার হাত ধরে এদেশ ইসলাম হয়েছিল বিকশিত, সেই ধারটি অধুনা প্রায় বিলুপ্ত; পক্ষান্তরে রাজনৈতিক ইসলামের ধারাটিই পরিণত হয়েছে ইসলামের মুল ধারাতে। সেকারনেই কোন অঞ্চলে সংস্কৃতির নামে চলমান কোন আচারকেই ইসলাম তার সংস্কৃতির অংশ বলে মেনে নেয়না। এ ক্ষেত্রে এমন কোন উদাহরণ নেই, যেখানে ইসলামের চেহারা মরু-সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন।
সংস্কৃতি হচ্ছে একটা অঞ্চলের নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর ভাষা, আচার, ব্যবহার, সাহিত্য, আনন্দ অনুষ্ঠান, রীতি-নীতি, শিক্ষা-দীক্ষা, সামাজিক সম্পর্ক, জীবিকা ইত্যাদির সমন্বয়ে গড়ে ওঠা জীবন বোধ ও অভিব্যক্তি।
ভৌগলিক, প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক কারনে বাঙালি সংস্কৃতির বাহ্যিক রুপ মরু-সংস্কৃতি হতে ভিন্ন ও সাংঘর্শিক। আর সেকারনেই মৌলবাদী মরু-সংস্কৃতি প্রবলভাবে বাঙালি সংস্কৃতি বিরোধী।
মৌলবাদী সংস্কৃতি তরুনদের মধ্যে আজ চালু করেছে গোঁফ ছাড়া দাড়ি রাখবার ফ্যাশন, মহিলাদের মধ্যে আছে রঙিন হিজাব আর প্রৌঢ় এবং বৃদ্ধদের জন্য চালু করেছে টাকনুর উপর প্যান্ট পড়বার চল।

মৌলবাদী সংস্কৃতির ধারনায় শুধুমাত্র যে কে কয়বার কিভাবে নামাজে দাঁড়াবে, হাত কিভাবে বাঁধবে, রুকু সেজদা কিভাবে দেবে সেটা অক্ষরে অক্ষরে পালন দাবি করে তাই না, বরং একটি শিশুর জন্মের সময় কি করনীয় থেকে শুরু করে শিশুর নামকরণ কিভাবে হবে, পোশাক নির্বাচন কি হবে, খাদ্য ও পানীয় কি হবে, কাকে বন্ধু ও আত্মীয় হিসেবে গ্রহণ করা যাবে - কাকে যাবেনা, জীবিকার জন্য কি পেশা গ্রহণ করা যাবে, বিয়ে-শাদীর উৎসব কি ভাবে হবে, আনন্দ অনুষ্ঠানের পরিধি কি হবে, চিত্ত বিনোদন কিভাবে হবে এমনকি মল মুত্র ত্যাগ বা সঙ্গম কিভাবে হবে তার সবই নির্ধারণ করে দেয়।
মৌলবাদীদের দাবী, এর সামান্যতম বিচ্যুতিতে ইসলামের আল্লাহ রুষ্ট হন এবং কল্পিত দোজখ বা বেহেশত প্রাপ্তি এই সব আচার পালনের মাধ্যমেই নির্ধারিত হয়।
মৌলবাদ মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রন করতে চায় শরিয়া আইন দিয়ে, দারুল ইসলাম বানিয়ে, খেলাফত প্রবর্তন করে। আর তার কর্মপদ্ধতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হল ধর্মের নামে মরু-সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদি চিন্তাধারার অনুপ্রবেশ।


