সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমাদের তো লিঙ্গ গর্ব আছে।পুরুষ লিঙ্গ!নারী লিঙ্গ!



আমরা ভাষার লড়াই নিয়ে অতীতের আবেগ অনেক ফেনায়িত করতে ভালোবাসি, কিন্তু ভাবতে পারি না সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু করতে বাঁধা আসলে কোথা থেকে আসে স্বাধীন দেশে।একই কথা খাটে মুক্তিযুদ্ধের বেলায়ও।
আবেগে থইথই মস্তিষ্ক সচেতনভাবে সেই উপাদান দুরে রাখে যে লক্ষ প্রাণ বিসর্জনে যে দেশ ও সমাজ আমরা চেয়েছিলাম, তা কেন চুয়াল্লিশ বছরেও হলো না? এরকম শত শত হাজারটা অসংগতিতে ভরে আছে চারপাশ। কিন্তু আমরা প্রশ্নহীন। সেই অর্থে ভাবনাহীন।আমরা কি তবে স্পর্শকাতরতা হারালাম? না মোটেও তা নয়। এই যে পথচলিত সময়ে নুলা ভিখারি, ভ্রাম্যমাণ হকার ও ফেরিয়ালা এবং হিজড়া আসে কাছে, উপায়হীন হাত মেলে ধরে সামনে আমরা তাড়িত হই তো! আনন্দে নয় ক্ষোভে।
উপদ্রব শব্দটি ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন হয় না।মশা, তেলোপোকা, ছারপোকা, ফুটপাতের হকার এবং সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য চাঁদাবাজদের কথা শুনা যায়। মানুষ ছাড়া অন্য প্রানীর উপদ্রব থেকে মুক্তির জন্য নানা রকমের ঔষুধ পাওয়া যায় সেগুলো কখনো কার্যকর কখনো নয়। সমাজে ময়লা আছে, তাই আমাদের মন ময়লা তাই রাস্তাঘাট ময়লা এই বোধ যদি আমাদের একমত করে, তাহলে এইও সত্যি যে দেশে অভাব আছে, দারিদ্র্য আছে, উপায় হীনতা আছে। তাই উপায় সর্বস্বদের সামনে উপায় হীন শুন্য রিক্ত করতল প্রসারিত হয় সাহায্যের আশায়। সারা দেশে বসবাস কারী হিজড়া সম্প্রদায়ও তো উপায় হীন।ভিক্ষুকদের কেউ ঘৃণা করে না। বড়জোর পিতৃসুলভ উপদেশ দেয়। কাজ করে খেতে পারো না? যদিও উপদেশ দাতা কাজের সন্ধানটি দিতে পারে না। কিন্তু হিজড়া? আমাদের কৌতূহলী অ জ্ঞান চোখে তারা সম্পূর্ণ মানুষ নয়,তামাশার উপাদান অথবা বিকৃত যৌনাচারের সঙ্গী। দেশের শীর্ষস্থানীয় গণ মাধ্যমে প্রকাশিত সাম্প্রতিক সময়ে হিজড়া সম্প্রদায় নিয়ে, বিশেষ করে তাদের উপদ্রব নিয়ে সরব হয়ে উঠেছে। ফলাফলও হয়েছে তাড়িত। কদিন ধরে ঢাকা শহরের পথে বা সিগন্যালে তাদের উপস্থিতি অদৃশ্য। রাষ্ট্র বা প্রশাসন চাইলে কিনা হয়। এরা অনাচার অত্যাচার জবরদস্তির চূড়ান্ত করে ছাড়তো পথ চলত কিংবা গৃহবাসী সুধীজনদের। হাঁফ ছেড়ে স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়েছি নিশ্চয়ই সবাই।
মনে পড়ে যায় আরও একজন হাঁফ ছাড়া স্বস্তির নিশ্বাস এনে দিয়েছিল একজন হিজড়া। ২০১৫ সালের ৩০ মার্চ রাজধানীর বেগুন বাড়িতে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে চাপাতি দিয়ে খুন করে যখন ধর্মান্ধ ইসলামী জঙ্গি দলটি পালাচ্ছিল।
ভীত হত বিহ্বল অথবা দায় হীন পথিকেরা দাড়িয়ে পড়েছিল ক্রিয়াহীন, তখন হত্যাকারী দুই তরুণ কে একাই ধরে ফেলেছিলেন লাবণ্য নামের একজন হিজড়া। সাবাস সাবাস রব উঠেছিল সেদিন।আমরা ফিস ফিস করতেছিলাম একজন হিজড়া ওদের দুজনকে ধরে ফেললো। অন্য অনেকের চেয়েও বেশি সাহসী হয়েও লাবণ্য সেদিনও আমাদের চোখে হিজড়ার বাইরে মানুষ হয়ে উঠতে পারেননি। আমাদের বিস্ময় সেদিন প্রধানত এ কারণে তৈরি হয়নি যে একজন মানুষ কীভাবে ছুটন্ত দুইজন মানুষকে ধরে ফেললো।আমরা বিস্মিত হয়েছি এই অনুভুতি নিয়ে একজন হিজড়া দুজন জঙ্গিকে ধরে ফেলেছে।যদিও পরবর্তী সময়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না পেয়ে লাবণ্য ওই এলাকা ছেড়ে চলে যায়। আমরা কেউ তার খবর রাখি নি।
আমাদের এখানে ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার উওরায় টাকা তোলা নিয়ে দ্বদ্ধের জের হিসাবে একদল তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ আরেক দলের আরেকজনকে গুলি করেছে। জানি এ নিয়ে এখনই কোন সাহিত্য উপাদান আমাদের ভুগি চোখে ধরা পরবে না। কয়েকটা প্রশ্ন নিজেকে করবো আমরা? কেন এরা পথে নামে জবরদস্তি করে, মুখে রং মাখে, আবার মোটরসাইকেল পায়, গুলি করে? আমাদের তো লিঙ্গ গর্ব আছে।পুরুষলিঙ্গ। নারী লিঙ্গ। কী হচ্ছে তাতে?

