সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

কোরানের দৃষ্টিতে বিবর্তনবাদ

কোরানের দৃষ্টিতে বিবর্তনবাদ।  যদিও অল্প শিক্ষিত, একপেশে শিক্ষায় শিক্ষিত মৌলানারা বিজ্ঞানের তাবৎ আবিষ্কারের পিছনে পবিত্র কোরআন শরীফের ভূমিকা নিয়ে বগলদাবা বাজিয়ে চিৎকার করে, কিন্তু বিজ্ঞানের একটি আবিষ্কার 'বিবর্তনবাদ' এর বিষয়ে এদের এতই চুলকানি যে বিবর্তনবাদের কথা উঠিলেই এরা হৈ হৈ রৈ রৈ করে উঠে। এদের হৈচৈ শুনে মনে হবে যে এর চেয়ে বড় শত্রু ইসলামের আর নেই। 'বিবর্তনবাদও কোরআন শরীফ থেকে আবিষ্কার হয়েছে' এমন কথা বলতে কখনো বলতে শোনা যায় না। কেন? এই কয়েকদিন আগে কিছু আলেম নামধারী ব্যক্তিবর্গ পাঠ্যপুস্তক থেকে ডারউইনবাদ বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। বিবর্তনবাদ কি একেবারে ইসলামের বিপরীত? আমার তা মনে হয় না। আসুন একটু আলোচনা করা যাক। প্রথমেই আসুন জানা যাক, বিবর্তন বলতে আমরা কি বুঝি- বিবর্তন বা অভিব্যক্তি ( Evolution) হলো এমন একটি জীববৈজ্ঞানিক ধারণা যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে জীবের গাঠনিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ক্রমপরির্তনকে বুঝায়। কোনো জীবের বংশধরদের মাঝে যে Genetic information ছড়িয়ে পড়ে তারাই বংশপ্রবাহে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করে। জিনের Mutation বা পরিব্যক্তির মাধ্য...

ধর্মীয় অন্ধতা এবং আমাদের বানরায়ন

১.চারদিকে অন্ধতার পরিমান এত বেড়েছে,কোনোওভাবেই আর সত্যের দেখা পাওয়া যায় না ।আমি কোনো অবিশ্বাসী মানুষ না,কিন্তু তাই বলে চোখ বন্ধ করে থাকতে জানি না এইসকল অন্ধতার একটা প্রধান ধারা হচ্ছে ধর্ম ।ধর্মের অপব্যাখ্যায় চার দিক ছেয়ে গেছে ।মুক্ত মনের চর্চা হয় না কোথাও ।বিদায় নিয়েছে বিজ্ঞানমনস্কতা,এবং অন্যান্য বুদ্ধিমত্তার উপহার ।মানুষ থেকে বিবর্তনের ধারার উল্টা পথে মনে হয় যেতে আর বেশী নেই ।পচা নোংরা বানরের দলে পরিনত হচ্ছি আমরা । ২.ইদানিং একজাতীয় "মাল্টিপারপাস" সর্বজ্ঞাণী,তথাকথিত বিজ্ঞান দার্শনিকের উদ্ভব হয়েছে,যাদের প্রধান কাজ হচ্ছে,ধর্মীয় পুস্তকে বিজ্ঞান খোজা,আমি বলছি না,ধর্মীয় পুস্তকে বিজ্ঞানের অস্তিত্ব নেই ।কিন্তু আমার আমার আপত্তি হচ্ছে এইসকল অর্ধশিক্ষিত(নৈর্ব্যত্তিক জ্ঞানের ব্যাপারে,কোনো কোনো ক্ষেত্রে "অর্ধশিক্ষিত " শব্দটি তাদের জন্যে কমপ্লিমেন্ট হয়ে যায়) কাঠমোল্লাদের আধুনিক সংস্করনদের প্রতি । তবে সমস্যার গভীরে যাবার আগে কিছু বিষয়ে সংজ্ঞায়ন করাকরিভাবে করা দরকার । প্রথম হচ্ছে বৈজ্ঞানিক তত্ব কিভাবে আত্নপ্রকাশ করে, সকল বৈজ্ঞানিক তত্ব প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে "হ...

