সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গডলেস কালী


হিন্দুদের সব দেবীদের পড়নেই বেশ ভালো ভালো শাড়ি এবং অলংকার , শুধু কালীকেই কেন টপলেস করা হল-এটা নিয়ে কিছু খোঁজাখুজি করলে প্রচুর আধ্যাত্মিক গ্যাস বেড়োবে-যথা কালী হচ্ছে রিয়ালিটির প্রতীক-অসীম-তাই তাকে "সসীম" কাপড় পড়ানো যায় না। বা তার উন্মুক্ত স্তন প্রতীকি-তিনিই যে জনগণকে খাইয়ে দাইয়ে টিকিয়ে রেখেছেন তার প্রতীক। মানে আমরা সবাই তার ওই ব্রেস্ট ফি্ডেড সন্তান আর কি !


কিন্ত আমার মনেহয় এগুলো সব মনগড়া কথাবার্তা। যেকোন দেবীর পোষাকই সমকালে, মেয়েরা যেসব পোষাকে অভ্যস্ত, সেগুলোই।

কালি বৈদিক দেবী নন। কেউ কেউ বলেন অথর্ব বেদে তার উল্লেখ আছে-কিন্ত সেই কালিকা, আর কালিকাপূরাণের কালী এক নন। কালী আসলেই অন্যার্য্যপূজিত দেবতা। এবং আর্য্যদের আগমনের আগে ভারতে অনার্য্য জাতিগোষ্টির মধ্যে মেয়েরা উর্ধাঙ্গ ঢেকে রাখত না। এখনো আদিবাসিদের মধ্যে অনেক উপজাতিতেই মেয়েরা উর্ধাঙ্গ ঢেকে রাখে না।


এর সব থেকে বড় উদাহরন মহাভারতে। একে একে পাশায় হেরে পঞ্ছ পান্ডব সবাই দাস হয়েছেন। দুঃশাসন তাদের উত্তরীয় খুলতে বলছেন। কারন দাশেরা ( যারা অন্যার্য্য ছিল) তারা উর্ধাঙ্গ নিবারন করত না। শুধু গোল বাধল যখন দ্রোপদীকে পনে রেখে হেরে গেলেন যুধিষ্ঠীর। দাসীদের ও সেকালে উর্ধাঙ্গ নিরাভরনই থাকত। ফলে দুঃশাসন দাবী করে বসলেন, দ্রোপদীকে তার স্তনযুগলের ওপর কাপড় সরাতে-হবে। কারন দাসীদের স্তনযুগল নিরাভরন থাকত সেই যুগে। এবং সেখান থেকেই বস্ত্র হরণের শুরু।

সুতরাং আদি অনার্য্যদের দেবীরা টপলেসই ছিলেন। শুধু কালিকা নন-আদিম অন্যার্য্য জাতি গোষ্ঠির দেবীদের যত পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া যায় সেখানে দেবীরা টপলেস। স্থাপত্য নিদর্শনেও সেই প্রমাণ মেলে। দুর্ভাগ্য হলেও সত্য এই যে, আর্য্যদের আগমনের আগে, মেয়েদের টপলেস থাকাটাই ছিল স্বাভাবিক। তখন শুধু কালী কেনো, কে টপলেস আর কে না এই প্রশ্ন উঠত না। কারণ পোশাক লাজ লজ্জা নগ্নতার সঙ্গা মানুষ জানতো না।


ফেমিনিস্ট টপলেস মুভমেন্টের দৌলতে , ইউরোপের অনেক দেশেই এখন পাবলিক প্লেসে মেয়েদের টপলেস থাকা স্বীকৃত। আশা করা যায়, ভারতেও মেয়েদের পোশাকের স্বাধীনতা মিলবে আগামী একশো বছরের মধ্যে।

আজ থেকে একশো বছর বাদে দ্বাবিংশ শতাব্দিতে, মেয়েদের পোষাকটা যখন হবে বেড়াজালমুক্ত( ট্রপিক্যাল দেশে এমনই হওয়া উচিত। আর্য্যরা ঠান্ডার দেশ থেকে এসেছিল বলে ওদের মেয়েদের উর্ধাঙ্গ ঢাকা থাকত। ভারতের গরম আদ্র আবাহাওয়াতে, গরমের সময় পোশাকের বাড়বাড়ন্ত খুব একটা স্তস্থিকর ছিল না। আর সেই জন্য অনার্য্য নারীদের মধ্যে স্তনবন্ধনীর চল ছিল ও না।) তখন আর এসব প্রশ্ন আসবেনা।
.
.
লিখেছেনঃ-বিপ্লব পাল
↑PREVIOUS-নাস্তিকের তন্ত্রলাপ 

NEXT-আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জাতীয়তাবাদ আরেকটি ধর্ম বই

