সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কাশ্মীর সমস্যার ইতিহাস: কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ কি হবে?



১৯৪৭ এ ১৪ই ও ১৫ই আগষ্ট পাকিস্তান আর ভারতের স্বাধীনতা লাভ হয়েছিল। স্বাধীনতার পর যে যার রাষ্ট্রের স্বতন্ত্রতা নিয়ে চলছিল। মুলত পাকিস্তানের জম্ম হয়েছিল দ্বিজাতি তত্ত্ব ধর্মের ভিত্তিতে। মানে মুসলমানদের জন্য আলাদা একটা রাষ্ট্র চায়, তা হল পাকিস্তান। দেশ ভাগ হয়ে গেল ঠিক আছে। কাশ্মীর রাজ্যটিও স্বাধীনভাবে দিন কাটাচ্ছিল, তাও ঠিক আছে। এই পর্যন্ত কোনো সমস্যা ছিলনা। কিন্তু কাশ্মীর রাজ্যে প্রথম সমস্যাটি সৃষ্টি করে বসে পাকিস্তান। পাকিস্তান স্বাধীন হবার পর এক বছরের মাথায় উপজাতীর ছদ্মবেশে কাশ্মীর উপত্যকায় ঢুকে কাশ্মীর দখল করার জন্য আগ্রাসন চালায়। এবং অনেকটা দখলও নিয়ে নেয়। শুয়োরের বাচ্ছা জম্ম হওয়ার পর যেমন তার বাবার পাছায় প্রথম কামড়টি বসিয়ে নিজের শক্তি কেমন তা পরীক্ষা করে দেখে, পাকিস্তান জম্ম হওয়ার পর কাশ্মীরে আগ্রাসনের মাধ্যমে সেই শুয়োরের নীতিই অবলম্বন করেছিল। নিজেদের সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশকে কিভাবে উন্নতির দিকে অগসর করবে তা না ভেবে, তারা ভাবতে শুরু করে দেয় কাশ্মীর কিভাবে দখল করবে।