নাস্তিক, উগ্র নাস্তিক, ধর্মবিদ্বেষী, ধর্মবিরোধী

ঈশ্বরে অবিশ্বাসীরা ৪ শ্রেণির; নাস্তিক, উগ্র নাস্তিক, ধর্মবিদ্বেষী, ধর্মবিরোধী; এই শ্রেণিটি সর্বপ্রথম তৈরি করেছিলো আস্তিক-ধার্মিকেরা, যদিও এখন অনেক নাস্তিকেরা তাই মনে করে থাকে। তারা বলে থাকে, নাস্তিক হলে কোনো সমস্যা নেই; কিন্তু তারা মনে করে, ঈশ্বর-ধর্মের সমালোচনা-নিন্দা-ব্যঙ্গ করলে, ঈশ্বর-ধর্মের সমালোচনাকারী-নিন্দাকারী, ব্যঙ্গকারীদের অবশ্যই শাস্তি পাওয়া উচিত। এক্ষেত্রেও আস্তিক-ধার্মিকদের সাথে অনেক নাস্তিকেরা এই কথাগুলো সমর্থন করে। আলোচনা করা যাক; নাস্তিকের সংজ্ঞা, ঈশ্বর-ধর্মের সমালোচনা-নিন্দা-ব্যঙ্গ, আস্তিক-ধার্মিকদের এবং কথিত নাস্তিকদের চিন্তা-চেতনা, মানসিকতা প্রভৃতি-প্রভৃতি নিয়ে। প্রথমে আসা যাক, নাস্তিকের সংজ্ঞা নিয়ে। নাস্তিকের অর্থ ঈশ্বরে অবিশ্বাসী। নাস্তিক হতে এক সাথে অনেক বই পড়া লাগে। মুক্তচিন্তাধারী হতে হবে, ধর্ম সম্পর্কে জানতে হবে, ধর্মগ্রন্থের বক্তব্যগুলোও জানতে হবে; এর সাথে মহাবিশ্ব সৃষ্টির ইতিহাসসহ বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন বিষয় জানা জরুরি। উল্লেখ্য, অনেকে বলে থাকে, বাঙলাদেশের নাস্তিকেরা নামে নাস্তিক। অনেক নাস্তিককে দেখা যায়, শুক্রবারে জুম্মার নামাজ পড়তে, রোজ...

ধর্মীয় যুক্তির দোষ গুলি

সভ্যতার প্রায় আদিকাল থেকেই একের পর এক ধর্মের উৎপত্তি হয়ে চলেছে। মজার ব্যাপার, এই ধর্ম গুলির আচার আচরণের মধ্যে বিভিন্ন পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও এদের যুক্তিগুলি সেই শুরু থেকে একই রকম রয়ে গেছে, তা সে ধর্মীয় তাত্ত্বিক আলোচনার ক্ষেত্রেই হোক বা কোনো সামাজিক সংস্কারের ইস্যুতে। যে ধরনের যুক্তি কোন হিন্দু ধর্মীয় বই তে পাওয়া যায়, একই ধরনের যুক্তি পাওয়া যায় ইসলাম ও খ্রিস্ট ধর্মীয় গ্রন্থগুলিতে। যুক্তিগুলি যতই ভ্রান্ত হোক না কেন, সাধারণ মানুষের অজ্ঞতা এবং চাতুর্যপূর্ণ পরিবেশনের কারণে সেই আদি কাল থেকেই বেশিরভাগ মানুষকে অল্প বিস্তর প্রভাবিত করে। ফেসবুকে যখন থেকে নিয়মিত হলাম তখন থেকেই মনে হয় ধর্মীয় যুক্তি গুলির দোষ গুলি নিয়ে একটু লেখা দরকার জানানো দরকার ধর্মীয় যুক্তি গুলির ভুল কিভাবে ধরা যায়। আর যেহেতু আমি যুক্তিবিদ্যার স্টুডেন্ট তাই এই কাজের দায় আমি এড়িয়ে যেতে পারি না। এবং সেই প্রচেষ্টা তেই আমার এই লেখা। যুক্তিবিদ্যায় সমস্ত যুক্তিকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। ছাঁচে ঢালা (ফর্মাল) যুক্তি ও বেছাঁচে (ইনফরমাল) যুক্তি। ছাঁচে ঢালা যুক্তি হল গণিতের মতো ব্যাপার। বেশি তত্ত্ব কথ...

ধর্ম একটি সামাজিক ব্যাধি

মানবজাতির মধ্যে এমন খুব কমই আছে, ‘ক্যান্সার’ শব্দটি শুনলে যার বুক কেঁপে ওঠেনা। ক্যান্সার বা কর্কটরোগ হল মৃত্যুর পরোয়ানা। একবার ক্যান্সার ধরলে পরে তার থেকে বেঁচে ফিরে আসাটা প্রায় দুষ্কর, চিকিৎসা সব সময়ে সম্ভব হয় না, আর হলেও যে সম্পূর্ণ রোগমুক্তি ঘটবেই এরকম কোন গ্যারান্টী নেই। কিন্তু কি এই ক্যান্সার? কেন সে এত বিধ্বংসী? ক্যান্সার কোন এক অসুখ নয়। এটি বেশ কিছু ধরণের অসুখের একটি সমষ্টি বিশেষ, যার সকলের মধ্যে অন্যতম সাধারণ লক্ষণ হল কতিপয় কোষের অনিয়ন্ত্রিত বন্ধনহীন বৃদ্ধি এবং বিভাজন। এই নিয়ন্ত্রণহীনতার ফলে অচিরেই কোষসমূহ তাদের আশেপাশের অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এবং সুস্থ কোষকলা বা টিস্যুকে ধ্বংস করে। ধ্বংসাবশেষে যখন আর কিছু থাকেনা, তখন ক্যান্সারগ্রস্ত কোষগুলো রক্ত বা লসিকা মারফত বাহিত হয়ে শরীরের অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে – যাকে বলে ‘মেটাস্ট্যাসিস’ – এবং সেখানেও একইভাবে শরীরময় বিধ্বংসী কাজকর্মে ব্যাপৃত হয়। কোন কোন কোষ কেন ক্যান্সারগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তার সাধারণত দুটি কারণ মনে করা হয়। এক, পরিবেশগত, পরিবেশ থেকে আহৃত বিভিন্ন সিগ্‌ন্যাল কিছু কোষ-এর নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ ক...

