সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

একনায়ক (১ম পর্ব)


গতকাল ওবায়দুল কাদের বলেছিলো আওয়ামীলীগে নাকি শুদ্ধি অভিযান হবে। তার মানে আওয়ামীলীগ অশুদ্ধ হয়ে গেছে। তাহলে প্রশ্ন আসে আপনারা থাকতে এসব কিভাবে হলো? যখন হলো তখন আপনারা কি করছিলেন?

বাঁধা কেনো দেন দেননি? যেহেতু আপনারা বাঁধা দেননি সে গুলোকে এতদিন প্রশ্রয় দিয়েছেন? আচ্ছা ধরে নিলাম আপনারা এসব এতদিন জানতেন না। এসব আপনাদের অগোচরেই হয়েছে। তাহলে এখন যেহেতু জেনে গেছেন সেহেতু ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেনো? শেখ মুজিবের আদর্শকে যারা গলাটিপে হত্যা করছে।।


তাদেরকে চোখের সামনে দেখেও তাদের অপকর্মের বিচার শুধু "অভিযান চালাবো" বলে অনির্দিষ্ট ভবিষ্যতের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন কেনো? নাকি আপনারা ভয় পাচ্ছেন? ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলে "Dictator Rule Book" নামে একটা অনুষ্ঠান হয় আমি প্রায়শই ওটা দেখি। সেখানে দেখানো হয় কিভাবে পৃথিবীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশের এক নায়কেরা কিভাবে সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন করেছে। শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা নিজেদেরকে প্রকাশ করেছে ঈশ্বর রূপে। আর তাদের চ্যালা চামুন্ডারা সারাদিন তাদের গুণো গান করতো।

 সরকারি লোকেদের সাহায্যে ক্ষমতায় টিকে থাকতে গিয়ে সেইসব এক নায়কেরা ভুলে যেত যে জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। সরকারি আমলা কামলারা দুহাতে লুটপাট করতো সরকারী সম্পত্তি আর একনায়কদের অনেকটা চোখ বন্ধ করে সেসব সহ্য করতে হতো। সেটা তারা চান কিংবা না চান। আসলে একনায়কের প্রথমে এইসব সরকারি লোকেদের চালালেও একসময় এইসব সরকারি লোকেরাই তাকে চালায়। লুটপাট, চুরি, দুর্নীতি, খুন, ধর্ষণ সহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা এক নায়কের চ্যালারা করে না।


 আর বেচারা এক নায়ক ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে চাইলেও তার কিছু করার থাকেনা। কারন ঐসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে তার গদি থাকবে না। ঐ অনুষ্ঠানটা দেখতে দেখতে একদিন আমার মা বলছিলো "আরে এসব তো আমাদের দেশেও হচ্ছে"। যাই হোক সেদিন মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নাকি বলেছেন। সরকারি কর্মচারীদের এসব দুর্নীতির কারনে নাকি সরকার বিব্রত হচ্ছে। বেশ ভাল কথা কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয় বিব্রত হয়ে এসব বন্ধে কি ব্যবস্থা নিয়েছেন?

যদি প্রশ্ন করি বালিশ, পর্দা আর টিনের টাকা চোরেদের কেনো জেলে দেওয়া হলোনা? যদি বলি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি যে ছাত্রলীগের ছেলেদেরে কোটি টাকা ঈদের সালামী দিলো তার টাকার উৎস কি? সেই টাকা সে কোথায় পেলো? যদি প্রশ্ন করি ৪০ লাখ দিয়ে পদ কিনে যে নেতা হয়েছে তাকে কেনো আইনের আওতায় আনা হচ্ছেনা? যদি জানতে চাই অশুদ্ধ লোকেদের নিয়ে কেনো আপানারা এখনও কেনো দেশ চালাচ্ছেন? এসবেরে কোনো উত্তর আসবে না। আর কেনো আসবে না সেটা আশাকরি পাঠককে আর বলে দিতে হবেনা।

 হয়ত প্রশ্ন করার অপরাধে আমিই গুম হয়ে যেতে পারি। তবে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি ঐ অনুষ্ঠানে দেখানো হয় এক নায়কেরা যতই ক্ষমতাশালী হোক না কেনো একদিন তাদেরও পতন হয় আর সেসব পতন হয় খুবই করুন। ক্ষমতাশালী ঈশ্বর হয়ে যায় ক্ষমতাহীন মাটির পুতুল। তখন কিন্তু তার আমলারা তার কাজের দায়ভার কাধে নেয় না। বেচারি এক নায়ক'কেই বইতে হয় সবার পাপের বোঝা। লিখেছেন- Adword Rahul

↑PREVIOUS-আরব্য সংস্কৃতির দাস এবং বাংলাদেশি মিসকিনদের অবস্থান 

NEXT-কে মুসলমান কারা মুসলিম নামের ভন্ড

মন্তব্যসমূহ

  1. অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। বেঁচে থাকুক আপনার বাংলা ব্লগ

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মুক্তচিন্তার সাথে হোক আপনার পথ চলা।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জাতীয়তাবাদ আরেকটি ধর্ম বই

