এই ব্লগটি সন্ধান করুন

রোহিঙ্গা অভিশাপ নাকি আশীর্বাদ


রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রচলিত একটা কথা হলো "বার্মা গেলে এবার কেউ আর বাঁচবে না "। এই কথা প্রথম কে বলেছিলো কিংবা রোহিঙ্গারা কিভাবে জানলো সেসব জানিনা। কেউ কোনোদিন খুজেও দেখেনি। তবে কেউ না কেউ তো কথাটা অবশ্যই ছড়িয়েছে। যাতে ওরা ভয়ে আর যেতে না চায়। যারা রোহিঙ্গাদেরকে শুধুমাত্র টিভিতে দেখেছেন আর পত্রিকায় কিছু কিছু হেডলাইন পড়েছেন তারা প্রশ্ন করতে পারেন কে আছে যে চায়না রোহিঙ্গারা ফেরৎ যাক?
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আমি বুঝেছি যে আসলে হাতে গোনা কিছু লোক বাদে ঐসব অঞ্চলের বাকি কেউই চায়না যে ওরা ফিরে যাক। নেতা,আমলা,কামলা, প্রশাসন এমনকি সাধারন জনগোষ্ঠীর বিশাল একটা অংশ যারা ইয়াবা চোরাচালান এবং ব্যবসার সাথে জড়িত ও তাদের পরিবারের সদস্যরা এমনকি সরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকরাও চায়না যে ওরা ফিরে যাক। কারন তাহলে ক্লাস নিতে হবে।
বসে বসে বেতন আর পাওয়া যাবেনা।সেদিন দেখলাম কিছু কিছু এনজিও কৃষি সরঞ্জামের নামে ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের হাতে তুলে দিচ্ছে দাঁ-বডি-কুড়াল সহ নানাবিধ দেশীয় অস্ত্র। কিন্তু পুলিশ শুধু মাত্র এসব জিনিস জব্দ করেছে কাউকে গ্রেফতার করা তো দূরে থাক ঐসব এনজিও গুলোর নাম পর্যন্ত বলেনি। যদি প্রশ্ন করা হয় কেনো এই লুকোচুরি? তাহলে কোনো উত্তর আসবে না। আর উত্তর না আসাটাই স্বাভাবিক। কারন ঐসব এনজিও গুলোর বেশি ভাগই মধ্যপ্রাচ্য তথা ইসলামিক দেশগুলো থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসেছে। সাহায্য দেবার নামে এরা গন্ডায় গন্ডায় মসজিদ আর মাদ্রাসা খুলে শিক্ষার নামে জঙ্গিবাদের বীজ বপন করছে। যদিও কখনও চোখে দেখেনি তবে স্থানীয় লোকেদের কাছে শুনেছি ক্যাম্পে শুধু দেশি না অনেকের কাছে বিদেশি অস্ত্রও আছে। ভবিষ্যৎ এ যদি রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আইএস কিংবা কোনো ইসলামিক জঙ্গি জোষ্ঠির উত্থান হয় তাহলে আমি মোটেও অবাক হবোনা। তাহলে প্রশ্ন করতে পারেন স্থানীয় হুজুরেরা বাধা দিচ্ছে না কেনো? আরে ভাই এসব এনজিওর টাকা আসে বিদেশ থেকে কিন্তু চালায় তো দেশীয় জামাত,হেফাজত আর ইসলামী শাসনতন্ত্রের মত মৌলবাদী গোষ্ঠির লোকেরা। কাক কখনও কাকের মাংস খায়!

