সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জান্নাত রুহি মায়ার কবিতাগুচ্ছ


সুপ্রিয়,
বহুদিন হয়
খুব করে ভালবাসনি
ভাসাওনি বেদনার নীলচে জলে
আমারে,
জড়াওনি বুকের বাঁ পাশটাতে।
আগে বলতে,ব্যথায় করে চিনচিন
যদি না দাও ছুঁয়ে আলতো করে
এই অভাগারে।
আমার ভেতরটা হুহু করে উঠতো।
এত অসহায়ভারে কেউ ভালবাসা চাইতে পারে!
এতটা কাঙালপনা ভালবাসায় থাকে!
অথচ,এখন দিনযাপন,
দিন যায়।
যায় তো রাতও
কালাক্ষরের বিক্ষিপ্ত বুননে।
ছোঁয়াছুঁয়ি হয়নি কতকাল,
ভালবাসাবাসি বলা হয়নি
সুদীর্ঘ বছর কত!
দীর্ঘশ্বাসে স্মৃতিচারণ,
অকারণ।
না মেনে মনের বারণ।
কত শাসন,
দুঃসাহস দেখায় ক্লান্তিতে।
আশ্রয় না পেয়ে সরে যায়
অসূর্যম্পশ্যা ভেবে।
যায়।
যায় তো দূরে।
সুদূরে।কালান্তরের পথটি ধরে।
ফিরাতে চাইনি,
হয়তো পারিনি।
অযাচিত ভ্রমণ শেষে
ফিরিনি আর নিজের কাছে।
হারিয়েছি খেই, সুপ্রিয়।
হারিয়েছি নিজেরে,
অনায়াসে,
অনাদরে।
অবলীলাক্রমে।
তুমি আর ফিরে এসো না।
হারিয়ে যাও চোখের অন্ধপ্রদেশে।
আর পেতে চাই না তোমায় স্মৃতি বিস্মৃতির চেনা অক্ষরে।

২।
সময় একদিন আমারও আসবে।
সেদিন সময়কে রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে বসিয়ে রাখবো,
প্রথম প্রথম প্রেমিক যেমন বসে থাকে প্রেমিকার জন্য তেমন করে।
ট্রেন প্লাটফর্মে পৌঁছালেও আমি নামবো না ট্রেন থেকে।
ভাব ধরে থাকবো।
ভাবের চোটে ট্রেনে চড়ে পরের স্টেশনে চলে যাবো।
সেখানে গিয়ে একলা একলা পাড়ি দেবো অপ্রেমের পথ।
পেছন দিকে তাকিয়ে একবার বলবো, "দেখ কেমন লাগে" নিজেকে!


৩।
আজ আমার মন ভালো নেই...

আজ আমার মন ভালো নেই।
মন ভালো নেই,মন ভালো নেই
অস্তরাগের সন্ধাতারায় মন হারিয়ে
মন ভালো নেই।
বসছে না মন, কোনকিছুতেই
মন ভালো নেই।
খোলা চুলে,হাওয়ার দোলে
মন দোলেনি,মন ভরেনি।
প্রস্ফুটিত পত্রজবায় মন মাতিয়ে
মন ভালো নেই....

৪।
ছোট্ট কিছুর জন্য এতটা উতলা হই যে
নিজেকে সেসবের চেয়ে বড্ড তুচ্ছ মনে হয়।
কি ভীষণ! প্রবঞ্চনায় নাক ডুবিয়ে দিন কেটে যায়
অথচ উদ্বিগ্ন থাকি সবার সব চাওয়ায়।
আমারে তো অমন করে চায় না কেউ,
বেহিসাবি বুকেরতটে আছড়ে পড়া
নাম না জানা হাজার ঢেউ।
জলের গভীরতা বুঝতে সমুদ্রে পেতেছি ঘর।
জলের মতন আপন যত,সবার কাছে ততটাই পর।

৫।
কিসের এতো অস্থিরতা, বুক জুড়ে।
বিরাম নেই,সরবতা নেই,নেই নীরবতাও।
কি আছে! গলায় আঁটকে।
ঢেকুর তুলতেই খামছে ধরা ব্যথা।
কিসের এতো দুশ্চিন্তা, চোখ জুড়ে
ঠিকানা নেই,ডাকবাক্স মরচেধরা।
খাম ছিঁড়তেই বেনামি চিঠির আত্মকথা!
৬।
তুমি আসবে বলে...

আসবে বলে
সোনালু ডালে হলদে ফুলের গুচ্ছ দোলে,
আসবে বলে
ক্রান্তি কালে খয়েরি রঙা দুঃখ ভোলে।
আসবে বলে
ভরা গাঙ্গে ফুঁসলে ওঠে শত ঢেউ,
আসবে বলে
হিমায়িত আবেগ ফোটে,বুঝে না তা কেউ।
আসবে বলে
শরৎ রঙা মেঘেরা হাসে, নীল আকাশে।
আসবে বলে
জুঁই,চামেলির গন্ধ ছড়ায় বাউলা বাতাসে।
আসবে বলে
রাত্রি শেষে ভোরের আলোয় পাখি ডাকে।
আসবে বলে
দোয়েল,শ্যামা শিষ দিয়ে যায় পাতারফাঁকে।

৭।


ব্রণ নাকি খুচরা পাপ! নিচের ঠোঁটের কোল জুড়ে একটা হইছে!অনেকদিন চুমু পড়েনি ঠোঁটে তাই!