বাংলাদেশীরা ধর্মভীরু। ইসলাম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ও জাতীয়তাবাদ নামক ধর্মগুলোর প্রতি বাঙ্গালীর দুর্বলতা নতুন কিছু নয়। আমরা যারা মুক্ত-চেতনাকে প্রয়োজনীয় মনে করি, যুক্তিকে ধর্মের ওপরে স্থান দেই তাদের অনেকেই ধর্মের মতই সামনে আসা অন্যান্য প্রতিটি ধারনা ও প্রস্তাবনাকেই যুক্তি দিয়ে বুঝতে চাই, খতিয়ে দেখতে চাই। বা দদূএকটি রূপ আধ্যাত্মিকতা ও ধর্ম হিসাবে মানুষের দলবদ্ধ সমাজব্যবস্থার দ্বিতীয় বড় চালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রস্তরযুগে আরো একটি ঘটনা ঘটতে শুরু করেছিল। মানুষেরা নিজেদের গ্রাম বা নগরকে কেন্দ্র করে একটি সামষ্টিক পরিচিতি অনুভব করে শুরু করেছিল। বোধ করি তখন থেকেই মানুষের দলবদ্ধতার তৃতীয় চালক জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক যাত্রা শুরু। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় জাতীয়তাবাদ নানান চেহারায় দলবদ্ধতার সবচাইতে শক্তিশালী চালক হিসাবে বিদ্যমান। একটি নৃগোষ্ঠী যখন পুঁজিবাদী হতে শুরু করে, যখন সে একটি কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র গঠন করে তখনই সে একটি জাতিতে পরিণত হয়। ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ আমাদের দেশের রাজনীতিতে কাছাকাছি আছে ইতিহাসের শুরু থেকে। মহাভারত থেকে আজকের খালেদা-হাসিনার রাজনীতিতে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ একে অন্যের হাত...

গাজওয়াতুল হিন্দ

গাজওয়াতুল হিন্দকে বর্তমান বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল শ্রীলংকার জিহাদীরা তাদের মনে আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে নানা মতাভেদ থাকলেও সকল মুসলিম জিহাদীরা মনে করে বা আ শা করে যে ইসলাম সারা পৃথীবিতে এই জিহাদের মাধ্যামে প্রতিষ্টা হবে। তারা এটাকে মর্যাদার্পূণ জিহাদ বলে মনে করে। ইসলামের ভিত্তির অন্যতম হলো জিহাদ। ইসলাম প্রতিষ্ঠাকালীন প্রচুর যুদ্ধ করা এবং হত্যার পরেই মানুষ ভয়ে ইসলামকে গ্রহন করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ভায়রাস বলা হয় ইসলামকে। এই ভায়রাস আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে গাজওয়াতুল হিন্দকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে জিহাদীরা তাদের দলে লোক বেসি করার জন্য অনলাইনে সহ নানা জাগাতে ঠিক এই ভাবে মুসলিমদের উপর প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে "গাজওয়াতুল হিন্দ বা ভারতবর্ষের যুদ্ধ সম্পর্কে কি আপনি অবগত? আপনি কি কাফের মুশরিকদের সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত?" ইসলামীষ্ট  জিহাদীরা ঠিক এভাবে চাই যে সারা পৃথিবীতে সবচে’ বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটা হবে হিন্দুস্তান তথা ভারতের হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যা সমস্থ জ্ঞানি ইসলামি স্কলার এবং আলেম উলামা জানে। মুসলমানদের জন্য এটা খুব বড়  জিহাদ এবং এই জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই...

বাঙালি এবং লেখকের জীবন

লেখকের বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত তার পরিবারের স্বীকৃতি।এখানে স্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে-লেখালেখি যে একটি কাজ,অন্য মতোই একটি কাজের, এবং সেই কাজের জন্য মনোযোগ,সময় এবং শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়-এই বোধটা তৈরী হওয়া।লেখালেখিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে নাই বা ধরা হলো। কিন্তু এটি যে একটি কাজ,এই স্বীকৃতিটা পরিবার থেকে আসা খুব প্রয়োজন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতি বান লেখক শেষ পর্যন্ত যে লেখক হয়ে উঠতে পারে না,লেখক জীবন যাপন করতে পারেন না,লেখালেখির জগত থেকে তাদের যে অকাল বিদায় নিতে হয়,তার সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।লেখালেখিকে পারিবারিক ভাবে স্বীকৃতি না দেওয়া।দেশের অন্য সব মানুষদের মতোই বেশির ভাগ পরিবারে লেখালেখি একটি নেহাৎ ই শখের জিনিস।তারুণ্য বা অংকুরোদ্গমী যৌবনে যৌনতার চুলকানিরও পেয়ে বসে আমাদের দেশের মানুষদের।তখন তাদের লেখাকে বাবাহা দেয় বাড়ির ভাবীরা,কাকা-জ্যাঠারা,সহপাঠীরা,বা তার কোন প্রেমিক-প্রেমিকাও।কখনো কখনো এমনকি বাবা মাও।তারা সকলেই অবচেতনে,এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানে যে,এই চুলকানি বেশিদিন থাকবে না।কিন্তু যার ক্ষেত্রে থেকে যায়,অর্থাৎ যে বুঝে যায় যে লেখক হওয়াটাই তার ভবিতব্য,সমস্যাটা তার ক্ষ...