গেল কুড়ি বছরে যে কৌশলে এ দেশে বিদায় সম্ভাষণ "খোদা-হাফেজ" কে "আল্লাহ-হাফেজে" পরিণত করেছে, হামদ-নাতের মত নির্মল সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে ব্রাত্য করেছে, হিজাবকে করে তুলেছে জনপ্রিয়, তাতেই এদের সুক্ষ্ম এবং সুদূর প্রসারী কর্মপদ্ধতি অনুমিত হয়।
মৌলবাদের দাবী, ইসলামে ধর্মান্তরিত একজন মানুষকে আবশ্যিক ভাবেই আরব সাংস্কৃতিক আধিপত্যকে গ্রহণ করতে হবে; নবী মোহাম্মদকে স্বীকৃতি দিয়ে হবে সর্বোচ্চ আদর্শরূপে, মেনে নিতে হবে বর্বর ইসলামিক আইনকে, মেনে নিতে হবে আরবিকে শ্রেষ্ঠতম ভাষা হিসেবে, সর্বোপরি মেনে নিতে হবে যে নিজ সংস্কৃতি ও জন্মভূমি পবিত্র আরব ভূমির তুলনায় হীন। মুসলমানেদের হয়ে ওঠতে হবে মরু-সংস্কৃতির সেবাদাস।
আগ্রাসী এই মরু সংস্কৃতি আশৈশব, নারী পুরুষ নির্বিশেষে মানুষকে শেখায় ঘৃনা পুষে রাখতে; চরম বর্বরতায় যুথবদ্ধভাবে পাথর নিক্ষেপ করে সে ঘৃণা প্রকাশ করতে। শৈশব থেকে দুষিত এই মতদীক্ষায় গড়ে ওঠা শিশু ক্রমশ হয়ে ওঠে বর্বরতার (ধর্মত্যাগে শিরোচ্ছেদ, পাথর ছুঁড়ে হত্যা, ইত্যাদি) সমর্থক। ইসলামের ওয়াহাবি চরিত্রটি বিশ্বব্যাপী দ্রুত গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে; একদিকে জাকির নায়েক, বিল্লাল ফিলিপসের মত সুবক্তাদের উদ্যোগে ক্রমাগত প্রচারনা, সৌদিদের বিলিয়ন বিলিয়ন বিনিয়োগ, সর্বস্তরে নামাজ-রোজা-আরবি শেখার ধুম, আর অন্যদিকে রয়েছে সরকারী উদ্যোগে ঈমাম ভাতা, প্রতিটি জেলা-উপজেলায় এসি মসজিদের স্থাপনা, পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িক পাঠ্যক্রমের উপস্থিতি; মৌলবাদ তোষণের এই প্রবনতাটি আজ মানুষের উপর সামাজিক ও মনস্তাত্বিক চাপ সৃষ্টি করে তাদের করে তুলেছে অনিরাপদ ও অরক্ষিত।
শান্তির সর্বজনীন সংজ্ঞায়, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, পরমতসহিষ্ণুতা, পারস্পরিক সম্প্রীতি এবং সম্মতিঢ় বিষয়গুলো মুখ্য, যার ভিত্তিতে সার্বিক নাগরিক জীবনে অপসারিত হয় অনাকাঙ্ক্ষিত বিঘ্ন, প্রতিষ্ঠিত হয় প্রশান্তির স্থিতি।

ইসলামের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে শান্তির জন্য আত্মসমর্পণ; হাদিসে আছে, ‘সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! ইসলামে কোন্ কাজটি উত্তম? তিনি বললেনঃ যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে।’ (ঈমান অধ্যায় :: সহিহ বুখারী :: খন্ড ১ :: অধ্যায় ২ :: হাদিস ১০)।


তাই কোনো মুসলমানের সঙ্গে অন্য কোনো মুসলমানের দেখা-সাক্ষাৎ হলে ইসলামের সম্ভাষণরীতি হলো সালাম বা শান্তি, নিরাপত্তা ও কল্যাণ কামনা।
কিন্তু হিমশীতল সত্য হল এই যে, ইসলামের এই চমৎকার কল্যান কামনার অভ্যেসটি কেবলমাত্র মুসলমানদের জন্যই নির্দিষ্ট, অমুসলিম বা অবিশ্বাসীদের জন্য নয়। নয় ইসলামের দৃষ্টিতে যারা বিপথগামি মুসলমান তাদের জন্যও। বরং কোরআনে সুস্পষ্টভাবে তাদের জন্য বর্ণিত আছে শাস্তির কথা; যার পরিনতি মৃত্যু বা ধর্মান্তকরন বা জিজিয়া প্রদান। ভণ্ড মডারেটরা বিব্রত হয়ে গোপন করতে চাইলেও রাজনৈতিক ইসলাম এই সত্যটিকে অত্যন্ত কঠোরভাবে অনুসরণ ও প্রচার করে।


ইসলাম শান্তির ধর্ম বাক্যটি কেবলমাত্র সেই মুসলমানদের জন্যেই সত্য যারা মৌলবাদের সংস্কৃতির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে, অন্যথায় তারা কাফের বা মুরতাদ এবং তাদের উপর যুদ্ধ ফরজ, কারন রাজনৈতিক ইসলাম এটাই প্রমাণ করতে চায় যে, নৈমিত্তিক ইসলাম নয়, বরং সশস্ত্র জিহাদী ভূমিকাই ইসলামের মৌলিকত্ব।