লিখেছেনঃশহীদুজ্জামান সরকার।
prev post
next post

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জাতীয়তাবাদ আরেকটি ধর্ম বই

বাংলাদেশীরা ধর্মভীরু। ইসলাম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ও জাতীয়তাবাদ নামক ধর্মগুলোর প্রতি বাঙ্গালীর দুর্বলতা নতুন কিছু নয়। আমরা যারা মুক্ত-চেতনাকে প্রয়োজনীয় মনে করি, যুক্তিকে ধর্মের ওপরে স্থান দেই তাদের অনেকেই ধর্মের মতই সামনে আসা অন্যান্য প্রতিটি ধারনা ও প্রস্তাবনাকেই যুক্তি দিয়ে বুঝতে চাই, খতিয়ে দেখতে চাই। বা দদূএকটি রূপ আধ্যাত্মিকতা ও ধর্ম হিসাবে মানুষের দলবদ্ধ সমাজব্যবস্থার দ্বিতীয় বড় চালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রস্তরযুগে আরো একটি ঘটনা ঘটতে শুরু করেছিল। মানুষেরা নিজেদের গ্রাম বা নগরকে কেন্দ্র করে একটি সামষ্টিক পরিচিতি অনুভব করে শুরু করেছিল। বোধ করি তখন থেকেই মানুষের দলবদ্ধতার তৃতীয় চালক জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক যাত্রা শুরু। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় জাতীয়তাবাদ নানান চেহারায় দলবদ্ধতার সবচাইতে শক্তিশালী চালক হিসাবে বিদ্যমান। একটি নৃগোষ্ঠী যখন পুঁজিবাদী হতে শুরু করে, যখন সে একটি কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র গঠন করে তখনই সে একটি জাতিতে পরিণত হয়। ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ আমাদের দেশের রাজনীতিতে কাছাকাছি আছে ইতিহাসের শুরু থেকে। মহাভারত থেকে আজকের খালেদা-হাসিনার রাজনীতিতে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ একে অন্যের হাত...