তৎকালীন কাশ্মীরের রাজা হরি সিং কি পাকিস্তানের বাড়া ভাতে কখনো ছাই দিয়েছিল? না দেয়নি। তারপরও প্রশান্ত কাশ্মীরকে পাকিস্তানের সহ্য হলো না। কাশ্মীরকে দুর্বল পেয়ে ১৯৪৭ সালে (সম্ভবত অক্টোবর মাসে) পাকিস্তান সৈন্য পাঠিয়ে যখন কাশ্মীর অনেকটা দখল করে ফেলে। তখন কাশ্মীরের রাজা হরি সিং আর না পেরে নিরুপায় অবস্থায় ভারত সরকার তথা জহুরলাল নেহেরুর হস্তক্ষেপ চাইলেন। জহুরলাল নেহেরু আর দেরি না করে তড়িঘড়ি করে সেখানে ভারতীয় সৈন্য পাঠিয়ে দিলেন। এখানে বলে রাখা ভাল, সেনা পাঠানোর আগে রাজা হরি সিং কিন্তু সাক্ষর করে কাশ্মীরকে ভারত ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত করেন। এরপর ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক সৈন্যরা তুমুল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। যুদ্ধ করতে করতে ভারতীয় সৈন্যরা ইতিমধ্যে পাকিস্তানি সৈন্য দ্বারা কাশ্মীরের দখলকৃত জায়গা অনেকটা পুনরুদ্ধার করতে সমর্থ হয়। ভারতীয় সৈন্যদের আক্রমণে এক সময় পাকিস্তান সেনারা পিছু হঠতে থাকে। মাঝখানে এসে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বিরতি ঘোষনা হয়, এবং দুই দেশ যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব মেনে নেয়। স্বাধীনতার পর ভারত ও পাকিস্তানের এই প্রথম যুদ্ধ হয়। যে যুদ্ধের স্থায়ীত্ব কাল ছিল প্রায় দুই বছর। যুদ্ধ বিরতির সময় দুই দেশের সৈন্য যে যেখানে ছিল, সেখানেই থেকে যায়। সেখানেই কাশ্মীর দুই ভাগ হয়ে সীমান্তের বর্ডার দাঁড়িয়ে যায়। যে বর্ডারের নাম হয় loc (এই line of control বর্ডার ১৯৭২ সালে ভারত-পাকিস্তানের শিমলা চুক্তির মাধ্যমে চুড়ান্ত হয়) বর্ডার। যুদ্ধ বিরতির পর ভারতের কাছে থাকে জম্মু কাশ্মীর, পাকিস্তানের দখলে যায় বর্তমান আজাদ কাশ্মীর। ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধে চীনের কাছে ভারত কাশ্মীরের যে অংশটা হারিয়েছিল, তা হল আকসাই চীন। তার মানে কাশ্মীর রাজ্যটি তিনটি দেশের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। কিন্তু কথিত বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী মহল ও ৯০% মুসলমানগন ভারতের জম্মু কাশ্মীর নিয়ে উদ্ধিগ্ন হলেও, চীনের দখলকৃত আকসাই চীন, পাকিস্তানের অধিকৃত আজাদ কাশ্মীর নিয়ে কেউ উদ্ধিগ্ন নন। কাশ্মীর নিয়ে ৭২ বছর এই জল্পনা কল্পনার সমস্যা থাকতো না, যদি না জহুরলাল নিজ গরজে ১৯৫৪ সালে রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যদার আইন ৩৭০ ধারা পাশ না করতো।
আচ্ছা কাশ্মীরের সাথে যে চুক্তি তিনি করেছিলেন, এমন চুক্তি কেউ করে? জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে কোনো রাষ্ট্রনেতা এমন আত্নঘাতী নীতি গ্রহন করেছিল কখনো? আমার মনে হয় আজকালের বাবারাও নিজের ছেলেকে এতোটা ছাড় দিয়ে এমন চুক্তি করবে না। কিন্তু এমন চুক্তিও করেছিল জহরলাল নেহেরু চাচা। যিনি ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। দেশ ভাগ হওয়ার পেছনে যিনি পরোক্ষ সমর্থন যুগিয়েছিলেন। এবং গান্ধীর সাথে সুর মিলিয়েছিলেন। যে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ দুই ভাগ হয়েছিল, অথচ সেই খন্ডিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনো নৈতিক অধিকার ছিলো না জহরলাল নেহেরুর। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হবার যোগ্যতা যাঁর ছিল, সেই নেতাজি সুভাষ বসু হয়েছিল, গান্ধীর কুটচালের কাছে পরাজিত। দুবার কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরও গান্ধীর অমত থাকায় তিনি কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। আসলে জহরলাল নেহেরু না, জহরলাল নেহেরু ছিল সেক্যুলারিজমের নামে প্রতিক্রিয়াশীল গান্ধী বুড়োর হুকুমের দাস মাত্র। জহর নেহেরু যদি গান্ধীবাদের চামচা হতেন, তাহলে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী কখনোই হতে পারতেন না। আর গান্ধীর প্রত্যক্ষ সমর্থন না থাকলে ভারত আজ তিন খন্ডে বিভক্ত হতো না। ভারত ভাগের জন্য যত নষ্টের মূল ছিল গান্ধী। অথচ এই প্রতিক্রিয়াশীল ব্যক্তিটি আজো ভারতে পুজিত হয়ে আসছে জাতির জনক হিসেবে। আর নেতাজি সুভাষ বোসকে রাখা ইতিহাসের অন্ধকারে।