 লিখেছেন-জান্নাত রুহি মায়া (কবি)


PREVIOUS-আজকের এইদিনে সমকামীদের জন্য ভারতে ঐতিহাসিক রায়

Next- পাঁচ টাকায় প্যাড

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জাতীয়তাবাদ আরেকটি ধর্ম বই

বাংলাদেশীরা ধর্মভীরু। ইসলাম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ও জাতীয়তাবাদ নামক ধর্মগুলোর প্রতি বাঙ্গালীর দুর্বলতা নতুন কিছু নয়। আমরা যারা মুক্ত-চেতনাকে প্রয়োজনীয় মনে করি, যুক্তিকে ধর্মের ওপরে স্থান দেই তাদের অনেকেই ধর্মের মতই সামনে আসা অন্যান্য প্রতিটি ধারনা ও প্রস্তাবনাকেই যুক্তি দিয়ে বুঝতে চাই, খতিয়ে দেখতে চাই। বা দদূএকটি রূপ আধ্যাত্মিকতা ও ধর্ম হিসাবে মানুষের দলবদ্ধ সমাজব্যবস্থার দ্বিতীয় বড় চালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রস্তরযুগে আরো একটি ঘটনা ঘটতে শুরু করেছিল। মানুষেরা নিজেদের গ্রাম বা নগরকে কেন্দ্র করে একটি সামষ্টিক পরিচিতি অনুভব করে শুরু করেছিল। বোধ করি তখন থেকেই মানুষের দলবদ্ধতার তৃতীয় চালক জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক যাত্রা শুরু। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় জাতীয়তাবাদ নানান চেহারায় দলবদ্ধতার সবচাইতে শক্তিশালী চালক হিসাবে বিদ্যমান। একটি নৃগোষ্ঠী যখন পুঁজিবাদী হতে শুরু করে, যখন সে একটি কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র গঠন করে তখনই সে একটি জাতিতে পরিণত হয়। ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ আমাদের দেশের রাজনীতিতে কাছাকাছি আছে ইতিহাসের শুরু থেকে। মহাভারত থেকে আজকের খালেদা-হাসিনার রাজনীতিতে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ একে অন্যের হাত...

গাজওয়াতুল হিন্দ

গাজওয়াতুল হিন্দকে বর্তমান বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল শ্রীলংকার জিহাদীরা তাদের মনে আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে নানা মতাভেদ থাকলেও সকল মুসলিম জিহাদীরা মনে করে বা আ শা করে যে ইসলাম সারা পৃথীবিতে এই জিহাদের মাধ্যামে প্রতিষ্টা হবে। তারা এটাকে মর্যাদার্পূণ জিহাদ বলে মনে করে। ইসলামের ভিত্তির অন্যতম হলো জিহাদ। ইসলাম প্রতিষ্ঠাকালীন প্রচুর যুদ্ধ করা এবং হত্যার পরেই মানুষ ভয়ে ইসলামকে গ্রহন করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ভায়রাস বলা হয় ইসলামকে। এই ভায়রাস আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে গাজওয়াতুল হিন্দকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে জিহাদীরা তাদের দলে লোক বেসি করার জন্য অনলাইনে সহ নানা জাগাতে ঠিক এই ভাবে মুসলিমদের উপর প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে "গাজওয়াতুল হিন্দ বা ভারতবর্ষের যুদ্ধ সম্পর্কে কি আপনি অবগত? আপনি কি কাফের মুশরিকদের সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত?" ইসলামীষ্ট  জিহাদীরা ঠিক এভাবে চাই যে সারা পৃথিবীতে সবচে’ বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটা হবে হিন্দুস্তান তথা ভারতের হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যা সমস্থ জ্ঞানি ইসলামি স্কলার এবং আলেম উলামা জানে। মুসলমানদের জন্য এটা খুব বড়  জিহাদ এবং এই জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই...

বাঙালি এবং লেখকের জীবন

লেখকের বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত তার পরিবারের স্বীকৃতি।এখানে স্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে-লেখালেখি যে একটি কাজ,অন্য মতোই একটি কাজের, এবং সেই কাজের জন্য মনোযোগ,সময় এবং শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়-এই বোধটা তৈরী হওয়া।লেখালেখিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে নাই বা ধরা হলো। কিন্তু এটি যে একটি কাজ,এই স্বীকৃতিটা পরিবার থেকে আসা খুব প্রয়োজন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতি বান লেখক শেষ পর্যন্ত যে লেখক হয়ে উঠতে পারে না,লেখক জীবন যাপন করতে পারেন না,লেখালেখির জগত থেকে তাদের যে অকাল বিদায় নিতে হয়,তার সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।লেখালেখিকে পারিবারিক ভাবে স্বীকৃতি না দেওয়া।দেশের অন্য সব মানুষদের মতোই বেশির ভাগ পরিবারে লেখালেখি একটি নেহাৎ ই শখের জিনিস।তারুণ্য বা অংকুরোদ্গমী যৌবনে যৌনতার চুলকানিরও পেয়ে বসে আমাদের দেশের মানুষদের।তখন তাদের লেখাকে বাবাহা দেয় বাড়ির ভাবীরা,কাকা-জ্যাঠারা,সহপাঠীরা,বা তার কোন প্রেমিক-প্রেমিকাও।কখনো কখনো এমনকি বাবা মাও।তারা সকলেই অবচেতনে,এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানে যে,এই চুলকানি বেশিদিন থাকবে না।কিন্তু যার ক্ষেত্রে থেকে যায়,অর্থাৎ যে বুঝে যায় যে লেখক হওয়াটাই তার ভবিতব্য,সমস্যাটা তার ক্ষ...