গাজওয়াতুল হিন্দ

গাজওয়াতুল হিন্দকে বর্তমান বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল শ্রীলংকার জিহাদীরা তাদের মনে আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে নানা মতাভেদ থাকলেও সকল মুসলিম জিহাদীরা মনে করে বা আ শা করে যে ইসলাম সারা পৃথীবিতে এই জিহাদের মাধ্যামে প্রতিষ্টা হবে। তারা এটাকে মর্যাদার্পূণ জিহাদ বলে মনে করে। ইসলামের ভিত্তির অন্যতম হলো জিহাদ। ইসলাম প্রতিষ্ঠাকালীন প্রচুর যুদ্ধ করা এবং হত্যার পরেই মানুষ ভয়ে ইসলামকে গ্রহন করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ভায়রাস বলা হয় ইসলামকে। এই ভায়রাস আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে গাজওয়াতুল হিন্দকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে জিহাদীরা তাদের দলে লোক বেসি করার জন্য অনলাইনে সহ নানা জাগাতে ঠিক এই ভাবে মুসলিমদের উপর প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে "গাজওয়াতুল হিন্দ বা ভারতবর্ষের যুদ্ধ সম্পর্কে কি আপনি অবগত? আপনি কি কাফের মুশরিকদের সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত?" ইসলামীষ্ট  জিহাদীরা ঠিক এভাবে চাই যে সারা পৃথিবীতে সবচে’ বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটা হবে হিন্দুস্তান তথা ভারতের হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যা সমস্থ জ্ঞানি ইসলামি স্কলার এবং আলেম উলামা জানে। মুসলমানদের জন্য এটা খুব বড়  জিহাদ এবং এই জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই...

বাঙালি এবং লেখকের জীবন

লেখকের বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত তার পরিবারের স্বীকৃতি।এখানে স্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে-লেখালেখি যে একটি কাজ,অন্য মতোই একটি কাজের, এবং সেই কাজের জন্য মনোযোগ,সময় এবং শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়-এই বোধটা তৈরী হওয়া।লেখালেখিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে নাই বা ধরা হলো। কিন্তু এটি যে একটি কাজ,এই স্বীকৃতিটা পরিবার থেকে আসা খুব প্রয়োজন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতি বান লেখক শেষ পর্যন্ত যে লেখক হয়ে উঠতে পারে না,লেখক জীবন যাপন করতে পারেন না,লেখালেখির জগত থেকে তাদের যে অকাল বিদায় নিতে হয়,তার সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।লেখালেখিকে পারিবারিক ভাবে স্বীকৃতি না দেওয়া।দেশের অন্য সব মানুষদের মতোই বেশির ভাগ পরিবারে লেখালেখি একটি নেহাৎ ই শখের জিনিস।তারুণ্য বা অংকুরোদ্গমী যৌবনে যৌনতার চুলকানিরও পেয়ে বসে আমাদের দেশের মানুষদের।তখন তাদের লেখাকে বাবাহা দেয় বাড়ির ভাবীরা,কাকা-জ্যাঠারা,সহপাঠীরা,বা তার কোন প্রেমিক-প্রেমিকাও।কখনো কখনো এমনকি বাবা মাও।তারা সকলেই অবচেতনে,এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানে যে,এই চুলকানি বেশিদিন থাকবে না।কিন্তু যার ক্ষেত্রে থেকে যায়,অর্থাৎ যে বুঝে যায় যে লেখক হওয়াটাই তার ভবিতব্য,সমস্যাটা তার ক্ষ...