আমি ভেবে পায় না পাকিস্তানিদের কাশ্মীরি মুসলমানদের প্রতি ভালবাসার এতো নাটক কিসের? যাদের নিজেদের ঝুলিতে ঠিক মতো চলার অর্থ নেই, তারা নাকি আবার কাশ্মীরি মুসলমানদের জন্য যুদ্ধ করবে! কি হাস্যকর। গণহত্যাকারী, মানবতা বিরোধী একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের মুখে এসব কথা শোভা পায় না। আমরা ৭১ এখনো ভুলিনি। ১৯৪৭এ মুসলিম মুসলিম ভাই ভাইয়ের ভাতৃত্বকে সামনে রেখে পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান মুসলমানরা ভারত থেকে আলাদা হয়েছিল। সেই ধর্মগত ভাই রাজ্য পুর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তানিরা ২৫ বছরও টিকিয়ে রাখতে পারেনি। পূর্ব পাকিস্তানের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান কিন্তু পাকিস্তানের কাছ থেকে প্রথমে স্বাধীনতা চায়নি, ৬ দফার দাবির মাধ্যমে চেয়েছিল স্বায়ত্তশাসন। যে স্বায়ত্তশাসন দাবি পরবর্তীতে স্বাধীনতা সংগ্রামের রুপ নেয়।  আর এই ভাই ভাইয়ের স্বাধীনতা দমন করতে পাকিস্তানের হানাদাররা পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশের) মানুষের উপর চালায় নৃশংস গণহত্যা। এই ভাই ভাইয়ের থেকে স্বাধীনতা অর্জন করতে  ৩০ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়ে শহীদ হয়েছিলেন। আর কয়েক লক্ষ নারী ধর্ষিত হয়েছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য এতো প্রাণ, এতো ধর্ষণ যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। যে পাকিস্তানের কাছে বাঙালি মুসলমানরা নিরাপদ ছিলো না, বর্তমানে বেলুচিস্তানের মুসলমানরা নিরাপদ নয়, তাদের কাছে কাশ্মীরের মুসলমানরা কিভাবে নিরাপদ থাকবে?
যে পাকিস্তান ভারতের কাছে এই পর্যন্ত যুদ্ধে ৪ বার (১৯৪৮, ১৯৬৫, ১৯৭১, ১৯৯৯) পরাজিত হয়েছে, তারা নাকি যাবে আবার কাশ্মীর দখল করতে! পাকিস্তানের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের আখড়া এই কাশ্মীরের জন্য ভারতের বছরের পর বছর ধরে কম অর্থ গুনতে হয়নি কিন্তু। এই কাশ্মীর পাহারা দেয়ার জন্য ভারতীয় অর্ধেক সেনা কাশ্মীরে মজুত রাখতে হতো। আবার সেই সেনাদের চালাতে সামরিক খাতে বছরের পর বাজেট বাড়াতে হতো। 370/35A ধারার এই বিশেষ মর্যদার বলে কাশ্মীরিরা দ্বৈত সুবিধা ভোগ করতো। কাশ্মীরিরা ভারতের যে কোনো জায়গায় এসে বসবাস করতে পারবে, ব্যবসা বাণিজ্য ও চাকরী করতে পারবে। জায়গা জমি কিনতে পারবে, ভারতীয় মেয়েদের বিয়ে করে ঘরে (কাশ্মীরে) তুলতে পারবে। কিন্তু কাশ্মীরি মেয়েরা ভারতীয় ছেলেদের বিয়ে করে কাশ্মীরে তুলতে পারবে না। আর কোনো কাশ্মীরি মেয়ে যদি ভারতীয় ছেলেকে বিয়ে করে তাহলে সেই মেয়েটি কাশ্মীরের বসবাস করার যোগ্যতা ও নাগরিক অধিকার হারাবে। বিষয়টা যেন ঠিক এমন, তোদের মধু শুধু আমরা খাবো, আমাদের মধু তোদের খাইতে দিবো না! বাচ্চাদের মতো না? এই বিশেষ মর্যাদাটার মধ্যে সমতাটা আসলে কোথায় ছিল?
ভূস্বর্গ নামে খ্যাত ভারতযুক্ত কাশ্মীর রাজ্যটি ভারতের সবচেয়ে গরীব রাজ্য। অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে এই রাজ্যে ভারতীয় কেন্দ্রের অনুদানটাও অনেক বেশীই। তারপরও কাশ্মীরের জনগণের ভাগ্য ফেরে না এই অঞ্চলে। তাদের ভাগ্য লুট হয়ে যায় সংখ্যাগরিষ্ঠদের নেতার দুই রাজনৈতিক পরিবারের কাছে। তারা চায় কাশ্মীরে ৩৭০ ও ৩৫ ক ধারার বিশেষ মর্যাদার স্বায়ত্তশাসন থাকুক। কাশ্মীরের বাইরের মানুষ এসে বসতি স্থাপন না করুক। কাশ্মীরের সন্তানেরা উচ্চ শিক্ষিত মানুষের সাথে না মিশুক। কাশ্মীরের সন্তানেরা শিক্ষায় আধুনিক হোক এটা কাশ্মীরের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক নেতা ফারুক আবদুল্লাহ আর মুফতি মেহবুবারা চান না। তারা চায় কাশ্মীরি তাদের প্রতি আনুগত্য পোষণ করে গোলাম হয়ে থাকুক। কাশ্মীরের যুবকদের মুর্খ ও বেকার বানিয়ে রাখলে দিনশেষে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদেরই লাভ।
 