লিখেছেন: চর্বাক কাজী।

সুরুজ সিরিজ পর্ব ২
  NEXT-শরিয়া আইনে ধর্ষণ এর সাজা

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জাতীয়তাবাদ আরেকটি ধর্ম বই

বাংলাদেশীরা ধর্মভীরু। ইসলাম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ও জাতীয়তাবাদ নামক ধর্মগুলোর প্রতি বাঙ্গালীর দুর্বলতা নতুন কিছু নয়। আমরা যারা মুক্ত-চেতনাকে প্রয়োজনীয় মনে করি, যুক্তিকে ধর্মের ওপরে স্থান দেই তাদের অনেকেই ধর্মের মতই সামনে আসা অন্যান্য প্রতিটি ধারনা ও প্রস্তাবনাকেই যুক্তি দিয়ে বুঝতে চাই, খতিয়ে দেখতে চাই। বা দদূএকটি রূপ আধ্যাত্মিকতা ও ধর্ম হিসাবে মানুষের দলবদ্ধ সমাজব্যবস্থার দ্বিতীয় বড় চালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রস্তরযুগে আরো একটি ঘটনা ঘটতে শুরু করেছিল। মানুষেরা নিজেদের গ্রাম বা নগরকে কেন্দ্র করে একটি সামষ্টিক পরিচিতি অনুভব করে শুরু করেছিল। বোধ করি তখন থেকেই মানুষের দলবদ্ধতার তৃতীয় চালক জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক যাত্রা শুরু। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় জাতীয়তাবাদ নানান চেহারায় দলবদ্ধতার সবচাইতে শক্তিশালী চালক হিসাবে বিদ্যমান। একটি নৃগোষ্ঠী যখন পুঁজিবাদী হতে শুরু করে, যখন সে একটি কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র গঠন করে তখনই সে একটি জাতিতে পরিণত হয়। ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ আমাদের দেশের রাজনীতিতে কাছাকাছি আছে ইতিহাসের শুরু থেকে। মহাভারত থেকে আজকের খালেদা-হাসিনার রাজনীতিতে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ একে অন্যের হাত...

গাজওয়াতুল হিন্দ

গাজওয়াতুল হিন্দকে বর্তমান বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল শ্রীলংকার জিহাদীরা তাদের মনে আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে নানা মতাভেদ থাকলেও সকল মুসলিম জিহাদীরা মনে করে বা আ শা করে যে ইসলাম সারা পৃথীবিতে এই জিহাদের মাধ্যামে প্রতিষ্টা হবে। তারা এটাকে মর্যাদার্পূণ জিহাদ বলে মনে করে। ইসলামের ভিত্তির অন্যতম হলো জিহাদ। ইসলাম প্রতিষ্ঠাকালীন প্রচুর যুদ্ধ করা এবং হত্যার পরেই মানুষ ভয়ে ইসলামকে গ্রহন করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ভায়রাস বলা হয় ইসলামকে। এই ভায়রাস আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে গাজওয়াতুল হিন্দকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে জিহাদীরা তাদের দলে লোক বেসি করার জন্য অনলাইনে সহ নানা জাগাতে ঠিক এই ভাবে মুসলিমদের উপর প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে "গাজওয়াতুল হিন্দ বা ভারতবর্ষের যুদ্ধ সম্পর্কে কি আপনি অবগত? আপনি কি কাফের মুশরিকদের সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত?" ইসলামীষ্ট  জিহাদীরা ঠিক এভাবে চাই যে সারা পৃথিবীতে সবচে’ বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটা হবে হিন্দুস্তান তথা ভারতের হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যা সমস্থ জ্ঞানি ইসলামি স্কলার এবং আলেম উলামা জানে। মুসলমানদের জন্য এটা খুব বড়  জিহাদ এবং এই জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই...

বাঙালি এবং লেখকের জীবন

লেখকের বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত তার পরিবারের স্বীকৃতি।এখানে স্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে-লেখালেখি যে একটি কাজ,অন্য মতোই একটি কাজের, এবং সেই কাজের জন্য মনোযোগ,সময় এবং শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়-এই বোধটা তৈরী হওয়া।লেখালেখিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে নাই বা ধরা হলো। কিন্তু এটি যে একটি কাজ,এই স্বীকৃতিটা পরিবার থেকে আসা খুব প্রয়োজন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতি বান লেখক শেষ পর্যন্ত যে লেখক হয়ে উঠতে পারে না,লেখক জীবন যাপন করতে পারেন না,লেখালেখির জগত থেকে তাদের যে অকাল বিদায় নিতে হয়,তার সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।লেখালেখিকে পারিবারিক ভাবে স্বীকৃতি না দেওয়া।দেশের অন্য সব মানুষদের মতোই বেশির ভাগ পরিবারে লেখালেখি একটি নেহাৎ ই শখের জিনিস।তারুণ্য বা অংকুরোদ্গমী যৌবনে যৌনতার চুলকানিরও পেয়ে বসে আমাদের দেশের মানুষদের।তখন তাদের লেখাকে বাবাহা দেয় বাড়ির ভাবীরা,কাকা-জ্যাঠারা,সহপাঠীরা,বা তার কোন প্রেমিক-প্রেমিকাও।কখনো কখনো এমনকি বাবা মাও।তারা সকলেই অবচেতনে,এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানে যে,এই চুলকানি বেশিদিন থাকবে না।কিন্তু যার ক্ষেত্রে থেকে যায়,অর্থাৎ যে বুঝে যায় যে লেখক হওয়াটাই তার ভবিতব্য,সমস্যাটা তার ক্ষ...