বাংলাদেশীরা ধর্মভীরু। ইসলাম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ও জাতীয়তাবাদ নামক ধর্মগুলোর প্রতি বাঙ্গালীর দুর্বলতা নতুন কিছু নয়। আমরা যারা মুক্ত-চেতনাকে প্রয়োজনীয় মনে করি, যুক্তিকে ধর্মের ওপরে স্থান দেই তাদের অনেকেই ধর্মের মতই সামনে আসা অন্যান্য প্রতিটি ধারনা ও প্রস্তাবনাকেই যুক্তি দিয়ে বুঝতে চাই, খতিয়ে দেখতে চাই। বা দদূএকটি রূপ আধ্যাত্মিকতা ও ধর্ম হিসাবে মানুষের দলবদ্ধ সমাজব্যবস্থার দ্বিতীয় বড় চালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রস্তরযুগে আরো একটি ঘটনা ঘটতে শুরু করেছিল। মানুষেরা নিজেদের গ্রাম বা নগরকে কেন্দ্র করে একটি সামষ্টিক পরিচিতি অনুভব করে শুরু করেছিল। বোধ করি তখন থেকেই মানুষের দলবদ্ধতার তৃতীয় চালক জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক যাত্রা শুরু। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় জাতীয়তাবাদ নানান চেহারায় দলবদ্ধতার সবচাইতে শক্তিশালী চালক হিসাবে বিদ্যমান। একটি নৃগোষ্ঠী যখন পুঁজিবাদী হতে শুরু করে, যখন সে একটি কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র গঠন করে তখনই সে একটি জাতিতে পরিণত হয়। ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ আমাদের দেশের রাজনীতিতে কাছাকাছি আছে ইতিহাসের শুরু থেকে। মহাভারত থেকে আজকের খালেদা-হাসিনার রাজনীতিতে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ একে অন্যের হাত...

গাজওয়াতুল হিন্দ

গাজওয়াতুল হিন্দকে বর্তমান বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল শ্রীলংকার জিহাদীরা তাদের মনে আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে নানা মতাভেদ থাকলেও সকল মুসলিম জিহাদীরা মনে করে বা আ শা করে যে ইসলাম সারা পৃথীবিতে এই জিহাদের মাধ্যামে প্রতিষ্টা হবে। তারা এটাকে মর্যাদার্পূণ জিহাদ বলে মনে করে। ইসলামের ভিত্তির অন্যতম হলো জিহাদ। ইসলাম প্রতিষ্ঠাকালীন প্রচুর যুদ্ধ করা এবং হত্যার পরেই মানুষ ভয়ে ইসলামকে গ্রহন করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ভায়রাস বলা হয় ইসলামকে। এই ভায়রাস আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে গাজওয়াতুল হিন্দকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে জিহাদীরা তাদের দলে লোক বেসি করার জন্য অনলাইনে সহ নানা জাগাতে ঠিক এই ভাবে মুসলিমদের উপর প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে "গাজওয়াতুল হিন্দ বা ভারতবর্ষের যুদ্ধ সম্পর্কে কি আপনি অবগত? আপনি কি কাফের মুশরিকদের সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত?" ইসলামীষ্ট  জিহাদীরা ঠিক এভাবে চাই যে সারা পৃথিবীতে সবচে’ বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটা হবে হিন্দুস্তান তথা ভারতের হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যা সমস্থ জ্ঞানি ইসলামি স্কলার এবং আলেম উলামা জানে। মুসলমানদের জন্য এটা খুব বড়  জিহাদ এবং এই জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই...

বাঙালি এবং লেখকের জীবন

লেখকের বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত তার পরিবারের স্বীকৃতি।এখানে স্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে-লেখালেখি যে একটি কাজ,অন্য মতোই একটি কাজের, এবং সেই কাজের জন্য মনোযোগ,সময় এবং শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়-এই বোধটা তৈরী হওয়া।লেখালেখিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে নাই বা ধরা হলো। কিন্তু এটি যে একটি কাজ,এই স্বীকৃতিটা পরিবার থেকে আসা খুব প্রয়োজন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতি বান লেখক শেষ পর্যন্ত যে লেখক হয়ে উঠতে পারে না,লেখক জীবন যাপন করতে পারেন না,লেখালেখির জগত থেকে তাদের যে অকাল বিদায় নিতে হয়,তার সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।লেখালেখিকে পারিবারিক ভাবে স্বীকৃতি না দেওয়া।দেশের অন্য সব মানুষদের মতোই বেশির ভাগ পরিবারে লেখালেখি একটি নেহাৎ ই শখের জিনিস।তারুণ্য বা অংকুরোদ্গমী যৌবনে যৌনতার চুলকানিরও পেয়ে বসে আমাদের দেশের মানুষদের।তখন তাদের লেখাকে বাবাহা দেয় বাড়ির ভাবীরা,কাকা-জ্যাঠারা,সহপাঠীরা,বা তার কোন প্রেমিক-প্রেমিকাও।কখনো কখনো এমনকি বাবা মাও।তারা সকলেই অবচেতনে,এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানে যে,এই চুলকানি বেশিদিন থাকবে না।কিন্তু যার ক্ষেত্রে থেকে যায়,অর্থাৎ যে বুঝে যায় যে লেখক হওয়াটাই তার ভবিতব্য,সমস্যাটা তার ক্ষ...