ভারত তো কেন্দ্র থেকে কাশ্মীরিদের জনপ্রতি বিপুল পরিমান অর্থ অনুদান দিতো। তাহলে এই অনুদানের টাকা কোথায় যেতো? সেখানে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা এতো নগন্য কেন? এই অনুদানের টাকা কাশ্মীরি সন্তানদের জীবন-মান উন্নয়নে ব্যবহার হতো কি? তবে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা কিছু অর্থ ব্যবহার করতো, তবে কাশ্মীরের মানুষের জীবন উয়ন্নয়ের জন্য নয়,   ভারতীয় সেনাদের পাথর ছুঁড়ে মারার জন্য। একটা বেকার নিঃস্ব যুবককে পাঁচশ টাকা দিলে সেই পাথর কেন বন্দুকের গুলিও মারবে।
ভারতীয়দের দানের টাকা খুব নিষ্ঠুরভাবে প্রতিদান দিতো কাশ্মীরের মুসলমানরা। পাকিস্তান মদদপুষ্ট জঙ্গি সন্ত্রাস মরলে কাশ্মীরি হাজার হাজার মুসলমানরা সেই সন্ত্রাসের জানাজায় সমবেত হয়। কিন্তু জঙ্গি হামলায় ভারতীয় সেনা মরলে, তখন সেনার জন্য এতোটুকুও সহানুভূতি দেখা যায় না তাদের। যে জাতি যত বেশি মুর্খ ধর্মান্ধ, সেই জাতিকে দিয়ে তত বেশি ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ চালানো যায়। একটা জায়গা তখনই উন্নতি হয়, যখন সেখানে বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ এসে বসতি করে।  বাইরের মানুষ এসে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা শুরু করলে এতে ব্যবসা ও বাণিজ্যিক খাত উন্নতি হয়। সেই জায়গার পর্যটন খাতও লাভবান হয়। আজ খুব মনে হয় যদি উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন না করতো, তাহলে এই ওয়েস্টমিনিস্ট্রি স্টাইলে আমাদের গনতন্ত্র ও রাষ্ট্রব্যবস্থা পেতে কয় যুগ অপেক্ষা করতে হতো কে জানে!  
বর্তমানে কাস্মীর থেকে ৩৭০ এবং ৩৫ ক নামক বিশেষ মর্যদার ধারা উঠে গেছে বলে এতে এতো উদ্ধিগ্ন হবার কারণ দেখিনা। মুসলমান অধ্যুষিত কাশ্মীর স্বাধীন হলে কখনো কি ভারত সার্বভৌমত্বের সম পর্যায়ে যেতে পারবে? বা কাশ্মীর পাকিস্তানের সাথে যোগ দিলে পরবর্তী তার ভবিষ্যৎ কি হবে তা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি। ৪৭ এ দুটি রাষ্ট্র একই সময়ে স্বাধীন হয়ে, ভারত আজ সফটওয়্যার রপ্তানি করছে, আর পাকিস্তান রপ্তানি করছে সন্ত্রাসবাদ। পাকিস্তান যে একটি সন্ত্রাসবাদ রাষ্ট্র, এটা আজ বিশ্ব স্বীকৃত। আজ ৭২ বছর ধরে কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা থাকার পরও কাশ্মীর ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদের কলঙ্ক থেকে নিজেকে এখনো মুক্ত করতে পারেনি। সংখ্যালঘু হিন্দুরা জম্মু-কাশ্মীরকে এখনো নিরাপদ মনে করতে পারেনি। কাশ্মীরে ৯০ সালে হিন্দু পন্ডিতদের উপর মুসলমানরা সংগঠিত হয়ে যে সীমাহীন  অত্যাচার, ভুমি দখল ও গণহত্যা চালিয়ে তাদের বিতাড়িত করেছিল, তখনো তো কাশ্মীরে বিশেষ মর্যদা ছিল। কি তাহলে এই বিশেষ মর্যদা সংখ্যালঘুদের উপর সাম্প্রদায়িক আক্রমনের সুবিধার্থে ব্যবহার হতো? 
---গত ৫ই আগষ্ট বিজেপি সরকার কাশ্মীরের এই ফ্যাসিস্ট আইন ৩৭০/৩৫ ক ধারা বাতিলের বিল লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ করেন। বিজেপির নরেন্দ্র মৌদির সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে উপমহাদেশের রাজনীতি আজ উত্থাল। এই নিয়ে বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তানের কুটনৈতিক সম্পর্ক  একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। ভারতীয় বামেরা কাশ্মীর নিয়ে মাঝে মাঝে কুঁই করে আওয়াজ দিচ্ছেন। ভারত সহ উপমহাদেশের মুসলমানরা কাশ্মীরের বিশেষ মর্যদা ৩৭০ ধারা বাতিল করায় ভারতকে বার বার ধিক্কার জানাচ্ছেন। আমার মনে হয় আমাদের পরিস্থিতি বুঝার জন্য আরো সময় নেয়া উচিত। এখন তো ৩৭০ ধারা বাতিল হয়ে গেল, যেহেতু মোদি সরকারের দায়িত্বে ৩৭০ বাতিল হয়ে গেল, এখন কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ সময়ই বলে দেবে, -কাশ্মীর কি পাকিস্তানের মতো সন্ত্রাসের আতুর ঘর নাকি, বেঙ্গালুর, চেন্নাইর মতো উন্নত রাজ্য হবে.........
বিঃদ্রঃ - এই লেখাটি শুরু করেছিলাম ৫ই আগষ্ট। এই কয় দিনে লেখাটি লিখতে গিয়ে অনেক কিছু লিখিছি আবার অনেক কিছু কেটেও দিয়েছি। এই লেখাটা লিখতে গিয়ে যে পরিমাণ কাশ্মীর নিয়ে পড়তে হয়েছে। ততক্ষনে শীর্ষেন্দু প্রায় বড়,আকারের পার্থিব উপন্যাসও পড়া শেষ হয়ে যেত। গুগল ঘেটে অনেক কিছু পড়লাম। কিন্তু অনেক রেফারেন্স কপি করে রাখা হয়নি। যে কটা কপি করেছি, নিচে দিলাম।