রোহিঙ্গা দিয়ে ওনাদের পেট চলে তাহলে বাধা দেবে কেনো!এ তো গেলো মধ্যপ্রাচ্যের কথা। আমি ইউরোপ আমেরিকার বহুত সাদা চামড়ার লোকদের দেখেছি শান্তনার নামে ওদেরকে উস্কানি দিতে। যাদের একটা চুল ছেড়ার ক্ষমতাও আমাদের নেই। সেদিন দেখলাম মিয়ানমার ভিত্তিক এক এনজিও কর্মীকে উস্কানি দেয়ার অপরাধে ঐ এনজিওর কার্যক্রম বন্ধ করে ফেরত পাঠানো হয়েছে। যদি সে উস্কানি দিয়েই থাকে তাহলে তাকে ছেড়ে দেয়া হলো কেনো?! তাকে কিসের ভয়ে গ্রেফতার করা হলোনা? এটা কি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নয়! মিয়ানমারে গিয়ে আমরা এমনটা করতে পারবো!এই যে ২৫ শে আগস্ট রোহিঙ্গারা সমাবেশ করলো এতে সাহায্য করেছে স্থানীয় বাঙ্গালিরা তাদের মধ্যে আছে পুলিশ, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী, শিক্ষক, দূদক কর্মকর্তাসহ আরও বহু সাধারন অসাধারন মানুষেরা। কেউ ব্যানার করে দিয়েছে, কেউ নগদ টাকা দিয়েছে কেউ, কেউ একই রকমের টিশার্ট তৈরি করে দিয়েছে, কেউ বা আবার লিফলেট করে দিয়েছে। আপনার কি মনে হয় এরা স্বার্থ ছাড়া এসব করেছে!
কিসের স্বার্থ এদের! যেখানে খোদ পুলিশের লোকেরা এসব করছে সেখানে বুঝতেই পারছেন তারা তাদের দায়িত্ব কতটুকু পালন। তারা শুধু দায়িত্ব দেখায় পার্কে বসা প্রেমিক-প্রেমিকাদের ধরতে আর কোন ছেলে কেমন করে চুল কাটলো সেসব দেখতে। যাই হোক কে কিভাবে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ করতে সাহায্য করেছে সেসব পত্রিকায় চোখ রাখলেই জানা যায়। তবে এইসব দেশীয় মীরজাফর গুলোর কি শাস্তি হলো সেটা কোনো মিডিয়াতে আসেনি। আর আসবে বলে মনেও হয়না। কারন সরকারি লোকেদের কখনওই শাস্তি হয়না। ঐ যে বাংলাতে একটা প্রবাদ আছেনা চোরে চোরে মাসতুতো ভাই। এ তো গেলো সরকারি লোকেদের কথা এবার আসি বেসরকারি লোকেদের হিসেবে। কক্সবাজার, টেকনাফ, উখিয়া, রাঙ্গামাটি, ঘুমঘুম ইত্যাদি সীমন্ত অঞ্চলে লাখ লাখ লোক আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে শুধুমাত্র রোহিঙ্গাদের কল্যাণে। কারন ওদের ইয়াবার আশ্চর্য চেরাগ। এই চেরাগের গুনেই কয়েক মাসের মধ্যে টিনের ঘর হয়ে যায় ডুপ্লেক্স বাড়ি। চালচুলোহীন লোকেরা ঘুরতে যায় আমেরিকা।
কদিন আগেও যে হুজুর মাদ্রসার ছেলেদের নিয়ে দারে দারে ভিক্ষা করতো সেও এখন হজ্ব করতে যায় সৌদিআরব। ফেরার সময় দুবাই হয়ে ফেরে। এটা এমন এক চেরাগ যার স্পর্শল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় স্বীকৃত মাদক ব্যবসায়ীরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়। যায়গা পায় সংসদে। একের পর এক পায় নৌকার টিকেট। নাফ নদীর সামান্য জেলে বাড়ি করে ঢাকাতে। মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করে পেট চালানো বুয়া এখন চিটাগাং শহরে তিনটে বাড়ির মালিক। পুলিশ, প্রশাসন, স্থানীয় কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান, নেতা, বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক, শিক্ষক, ছাত্র, দিনমজুর, কৃষক সহ এমন কেউ নেই যে এই চেরাগের ছোঁয়া পায়নি। বলতে গেলে ঐসব অঞ্লের ৯৫% লোকই ইয়াবা সেবন,বিক্রি এবং চোরাচালানের সাথে জড়িত। আর হবেই না কেনো বলুন এমন এক আশ্চর্য প্রদিপের ছোঁয়া কে না পেতে চায়। আর সেই চেরাগ আছে রোহিঙ্গাদের হাতে। যে চেরাগের দৈত্য পাল্টে দেয় সবার জীবন। যে দৈত্য ঐসব লোকেদের জন্য আশীর্বাদ আর পুরো দেশের জন্য অভিশাপ। পুনশ্চ : লেখাতে অনেক ভুল ত্রুটি থাকতে পারে। দয়াকরে ভুল গুলো ধরিয়ে দিন যাতে সংশোধন করতে পারি। লিখেছেন-Adword Rahul

↑PREVIOUS-প্রিয় অভিদা 

NEXT-উমরের চুক্তি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