সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আরব্য সংস্কৃতির দাস বাংলাদেশী মিসকিনদের অবস্থান


দেশে ক্যাসিনো থাকা খারাপ না। যাদের অঢেল টাকা পয়সা তাদের জন্য হলেও ক্যাসিনো দরকার। এই যেমন বারে গিয়ে একটু সময় কাটানো, উপরি আয়ের কিছু টাকা দিয়ে ক্যাসিনোতে গিয়ে খরচ করে নিজের জাত চেনার জন্য হলেও ক্যাসিনোর প্রয়োজনীয়তা আছে। সবাই যে নিজের জাত দেখানোর জন্য যায় তা না, কেউ কেউ দুই পেগ মারার অভ্যেস আছে বলেই যায়। তাছাড়া বিদেশী পর্যটকদের জন্যও প্রয়োজন ক্যাসিনো। কিন্তু এদেশের বিশেষ এক সংখ্যাগরিষ্ঠ গোষ্ঠির মদের বার নিয়ে যথার্থ আপত্তি আছে। সেই সংখ্যাগরিষ্ঠরা মনে করে, যেহেতু তাদের সংখ্যা এদেশে ৯০%, তাদের ধর্ম আবার এসব মদ টদ ইহলোকে এলাউ করেনা, সেহেতু তাদের এই এই দেশটাতে ক্যাসিনো ফ্যাসিনো থাকা উচিত নয়।
দেশের অনেক পর্যটন কেন্দ্রে এখনো মদ টদ এগুলো বিক্রি করা হয় খুব লুকিয়ে চুরিয়ে। মদের বার, নাইট ক্লাব, জলসা, ফ্রি সীবীচ, এগুলোকে এক অদৃশ্য শেকলে বেঁধে রেখেছে। মানুষের আনন্দের এই উপাদানগুলো আমাদের দেশে অনেকটা বোবার মতো হয়ে থাকে। তাই কোন মেয়ে বিকিনি পড়ে সমুদ্র সৈকত এনজয় করেনা, আর অনেকে ফ্রি মুডে নাইট ক্লাবও উপভোগ করেনা। কিছুদিন আগে আমি এক দুবাই ফেরত ভদ্রলোকের সাথে কথা বলছিলাম। ভদ্র লোককে প্রশ্ন করলাম, -আচ্ছা দুবাই তো খাস আরব্য মুসলিমদের শহর। ওখানে এতো হোটেল-মোটেল, আর বিদেশী পর্যটক দেখে মনে হয়না আরবের মুসলিমরা ধর্মীয়ভাবে এতো গোঁড়া।
তখন ভদ্রলোক বলল, আরে ভাই দুবাই যদি বাংলাদেশের মুসলমানদের মতো এতো ধর্মীয়ভাবে কুসংস্কার হতো তাহলে কি দুবাই আজকের দুবাই হতে পারতো? দুবাইয়ের বেশি আয় হয় পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে। তাছাড়া দুবাই হল পুরো বিশ্বের একটা মিলনস্থল। পশ্চিমা দেশগুলোর বিমান প্রথমে দুবাইয়েই ল্যান্ড করে। আর ওখানে কোরবানি পশু জবাই বাংলাদেশের মতো যত্রতত্র চোখে দেখিনি। ওখানে নিদিষ্ট জায়গায় পশু জবাই হয়। যাতে পরিবেশ দূষিত না হয়।