৬।কাশ্মীর নিয়ে ভারত আর পাকিস্তানের লড়াইয়ের কারণ কী? বিবিসি বাংলা
৭। কাশ্মীরের পৃথক পতাকা বিলুপ্ত হল, থেকে গেল রক্তাক্ত ইতিহাস কলকাতা 
৮। এক নজরে কাশ্মীর ও ৩৭০ অনুচ্ছেদের ইতিহাস বিবিসি বাংলা 
৯। লোকসভায় বিল পাস, দুই ভাগ হয়ে গেল কাশ্মীর যুগান্তর নিউজ
১০। কাশ্মীর সমস্যা ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্ব

লিখেছেন-অপ্রিয় কথা
আগের পোস্ট

পরবর্তী পোস্ট

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জাতীয়তাবাদ আরেকটি ধর্ম বই

বাংলাদেশীরা ধর্মভীরু। ইসলাম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ও জাতীয়তাবাদ নামক ধর্মগুলোর প্রতি বাঙ্গালীর দুর্বলতা নতুন কিছু নয়। আমরা যারা মুক্ত-চেতনাকে প্রয়োজনীয় মনে করি, যুক্তিকে ধর্মের ওপরে স্থান দেই তাদের অনেকেই ধর্মের মতই সামনে আসা অন্যান্য প্রতিটি ধারনা ও প্রস্তাবনাকেই যুক্তি দিয়ে বুঝতে চাই, খতিয়ে দেখতে চাই। বা দদূএকটি রূপ আধ্যাত্মিকতা ও ধর্ম হিসাবে মানুষের দলবদ্ধ সমাজব্যবস্থার দ্বিতীয় বড় চালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রস্তরযুগে আরো একটি ঘটনা ঘটতে শুরু করেছিল। মানুষেরা নিজেদের গ্রাম বা নগরকে কেন্দ্র করে একটি সামষ্টিক পরিচিতি অনুভব করে শুরু করেছিল। বোধ করি তখন থেকেই মানুষের দলবদ্ধতার তৃতীয় চালক জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক যাত্রা শুরু। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় জাতীয়তাবাদ নানান চেহারায় দলবদ্ধতার সবচাইতে শক্তিশালী চালক হিসাবে বিদ্যমান। একটি নৃগোষ্ঠী যখন পুঁজিবাদী হতে শুরু করে, যখন সে একটি কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র গঠন করে তখনই সে একটি জাতিতে পরিণত হয়। ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ আমাদের দেশের রাজনীতিতে কাছাকাছি আছে ইতিহাসের শুরু থেকে। মহাভারত থেকে আজকের খালেদা-হাসিনার রাজনীতিতে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ একে অন্যের হাত...