বিজ্ঞান,ধর্ম ও সমাজ

আমাদের মহাবিশ্বের উদ্ভব হয়েছিল প্রায় দেড় হাজার কোটি বছর আগে আর পৃথিবী সহ আমাদের সৌর জগতের উদ্ভব হয়েছিল প্রায়সাড়ে চারশ কোটি বছর আগে ।পরবর্তী ১০০ কোটি বছরে আমাদের গ্রহটি প্রাণের উৎপত্তির মত অবস্থায় এসেছে ।এখন পর্যন্ত পাওয়া সাক্ষ্য প্রমাণ অনু্যায়ী প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি বছরের বিবর্তনের মধ্য দিয়ে এক কোষী আদিম প্রাণ থেকে উদ্ভব হয়েছে বর্তমানের মানুষের এবং অন্যান্য প্রাণীর ।মানুষের উৎপত্তি নিয়ে বিজ্ঞান এবং ধর্মের মধ্যে বিরোধ চিরকাল বিদ্যমান।সৃষ্টি রহস্য নিয়ে আদিকালের মানুষ ভেবেছে,বর্তমানের মানুষও ভেবে চলেছে।বস্তুত উদ্দেশ্য এক তবে পদ্ধতি ভিন্ন,একটি চিন্তা অপরটি গবেষণা।পৌরাণিক কাহিণী সৃষ্টি তত্ত্ব সর্ম্পকে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা প্রদান করে।বেশির ভাগ পৌরানিক কাহিণীর মতে মানুষ কে প্রভু মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন।তবে বিজ্ঞানীরা বর্তমানে এই মতে পৌছেছেন যে জীব সৃষ্টি হতে হলে অত্যাবশকীয় পুর্বশর্ত থাকতে হবে ।এগুলা হল ১)প্রয়োজনীয় পানীয় জল ২)উপযোগী জলবায়ু ৩)প্রয়োজনীয় খাদ্য ।তারা বলেন কার্বন, হাইড্রোজেন,সালফার,অক্সিজেন,নাইট্রোজেন,ফসফরাস ও আরও ডজন খানেক উপাদান জীব সৃষ্টির জন্য প্...

আরণ্যিক নির্বোধের ভ্রান্ত দুঃস্বপন

আধুনিক পৃথিবীতে সর্বত্রই ধর্মের ছড়াছড়ি। এই ধর্মগুলোর মধ্যে যেমন রয়েছে বিপুল সাদৃশ্য, তেমনি বৈসাদৃশ্যও লক্ষণীয়। সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের ভিত্তিতে ধর্ম ও ধর্মবিশ্বাসের বিভিন্ন দিক নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত ও সরল আলোচনায় আসা যাক। ধর্মগুলোর মধ্যে একটি বড় সাদৃশ্য হল, সকল ধর্মই দাবি করে সে-ই সত্য ও সর্বোৎকৃষ্ট, এছাড়া অন্যান্য ধর্ম মিথ্যা ও নিকৃষ্ট। আবার ধর্মগুলো যেমন ঐ ধর্মের অনুসারিদের জন্য বরাদ্দ রেখেছে স্বর্গ, তেমনি অন্য ধর্মাবলম্বিদের জন্য নরক। কিন্তু ধর্মগুলোর ক্ষেত্রে কেউ কেউ বলে থাকেন -যত মত, তত পথ। যেখানে এক ধর্মের কাছে অন্য ধর্ম সম্পূর্ণ ভ্রান্ত সেখানে কথাটিতে স্ববিরোধিতা ছাড়া অন্য কিছুই প্রকাশ পায় না। কেননা সত্য এক ও অখণ্ড; একই সময় একই সাথে পরস্পর বিপরীত দুটি কথা সত্য হতে পারে না। তাই, সকল ধর্মই মানবতার কথা বলে -এরকম যারা বলেন তারা হয় মানবতা বোঝেন না, নয়ত ধর্ম বোঝেন না; একটি ভুল জীবনদর্শন মানুষকে শুধু প্রতারণাই দিতে পারে। হিন্দুরা দাবি করেন তাদের ধর্ম চিরায়ত ধর্ম, সেই আদিমকাল থেকে তাদের ধর্ম চলে আসছে, তাই তাদের ধর্ম খাঁটি ও সর্বোত্তম, যদিও অন্য কোনো ধর্মাবলম্বির এই ধর্মে স্বাভ...