আমি বললাম, আচ্ছা ওখানে বিদেশী পর্যটকদের, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর মেয়েদের পোশাক আশাক নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়না? ভদ্রলোক বলল, -আরে ভাই কি সমস্যা হবে? ওখানে দুবাই সরকারের নীতি হলো, আমি তোমার নামাজ পড়ার জন্য যেমন মসজিদ করে দিয়েছি, ঠিক তেমন তোমার এনজয় করার জন্য মদের বার, নাইট ক্লাব, প্রসটিটিউট সেণ্টারের বৈধতা দিয়েছি। তোমার যেখানে খুশি সেখানে যাও।
এর আগেও দেখেছি আমাদের সরকার এদেশের বিশেষ এক ধর্মীয় গৌষ্ঠীর মন খুশি রাখার জন্য কিংবা তাদের ধর্মীয় চেতনায় যাতে এতোটুকুও আঁচ না লাগে সেজন্য ইংরেজি ও বাংলা নব বর্ষকে ঘিরে কড়া বিধি নিষেধ আরোপ করে থাকেন। যাতে দেশের সংখ্যাগুরুরা বাঙালীয়ানা ও পশ্চিমা সংস্কৃতির খপ্পরে পড়ে তাদের ধর্মীয় চেতনা থেকে বিচ্যুতি না হয়। এইসব উৎসবগুলোর স্বাধীন উদার সংস্কৃতি দেখে যদি তারা নিজেদের ঈমানীত্ব হারায়, তাহলে তো সংখ্যাগুরুদের ধর্ম অস্তিত্বের সংকটে পড়বে! আর ধর্ম সংকটে পড়লে রাজনৈতিক ব্যবসা হবে কি দিয়ে? তাই এসব উদার সংস্কৃতিগুলোর উপর যত বিধি নিষেধ আরোপ করা যায় ততই রাজনৈতিক ব্যবসায়ীদের জন্য ভাল।
যে ক্যাসিনোকে সামনে এনে, অস্ত্র সজ্জিত র‍্যাবের ফোর্স নিয়ে জনগনের সামনে খুব ফোকাস করে যুবলীগ নেতাকে যেভাবে আটক করা হলো, এইটা ৯০%এর বিশেষ ধর্মীয় গোষ্ঠীর চোখে ধূলো দেয়া ছাড়া কিছুই নয়। এই দেখো যারা ইসলাম বিরোধী ক্যাসিনোর মতো বারের ব্যবসার সাথে জড়িত, আমরা আমাদের সেই যুবলীগ নেতাকেও পর্যন্ত ছাড় দিই না। গ্রেপ্তার করেছি! একেই বলে এক টিগারে দুটো শিকার। --যেদেশে জনগন যেমন রাষ্ট্রচালকরা ও তেমন। যেদেশের জনগন ধর্মীয় গোঁড়ামি খাবে, সেদেশের সরকারও ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করবে। আপনারা দুবাইয়ের ক্যাসিনো, নাইট ক্লাব, সুন্দর বুর্জ খলিফা ও ওয়াটার ডান্স দেখে খুশিতে আটখানা হয়ে যান। খুব গর্ব করেন আরব্যদের দুবাই নিয়ে। আর স্বদেশে উম্মুক্ত বর্ষ বরণ অনুষ্ঠান, স্বাধীন সমুদ্র সৈকত, নাইট ক্লাব, ক্যাসিনো এসবকে ইসলাম বিরোধী বলে হায়েনার ঝাঁকের মতো তেড়ে যান নিষিদ্ধ বা ভাঙচুর করার জন্য। আপনারা ইহলোকে মদকে জঘন্য ও হারাম মনে করেন, আবার পরলোকে এটাকে হালাল ও অমৃত সুধা মনে করেন৷ আপনাদের মতো হিপোক্রেট আরব্য না। আরব্যরা আপনাদের মিসকিন এমনিই বলেনা, তাদের চিন্তার দিক দিয়ে আপনারা আসলে এখনো বহুত মিসকিন! মিসকিন শব্দটা আসলে আপনাদের সাথেই যায়। লিখেছেন -অপ্রিয় কথা