গাজওয়াতুল হিন্দ

গাজওয়াতুল হিন্দকে বর্তমান বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল শ্রীলংকার জিহাদীরা তাদের মনে আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে নানা মতাভেদ থাকলেও সকল মুসলিম জিহাদীরা মনে করে বা আ শা করে যে ইসলাম সারা পৃথীবিতে এই জিহাদের মাধ্যামে প্রতিষ্টা হবে। তারা এটাকে মর্যাদার্পূণ জিহাদ বলে মনে করে। ইসলামের ভিত্তির অন্যতম হলো জিহাদ। ইসলাম প্রতিষ্ঠাকালীন প্রচুর যুদ্ধ করা এবং হত্যার পরেই মানুষ ভয়ে ইসলামকে গ্রহন করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ভায়রাস বলা হয় ইসলামকে। এই ভায়রাস আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে গাজওয়াতুল হিন্দকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে জিহাদীরা তাদের দলে লোক বেসি করার জন্য অনলাইনে সহ নানা জাগাতে ঠিক এই ভাবে মুসলিমদের উপর প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে "গাজওয়াতুল হিন্দ বা ভারতবর্ষের যুদ্ধ সম্পর্কে কি আপনি অবগত? আপনি কি কাফের মুশরিকদের সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত?" ইসলামীষ্ট  জিহাদীরা ঠিক এভাবে চাই যে সারা পৃথিবীতে সবচে’ বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটা হবে হিন্দুস্তান তথা ভারতের হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যা সমস্থ জ্ঞানি ইসলামি স্কলার এবং আলেম উলামা জানে। মুসলমানদের জন্য এটা খুব বড়  জিহাদ এবং এই জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই...

বাঙালি এবং লেখকের জীবন

লেখকের বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত তার পরিবারের স্বীকৃতি।এখানে স্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে-লেখালেখি যে একটি কাজ,অন্য মতোই একটি কাজের, এবং সেই কাজের জন্য মনোযোগ,সময় এবং শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়-এই বোধটা তৈরী হওয়া।লেখালেখিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে নাই বা ধরা হলো। কিন্তু এটি যে একটি কাজ,এই স্বীকৃতিটা পরিবার থেকে আসা খুব প্রয়োজন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতি বান লেখক শেষ পর্যন্ত যে লেখক হয়ে উঠতে পারে না,লেখক জীবন যাপন করতে পারেন না,লেখালেখির জগত থেকে তাদের যে অকাল বিদায় নিতে হয়,তার সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।লেখালেখিকে পারিবারিক ভাবে স্বীকৃতি না দেওয়া।দেশের অন্য সব মানুষদের মতোই বেশির ভাগ পরিবারে লেখালেখি একটি নেহাৎ ই শখের জিনিস।তারুণ্য বা অংকুরোদ্গমী যৌবনে যৌনতার চুলকানিরও পেয়ে বসে আমাদের দেশের মানুষদের।তখন তাদের লেখাকে বাবাহা দেয় বাড়ির ভাবীরা,কাকা-জ্যাঠারা,সহপাঠীরা,বা তার কোন প্রেমিক-প্রেমিকাও।কখনো কখনো এমনকি বাবা মাও।তারা সকলেই অবচেতনে,এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানে যে,এই চুলকানি বেশিদিন থাকবে না।কিন্তু যার ক্ষেত্রে থেকে যায়,অর্থাৎ যে বুঝে যায় যে লেখক হওয়াটাই তার ভবিতব্য,সমস্যাটা তার ক্ষ...