↑PREVIOUS-কোন কোন দেশগুল মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর শত্রু? 

NEXT-এক নায়ক প্রথমপর্ব

মন্তব্যসমূহ

  1. ভাবতে ভালো লাগছে হিন্দুদের রাধাকৃষ্ণ, বাবা লোকনাথ এখন ক‍্যাসিনোতে আল্লাহর ঘরের পাশে ই ঠাই পেয়েছে।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মুক্তচিন্তার সাথে হোক আপনার পথ চলা।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জাতীয়তাবাদ আরেকটি ধর্ম বই

বাংলাদেশীরা ধর্মভীরু। ইসলাম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ও জাতীয়তাবাদ নামক ধর্মগুলোর প্রতি বাঙ্গালীর দুর্বলতা নতুন কিছু নয়। আমরা যারা মুক্ত-চেতনাকে প্রয়োজনীয় মনে করি, যুক্তিকে ধর্মের ওপরে স্থান দেই তাদের অনেকেই ধর্মের মতই সামনে আসা অন্যান্য প্রতিটি ধারনা ও প্রস্তাবনাকেই যুক্তি দিয়ে বুঝতে চাই, খতিয়ে দেখতে চাই। বা দদূএকটি রূপ আধ্যাত্মিকতা ও ধর্ম হিসাবে মানুষের দলবদ্ধ সমাজব্যবস্থার দ্বিতীয় বড় চালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রস্তরযুগে আরো একটি ঘটনা ঘটতে শুরু করেছিল। মানুষেরা নিজেদের গ্রাম বা নগরকে কেন্দ্র করে একটি সামষ্টিক পরিচিতি অনুভব করে শুরু করেছিল। বোধ করি তখন থেকেই মানুষের দলবদ্ধতার তৃতীয় চালক জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক যাত্রা শুরু। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় জাতীয়তাবাদ নানান চেহারায় দলবদ্ধতার সবচাইতে শক্তিশালী চালক হিসাবে বিদ্যমান। একটি নৃগোষ্ঠী যখন পুঁজিবাদী হতে শুরু করে, যখন সে একটি কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র গঠন করে তখনই সে একটি জাতিতে পরিণত হয়। ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ আমাদের দেশের রাজনীতিতে কাছাকাছি আছে ইতিহাসের শুরু থেকে। মহাভারত থেকে আজকের খালেদা-হাসিনার রাজনীতিতে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ একে অন্যের হাত...

গাজওয়াতুল হিন্দ

গাজওয়াতুল হিন্দকে বর্তমান বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল শ্রীলংকার জিহাদীরা তাদের মনে আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে নানা মতাভেদ থাকলেও সকল মুসলিম জিহাদীরা মনে করে বা আ শা করে যে ইসলাম সারা পৃথীবিতে এই জিহাদের মাধ্যামে প্রতিষ্টা হবে। তারা এটাকে মর্যাদার্পূণ জিহাদ বলে মনে করে। ইসলামের ভিত্তির অন্যতম হলো জিহাদ। ইসলাম প্রতিষ্ঠাকালীন প্রচুর যুদ্ধ করা এবং হত্যার পরেই মানুষ ভয়ে ইসলামকে গ্রহন করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ভায়রাস বলা হয় ইসলামকে। এই ভায়রাস আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে গাজওয়াতুল হিন্দকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে জিহাদীরা তাদের দলে লোক বেসি করার জন্য অনলাইনে সহ নানা জাগাতে ঠিক এই ভাবে মুসলিমদের উপর প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে "গাজওয়াতুল হিন্দ বা ভারতবর্ষের যুদ্ধ সম্পর্কে কি আপনি অবগত? আপনি কি কাফের মুশরিকদের সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত?" ইসলামীষ্ট  জিহাদীরা ঠিক এভাবে চাই যে সারা পৃথিবীতে সবচে’ বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটা হবে হিন্দুস্তান তথা ভারতের হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যা সমস্থ জ্ঞানি ইসলামি স্কলার এবং আলেম উলামা জানে। মুসলমানদের জন্য এটা খুব বড়  জিহাদ এবং এই জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই...

বাঙালি এবং লেখকের জীবন

লেখকের বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত তার পরিবারের স্বীকৃতি।এখানে স্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে-লেখালেখি যে একটি কাজ,অন্য মতোই একটি কাজের, এবং সেই কাজের জন্য মনোযোগ,সময় এবং শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়-এই বোধটা তৈরী হওয়া।লেখালেখিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে নাই বা ধরা হলো। কিন্তু এটি যে একটি কাজ,এই স্বীকৃতিটা পরিবার থেকে আসা খুব প্রয়োজন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতি বান লেখক শেষ পর্যন্ত যে লেখক হয়ে উঠতে পারে না,লেখক জীবন যাপন করতে পারেন না,লেখালেখির জগত থেকে তাদের যে অকাল বিদায় নিতে হয়,তার সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।লেখালেখিকে পারিবারিক ভাবে স্বীকৃতি না দেওয়া।দেশের অন্য সব মানুষদের মতোই বেশির ভাগ পরিবারে লেখালেখি একটি নেহাৎ ই শখের জিনিস।তারুণ্য বা অংকুরোদ্গমী যৌবনে যৌনতার চুলকানিরও পেয়ে বসে আমাদের দেশের মানুষদের।তখন তাদের লেখাকে বাবাহা দেয় বাড়ির ভাবীরা,কাকা-জ্যাঠারা,সহপাঠীরা,বা তার কোন প্রেমিক-প্রেমিকাও।কখনো কখনো এমনকি বাবা মাও।তারা সকলেই অবচেতনে,এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানে যে,এই চুলকানি বেশিদিন থাকবে না।কিন্তু যার ক্ষেত্রে থেকে যায়,অর্থাৎ যে বুঝে যায় যে লেখক হওয়াটাই তার ভবিতব্য,সমস্যাটা তার ক্ষ...